ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২

রহস্যের ঘেরাটোপে আওয়ামী লীগের আলোচিত নেত্রীর মৃত্যু

২০২৫ অক্টোবর ১৪ ০৭:৩৭:১২

রহস্যের ঘেরাটোপে আওয়ামী লীগের আলোচিত নেত্রীর মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের বহুল আলোচিত নারী রাজনীতিক শারমিন মৌসুমী কেকা আর নেই। সোমবার (১৩ অক্টোবর) রাতে বরিশাল শহরের সদর রোডসংলগ্ন শ্বশুরবাড়ি থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশ। হঠাৎ এই মৃত্যু ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা রহস্য ও জল্পনা-কল্পনা, যা রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যেও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, ঘটনার সময় ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল, আবার কেউ কেউ দাবি করছেন, ঘটনার কিছুক্ষণ আগেও তিনি ফোনে কথা বলছিলেন—ফলে মৃত্যুটা স্বাভাবিক না অস্বাভাবিক, তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠছে।

দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শারমিন মৌসুমী কেকা ছিলেন ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম আলোচিত ও প্রভাবশালী নেত্রী। রাজনৈতিক জীবনের শুরুর দিকে তিনি সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিতি পান এবং দ্রুতই জেলা রাজনীতিতে নিজের অবস্থান তৈরি করেন। তিনি একসময় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

তবে ২০২০ সালে স্থানীয় পর্যায়ের একটি বিতর্কিত ঘটনার জেরে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়, যা তার রাজনৈতিক জীবনে বড় ধাক্কা আনে। এরপর ধীরে ধীরে তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে সরে যান। তবে দলীয় সূত্রের দাবি, বহিষ্কৃত হওয়ার পরও তিনি রাজনৈতিকভাবে যোগাযোগ রাখতেন এবং পুনর্বাসনের চেষ্টা চালাচ্ছিলেন।

ঝালকাঠির একটি সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে তিনি একাধিক রাজনৈতিক মামলায় অভিযুক্ত হন। এরপর গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি ঝালকাঠি ছেড়ে বরিশালের সদর রোডে শ্বশুরবাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন।

তার স্বামী লিটু ও পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন, সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে কেকার মৃত্যু হয়। তবে পুলিশের ভাষ্য, বিষয়টি ততটা সরল নয়।

বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, “স্বজনদের খবর পেয়ে আমরা লাশ উদ্ধার করেছি। মৃত্যুকে ঘিরে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, যা সন্দেহজনক মনে হচ্ছে। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।”

কেকার মৃত্যুকে ঘিরে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে তৈরি হয়েছে তীব্র আলোড়ন। অনেকেই তার মৃত্যুর পেছনে ‘অস্বাভাবিক কারণ’ বা রাজনৈতিক চাপের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না।

এএসএম/

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত