বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতিত হচ্ছে না, এটা ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচার

ডুয়া নিউজ: যুক্তরাষ্ট্রে আরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী (বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক) পুনর্বাসনের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।

আজ মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সাথে সচিবালয়ে এক বৈঠকে এ আহ্বান জানান তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, "রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সহায়তা ও পুনর্বাসনে যুক্তরাষ্ট্র শুরু থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছে এবং তারা ইতোমধ্যে অনেক রোহিঙ্গাকে পুনর্বাসিত করেছে। আমি যুক্তরাষ্ট্রকে আরও বেশি রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের আহ্বান জানাই।"

জবাবে চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স জানান, যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উন্নয়ন এবং পুনর্বাসনে বৃহত্তম দাতা হিসেবে কাজ করছে। তারা ইউএসএইডের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্থানীয় এনজিওগুলির সাথে মিলিত হয়ে রোহিঙ্গাদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে প্রায় ১৭ হাজার রোহিঙ্গাকে পুনর্বাসন করেছে এবং এই প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা ইস্যু, সন্ত্রাস দমন, রোহিঙ্গা সমস্যা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি, পুলিশ সংস্কার কমিশন, সীমান্ত পরিস্থিতি, সংখ্যালঘু ইস্যু এবং কৃষি খাতে সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকের শুরুতে উপদেষ্টা চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্সকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্যতম বড় অংশীদার এবং প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে অনেক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। সন্ত্রাস দমন এবং নিরাপত্তা খাতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে এবং পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামর্থ্য বৃদ্ধিতে যুক্তরাষ্ট্র উন্নত প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহ করে আসছে।

এছাড়া উপদেষ্টা মানবাধিকার ও মানব পাচার বিষয়েও পুলিশ এবং বিজিবি, কোস্টগার্ডকে আরও প্রশিক্ষণ দেওয়ার অনুরোধ করেন।

চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স বলেন, "আমরা বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের অনুমতি আগের চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি দিচ্ছি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের আরও প্রশিক্ষণ দেবো। তবে প্রশিক্ষণের পর তারা যেন দেশে ফিরে নিজেদের দায়িত্ব পালন করে তা নিশ্চিত করতে হবে।" তিনি আরও জানান, "দু'দেশের মধ্যে নিরাপত্তা এবং সন্ত্রাস দমন ইস্যুতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা বিদ্যমান।"

সীমান্ত পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, "সীমান্ত পরিস্থিতি বর্তমানে মোটামুটি স্বাভাবিক রয়েছে এবং আগামী মাসে ভারতের দিল্লিতে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।"

সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের বিষয়টি নিয়ে চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্সের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, "বাংলাদেশে কোনো সংখ্যালঘু নির্যাতিত হচ্ছে না, এটা ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচার। সংখ্যালঘু শব্দ আমরা ব্যবহার করতে চাই না, কারণ সবাই বাংলাদেশের নাগরিক এবং সবার সমান অধিকার রয়েছে।"

তিনি আরও বলেন, "৫ আগস্টের পর যে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে তা মূলত রাজনৈতিক কারণে, ধর্মীয় কারণে নয়।"