ঢাকা, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫, ২২ আশ্বিন ১৪৩২

শিশুদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারের নতুন উদ্যোগ

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৯ ২০:৩০:৪৬

শিশুদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারের নতুন উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকার অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে শিশুদের জন্য অস্বাস্থ্যকর খাদ্য-পানীয়ের বিপণন সীমিত করা, আমদানি-রপ্তানি খাদ্যে পুষ্টি মানদণ্ড কার্যকর করা এবং উচ্চ চিনি, লবণ ও ট্রান্স-ফ্যাটযুক্ত পণ্য সীমিত করাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত 'যৌথ ঘোষণা' বাস্তবায়ন কর্মকৌশল নির্ধারণ সম্পর্কিত সভায় এসব বিষয়ে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৫টি মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে কৃষি, খাদ্য, শিল্প, বাণিজ্য এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের নিজ নিজ মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের পরিকল্পনা ও কর্মকৌশল নির্ধারণে করণীয় সম্পর্কে বক্তব্য দেন।

সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে স্বাক্ষরকারী সব মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদারকি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা যৌথ ঘোষণার বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা করবে। এছাড়া, কৃষি মন্ত্রণালয় নিরাপদ ও সাশ্রয়ী ফলমূল-শাকসবজির প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণ, ক্ষতিকর রাসায়নিক ও কীটনাশক ব্যবহারের নিয়ন্ত্রণ এবং তামাক থেকে বিকল্প ফসল চাষে প্রণোদনা দেবে।

খাদ্য নিরাপত্তা ও ভোক্তা সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যে লেবেলিং বাধ্যতামূলক করা হবে। শিশুদের জন্য অস্বাস্থ্যকর খাদ্য ও পানীয়ের বিপণন সীমিত করা এবং ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিড সংক্রান্ত বিধিনিষেধ কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় নিরাপদ ও পুষ্টিকর মাছ, দুধ, ডিম ও চর্বিহীন মাংস উৎপাদন বাড়াতে কাজ করবে এবং অ্যান্টিবায়োটিক, হরমোন ও রাসায়নিক ব্যবহারের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করবে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে খাদ্য লেবেলিং ও ভোক্তা সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের সামনের ও পেছনের অংশে পুষ্টি উপাদান, অ্যালার্জেন, সোডিয়াম, চিনি ও ক্ষতিকর চর্বির তথ্য স্পষ্টভাবে প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করা হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আমদানি ও রপ্তানি খাদ্যে পুষ্টি মানদণ্ড কার্যকর করবে, উচ্চ চিনি, লবণ ও ট্রান্স-ফ্যাটযুক্ত পণ্য সীমিত করবে এবং নতুন ধরনের তামাক ও নিকোটিন পণ্য নিয়ন্ত্রণ করবে।

গত ২০ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে ৩৫টি মন্ত্রণালয়/বিভাগ বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি যৌথ ঘোষণায় স্বাক্ষর করেছিল। মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ বলেন, অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ জাতীয় অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা এবং আগামী প্রজন্মকে যথাযথভাবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ। তিনি আরও বলেন, এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা শুধু স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একার পক্ষে সম্ভব নয়, বরং সমন্বিতভাবে তা সুনির্দিষ্ট সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে করতে হবে।

এসপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত