ঢাকা, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২
উত্থানের বাজারেও ২৭৩ কোটি টাকা মূলধন হাওয়া!
হাসান মাহমুদ ফারাবী: টানা তিন দিনের পতনের পর অবশেষে স্বস্তির ধারায় ফিরলো দেশের শেয়ারবাজার। রোববার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ডিএসইর (ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ) প্রধান সূচক যেখানে ৬৫ পয়েন্টের বেশি হারিয়েছিল, আজ বুধবার সেই পতনের ধারা ভেঙে সূচক বেড়েছে ৮ পয়েন্টেরও বেশি। তবে এই স্বস্তির মাঝেও বাজারের মূলধন কমার ব্যতিক্রমী চিত্রটি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কৌতূহল সৃষ্টি করেছে। সূচক বাড়া সত্ত্বেও আজকের লেনদেনে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে আরও ২৭৩ কোটি টাকা।
এই বিপরীতমুখী চিত্রের প্রধান কারণ হলো শেয়ারবাজারের তিনটি বৃহৎ মূলধনী কোম্পানি— গ্রামীণফোন, বিএটিবিসি এবং ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ারের দর আজ কমেছে। এই হেভিওয়েট শেয়ারগুলোর মূল্যহ্রাস সামগ্রিক বাজার মূলধনের ওপর এমন চাপ সৃষ্টি করেছে যে, দিনের অন্যান্য ইতিবাচক অর্জন তাতে ঢাকা পড়ে গেছে। অর্থাৎ, আজকের সূচকটি মূলত মধ্যম ও ছোট মূলধনী কোম্পানিগুলোর ভরসায় বাড়লেও, বড় মূলধনী কোম্পানিগুলোর চাপ আজকেও দৃশ্যমান ছিল।
বাজার মূলধন খোঁয়ানোর চিত্রটি আরও উদ্বেগজনক হয়ে দেখা যায়, যখন আমরা গত কয়েক দিনের হিসাব করি। টানা তিন দিনের পতনে ডিএসইর মোট বাজার মূলধন কমেছিল ৭ হাজার ২৪০ কোটি টাকারও বেশি। আজকের ২৭৩ কোটি টাকার অতিরিক্ত ক্ষতি প্রমাণ করে যে, বাজার স্থিতিশীলতার পথে ফিরলেও পুঁজির ক্ষয়ক্ষতি এখনও থামেনি। এই বিপুল পরিমাণ মূলধন হ্রাসের স্মৃতি বিনিয়োগকারী এবং ঋণদাতা—উভয়কেই অতিরিক্ত সতর্ক করে তুলেছে।
তবে সূচক বৃদ্ধির চেয়েও আজকের লেনদেনের একটি বড় ইতিবাচক দিক হলো টার্নওভার বা লেনদেন বৃদ্ধি। আগের দিন ডিএসইতে যেখানে লেনদেন হয়েছিল ৪৫১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা, সেখানে আজ তা বেড়ে ৫০৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকায় পৌঁছেছে। একদিনের ব্যবধানে লেনদেন প্রায় ৫২ কোটি টাকা বৃদ্ধি পাওয়া ইঙ্গিত দেয় যে, বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ নতুন করে তৈরি হচ্ছে। এই অতিরিক্ত তারল্যই প্রমাণ করে যে, ছোট ও মাঝারি শেয়ারে কেনার চাপ তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল।
আজকের লেনদেনে দর বৃদ্ধির সংখ্যাও বাজারের ইতিবাচক মনোভাবের দিকে ইঙ্গিত করে। মোট লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭৫টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৫৩টির এবং ৬৬টির দর অপরিবর্তিত ছিল। অর্থাৎ, সূচক বাড়ার পাশাপাশি অধিকাংশ শেয়ারের দর বৃদ্ধি পাওয়ায় এটি স্পষ্ট যে, পতন পরবর্তী সময়ে বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
সামগ্রিকভাবে, আজকের শেয়ারবাজারের চিত্র ছিল মিশ্র। একদিকে, টানা পতনের পর সূচক বৃদ্ধি এবং লেনদেন বাড়া বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনার সৃষ্টি করেছে; অন্যদিকে, বড় মূলধনী শেয়ারগুলোর দুর্বলতা এবং বাজার মূলধন কমার প্রবণতা বাজারের গভীরতায় এখনও আস্থা ও স্থিতিশীলতা ফিরে আসেনি বলে ইঙ্গিত দেয়। শেয়ারবাজারের সম্পূর্ণ স্বস্তি নিশ্চিত করতে হলে এই বড় মূলধনী কোম্পানিগুলোর স্থিতিশীলতা এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ একান্ত প্রয়োজন।
এএসএম/
শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে মুন্নু ফেব্রিক্স
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ১৯ কোম্পানি, দেখুন এক নজরে
- আজ বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ: কখন, কোথায়-যেভাবে দেখবেন সরাসরি(LIVE)
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া: খেলাটি সরাসরি ফ্রিতে দেখুন(LIVE)
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া:কখন, কোথায়-যেভাবে দেখবেন লাইভ
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে অগ্নী সিস্টেমস
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে সিমটেক্স ইন্ডাষ্ট্রিজ
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে জেএমআই হসপিটাল
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে তালিকাভুক্ত২৪ কোম্পানি
- নেগেটিভ ইকুইটি মুক্ত করতে মার্জিন ঋণে তালা মারছে বিএসইসি
- ২১ দাবিতে নতুন বেতন কাঠামোর প্রস্তাব, সর্বনিম্ন ৩৫ হাজার
- এবারও বিনিয়োগকারীদের হতাশ করল মিরাকেল ইন্ডাস্ট্রিজ
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া: খেলাটি সরাসরি দেখুন(LIVE)
- শেয়ারবাজারের তালিকায় যুক্ত হলো আরও এক বন্ধ কোম্পানি
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস