ঢাকা, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২ কার্তিক ১৪৩২
গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ শিশু
মুসার স্বপ্ন পাইলট হওয়ার, এখন হুইলচেয়ারে বন্দি
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাত বছরের বাসিত খান মুসা এক সময় তার হাসি-মুখের কারণ ছিল বাবা-মায়ার সুখ। একমাত্র সন্তান হিসেবে পাইলট হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে তার পরিবার আগ্রহী ছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় রাজধানীর রামপুরায় পুলিশের গুলিতে তার জীবন বদলে যায়। মুসার মাথায় লাগা গুলি যেয়ে তার দাদির পেটে লেগে তিনি মারা যান, আর ছোট্ট মুসা এখন হুইলচেয়ারে নির্ভরশীল। সে কথা বলতে পারেন না, স্বাভাবিকভাবে খেতে পারেন না, শারীরিকভাবে অচল।
১৯ জুলাই পুলিশের গুলিতে মুসার মাথা এবং দাদির পেটে আঘাত লাগে। মুহূর্তে দাদির মৃত্যু হয়, তবে মুসা বেঁচে যায়। এই ঘটনার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলা চলমান।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) হুইলচেয়ারে বসিয়ে মুসাকে আদালতে আনা হয়। তার পাশে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। সকাল সোয়া ১১টায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
দ্বিতীয় সাক্ষী হিসেবে মুসার বাবা মোস্তাফিজুর রহমান জবানবন্দি দেন। বাবার বক্তব্য চলাকালীন হুইলচেয়ারে একপাশে অচল হয়ে পড়ে মুসা। তাকে সোফায় শুয়ে দেওয়া হয় এবং এনজি টিউবের মাধ্যমে তরল খাবার খাওয়ানো হয়। কিছুক্ষণ পর তাকে পুনরায় হুইলচেয়ারে বসানো হয়। মুসার চাহনিতে দুঃখের ছাপ দেখেই আইনজীবী ও আদালতের সবাই মর্মাহত হন।
মোস্তাফিজ বলেন, তার একমাত্র ছেলে ইংরিশ ভার্সনে পড়াশোনা করত, ক্লাসে প্রথম। পাইলট হওয়ার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু পুলিশের গুলিতে সেই স্বপ্ন ভেঙে গেছে। মুসার ডানপাশ প্যারালাইজড, মুখে স্বাভাবিকভাবে খাবার নিতে পারে না। মাথার একপাশে খুলি নেই, কৃত্রিম স্কাল্প লাগানো হয়েছে। কথা বুঝতে পারে, বলতে পারে না, হাঁটাচলা করতে পারে না। উন্নত চিকিৎসা সিঙ্গাপুরে চলছে, চিকিৎসকরা বলছেন সুস্থ হওয়া সম্ভব, তবে সময় লাগবে।
মোস্তাফিজ সরকারের কাছে চেয়েছেন ছেলেটির উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা হোক, অবহেলা করা যাবে না, এবং দায়ীদের কঠোর শাস্তি হোক। আদালতে জবানবন্দি চলাকালীন তিনি একাধিকবার কান্নায় ভেঙে পড়েন।
প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম জানান, রামপুরায় জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে পুলিশের গুলিতে মুসা ও তার মায়ের ওপর আঘাত করা হয়। মায়া ইসলাম শহীদ হয়েছেন, মুসাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে ঢাকা ও সিঙ্গাপুরে। মোস্তাফিজ সরাসরি দেখেছেন কীভাবে তার ছেলের মাথায় গুলির আঘাত লাগে।
২৩ অক্টোবর থেকে এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। মামলার অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন ডিএমপি’র সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ পাঁচজন। চারজন পলাতক: খিলগাঁও জোনের সাবেক এডিসি মো. রাশেদুল ইসলাম, রামপুরা থানার সাবেক ওসি মো. মশিউর রহমান, রামপুরা থানার সাবেক এসআই তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া ও চঞ্চল চন্দ্র সরকার।
অন্য ভুক্তভোগী আমির হোসেনও পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন। ছাদের কার্নিশে ঝুলে থাকা অবস্থায় পুলিশের গুলির শিকার হন। ঘটনার দিন মুসার দাদি মায়া ইসলামও নিহত হন।
এই মামলায় সাক্ষী, স্টেট ডিফেন্স ও প্রসিকিউশন আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। মামলায় পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে এবং ট্রাইব্যুনাল তাদের হাজিরের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে কেডিএস এক্সেসরিজ
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে মুন্নু ফেব্রিক্স
- খেলোয়াড়দের নিয়ন্ত্রণে শেয়ারবাজার, অসহায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে স্কয়ার টেক্সটাইল
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া: খেলাটি সরাসরি ফ্রিতে দেখুন(LIVE)
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ১৯ কোম্পানি, দেখুন এক নজরে
- আজ বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ: কখন, কোথায়-যেভাবে দেখবেন সরাসরি(LIVE)
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে জেএমআই হসপিটাল
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া:কখন, কোথায়-যেভাবে দেখবেন লাইভ
- ২১ দাবিতে নতুন বেতন কাঠামোর প্রস্তাব, সর্বনিম্ন ৩৫ হাজার
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে শমরিতা হাসপাতাল
- নেগেটিভ ইকুইটি মুক্ত করতে মার্জিন ঋণে তালা মারছে বিএসইসি
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া: খেলাটি সরাসরি দেখুন(LIVE)
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে সিমটেক্স ইন্ডাষ্ট্রিজ
- লাফার্জহোলসিমের অন্তর্বর্তীকালিন ডিভিডেন্ড ঘোষণা