ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২

গণঅভ্যুত্থানের মূল শিক্ষা হলো পরিবর্তন ও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি: সালাহউদ্দিন আহমেদ

২০২৫ অক্টোবর ২৩ ১৪:৪৬:২১

গণঅভ্যুত্থানের মূল শিক্ষা হলো পরিবর্তন ও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি: সালাহউদ্দিন আহমেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক :বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, চব্বিশোত্তর বাংলাদেশে আমাদের প্রত্যাশা ও ভাবনা কী, তা বোঝা জরুরি। নতুন প্রজন্মের ভাবনাকে গুরুত্ব দিতে হবে। এ লক্ষ্যে তিনি ইতিমধ্যেই তরুণদের ভাবনা জানতে সভা ও সেমিনার আয়োজন করেছেন।

তিনি বলেন, চব্বিশোত্তর বাংলাদেশের মূল শিক্ষা হলো পরিবর্তন। মেধা, জ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর বাংলাদেশ গড়তে হবে। সমাজের যে স্তরেই কাজ করা হোক না কেন, আমাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে কাজ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারা তরুণ প্রজন্মকে শেখান।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হলো গবেষণা ধর্মী ও মুক্তবুদ্ধির চর্চার প্রতিষ্ঠান। খাতভিত্তিক গবেষণামূলক শিক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে, যাতে রিসার্চের মাধ্যমে শিক্ষাকে গ্লোবাল পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া যায়। পাশাপাশি কর্মমুখী ও সময়োপযোগী কারিকুলাম নির্ধারণ করা প্রয়োজন। শিক্ষার লক্ষ্য শুধুমাত্র নৈতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ নয়, বরং ব্যবহারের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনও জরুরি।

কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের জনসংখ্যার কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে। শুধুমাত্র সরকারের ওপর নির্ভরশীল হলে চলবে না; বরং স্বনির্ভর হয়ে নিজ উদ্যোগে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর যে পরিবর্তন আশা করা হচ্ছে তা সর্বত্রই বাস্তবায়িত হওয়া উচিত। এটি কেবল চাকরি বা কর্মসংস্থানের জন্য নয়, বরং দীর্ঘ ১৫–১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে জনরোষের বহিঃপ্রকাশ।

সংস্কার ইস্যুতে তিনি বলেন, মানসিক সংস্কার না করলে আইনগত সংস্কার সম্ভব নয়। গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শক্তিশালী আইনী রূপান্তর ঘটাতে পারলে জাতির মুক্তি নিশ্চিত হবে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সবাইকে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে ইউট্যাবের মহাসচিব ড. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, শিক্ষার বিকল্প নেই। তবে শিক্ষাকে কর্মসংস্থানমুখী ও যুগোপযোগী হতে হবে। চব্বিশোত্তর বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের জন্য শিক্ষাকে জ্ঞানভিত্তিক ও চাহিদাভিত্তিক করতে হবে। কারিগরি, ভোকেশনাল ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া অপরিহার্য।

সেমিনারের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব), প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে। বক্তৃতা দেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, জাতিসংঘের সাবেক চিফ অব স্টাফ রেহান এ আসাদসহ অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষাবিদরা।

সভাপতির বক্তব্যে ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের উদাসীনতার কারণে শিক্ষার মান প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। শিক্ষাব্যবস্থা পুনর্গঠন ও আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী কর্মমুখী ও বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়তে হবে।

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন রুয়েটের ভিসি অধ্যাপক ড. এসএম আব্দুর রাজ্জাক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি অধ্যাপক লুৎফর রহমান ও অধ্যাপক নূরুল ইসলাম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মো. শামীম, ইউট্যাবের অন্যান্য নেতা, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, ভিসি-প্রোভিসি, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী ও পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ।

ডুয়া/নয়ন

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত