ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২

ঢাকঢোল-অশ্রুজলে দেবীর বিদায়

২০২৫ অক্টোবর ০২ ১৯:১৯:৩৪

ঢাকঢোল-অশ্রুজলে দেবীর বিদায়

নিজস্ব প্রতিবেদক: শারদীয় দুর্গোৎসবের পাঁচদিনব্যাপী বর্ণিল আয়োজন শেষে শেষ হলো প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে দেবী দুর্গার বিদায় পর্ব। ঢাকাসহ সারাদেশের পূজামণ্ডপে ভক্তরা অশ্রুসিক্ত চোখে দেবীকে বিদায় জানান। রাজধানীর বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে হাজারো ভক্তের উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয় এই আনুষ্ঠানিকতা।

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে বুড়িগঙ্গার ঘাটে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জনের মূল পর্ব। সেদিন দুপুর থেকেই গুড়িগুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মণ্ডপ ও মহল্লাগুলোর প্রতিমা নিয়ে আসে শোভাযাত্রা। ঢাক-ঢোল, কাঁসর-ঘণ্টার বাজনা, আর ‘জয় মা দুর্গা’ ধ্বনিতে মুখরিত হয় নদী তীর।

শোভাযাত্রা শেষে প্রতিমাগুলো নৌকায় করে নেওয়া হয় বুড়িগঙ্গার মাঝখানে। সেখানেই সম্পন্ন হয় বিসর্জনের ধর্মীয় আচার। অনেক ভক্তের চোখে ছিল অশ্রু, কারও ঠোঁটে ধ্বনিত হচ্ছিল শেষবারের মতো দেবীর বন্দনা। কেউ কেউ নদীর জল ছিটিয়ে নিচ্ছিলেন নিজের ও পরিবারের সদস্যদের গায়ে—মঙ্গল কামনায়।

পুরান ঢাকার লক্ষীবাজার থেকে আসা সুপ্ত দাস বলেন, “এই কয়েকটা দিন যেন স্বপ্নের মতো কেটেছে। মা দুর্গা ছিলেন আমাদের মাঝে। আজ তিনি চলে যাচ্ছেন, তাই মনটা ভারাক্রান্ত। আমি প্রার্থনা করেছি দেশে যেন শান্তি ফিরে আসে, মানুষের জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি নেমে আসে।”

ধানমন্ডি থানা পূজা উদযাপন কমিটির সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ রায় বলেন, “আমরা ভারাক্রান্ত হৃদয়ে দেবীকে বিদায় জানাচ্ছি। মা এসেছিলেন অশুভ শক্তি দমন করে আমাদের রক্ষা করতে। তার কাছে প্রার্থনা করেছি, যেন দেশ শান্তিপূর্ণ ও সুন্দরভাবে পরিচালিত হয়।”

দশমীর সকালে নারীরা দুর্গার পায়ে সিঁদুর অর্পণ করে তার শক্তির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর একে অন্যের গায়ে সিঁদুর মেখে ভাগ্য ও সমৃদ্ধির কামনা করেন।

প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে রাজধানীতে নেওয়া হয়েছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) ফারুক হোসেন জানান, শোভাযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে অতিরিক্ত ২,৪০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। পলাশী মোড়, রায় সাহেব বাজার ও ওয়াইজ ঘাটে স্থাপন করা হয় তিনটি অস্থায়ী ওয়াচ টাওয়ার। প্রতিটি প্রতিমার সঙ্গে ছিল পুলিশি নিরাপত্তা।

ইএইচপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত