ঢাকা, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৭ কার্তিক ১৪৩২

সাবেক আইজিপি দোষ চাপাচ্ছেন সহকর্মীদের ওপর

২০২৫ অক্টোবর ২২ ১৬:১১:০৩

সাবেক আইজিপি দোষ চাপাচ্ছেন সহকর্মীদের ওপর

নিজস্ব প্রতিবেদক :সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন নিজে বাঁচার জন্য অন্যের ঘাড়ে দায় চাপাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের আইনজীবী মো. আমির হোসেন। বুধবার (২২ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ নিজের মক্কেলদের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলের সামনে আজ দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে যুক্তিতর্ক শুরু হয়। আমির হোসেন জানান, মামুন নিজেকে বাঁচানোর জন্য নিজের ভুল-ত্রুটি গোপন করে অন্যের ওপর দায় চাপাচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে ট্রাইব্যুনাল প্রশ্ন করে, “তো নিজে বাঁচার জন্য অন্য লোকেরা আসে না কেন? এই যে এত আসামি, তারা আসে না কেন?”

প্রত্যুত্তরে তিনি বলেন, “উনি তো নিজে বাঁচার জন্য নিজের ভুল-ত্রুটিকে গোপন করে অন্যের ওপর দায় দিচ্ছেন।” ট্রাইব্যুনাল জানায়, “উনি তো গোপন করেননি। নিজের দোষ স্বীকার করেছেন।” আইনজীবী মন্তব্য করেন, “হয়তো সব স্বীকার করেছেন, আবার স্বীকার না-ও করতে পারেন। সেটার বিবেচনা মাননীয় আদালতের।”

এ সময় প্রসিকিউশন উল্লেখ করেন, আন্দোলন দমনে সরাসরি লেথাল ওয়েপন ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। এর জবাবে আমির হোসেন বলেন, “আইজিপি সাহেব তো নিজে বাঁচার জন্য অনেক কিছুই বলেছেন। সেটাকে আমি ডিনাই করি।” ট্রাইব্যুনাল জানান, “সেটা আমরা দেখব যে উনার এটা ট্রু কি না। উনার যে কন্ডিশন ছিল সেটা ফুলফিল হয়েছে কি না।”

আরও এক পর্যায়ে ৩৬ নম্বর সাক্ষী রাজসাক্ষী মামুনের জবানবন্দী উপস্থাপন করেন আমির হোসেন। তিনি বলেন, “চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন সম্পর্কে আমি খুব বেশি কথা বলব না। কারণ, উনি যা যা বলেছেন, নিজেকে বাঁচানোর জন্য বলেছেন। সাক্ষীকে আমি ডিনাই করছি। তবে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীর সময় তাকে আড়াই ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছে, যাতে তিনি চিন্তাভাবনা করতে পারেন।”

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে আজ তৃতীয় দিনের মতো রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও আসামি করা হয়েছে, তবে তিনি নিজের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করার আদেশ দেন। মামলায় মানবতাবিরোধী পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার, যার মধ্যে তথ্যসূত্র ২ হাজার ১৮ পৃষ্ঠা, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি ৪ হাজার ৫ পৃষ্ঠা এবং শহিদদের তালিকার বিবরণ ২ হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠা। মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে ৮১ জনকে। ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা মামলার প্রতিবেদন জমা দেয়।

ডুয়া/নয়ন

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত