ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০ আশ্বিন ১৪৩২

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের জন্য নতুন নির্দেশিকা জারি

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৬ ০০:৫৬:১৩

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের জন্য নতুন নির্দেশিকা জারি

নিজস্ব প্রতিবেদক: এখন থেকে রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীরা তাদের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে উৎসাহ বোনাস পাবেন। বছরে সর্বোচ্চ তিনটি বোনাস দেওয়া যাবে এবং বোনাস দেওয়ার ভিত্তি আর পরিচালন মুনাফা হবে না, বরং নিট মুনাফা হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এই নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে, যেখানে রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের উৎসাহ বোনাস দেওয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট শর্ত যুক্ত করা হয়েছে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই নির্দেশনার ফলে কর্মচারীদের ঢালাওভাবে উৎসাহ বোনাস দেওয়ার প্রবণতা বন্ধ হবে। নির্দেশিকায় স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা থেকে ঋণ ও অগ্রিমের ওপর প্রভিশন, বিনিয়োগের মূল্য হ্রাস-বৃদ্ধির প্রভিশন এবং অন্যান্য সম্পদ হ্রাস-বৃদ্ধির প্রভিশন সমন্বয় করে অর্থাৎ বাদ দিয়ে নিট মুনাফার হিসাব করতে হবে। এতদিন ব্যাংকগুলোতে উৎসাহ বোনাস দেওয়ার ক্ষেত্রে শৃঙ্খলার ঘাটতি ছিল, যা দূর করার জন্য ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই এই অভিন্ন উৎসাহ বোনাস নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

জানা গেছে, এর আগে এ বিষয়ে একটি নীতিমালা থাকলেও বড় কয়েকটি ব্যাংক তা লঙ্ঘন করে আসছিল। উদাহরণস্বরূপ, তিনটি উৎসাহ বোনাসের বেশি পাওয়ার সুযোগ না থাকলেও ২০২৩ সালে সোনালী ব্যাংক পাঁচটি উৎসাহ বোনাস দিয়েছিল। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ গত ২৭ মার্চ সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) চিঠি দিয়ে দুটি বোনাসের অর্থ কর্মচারীদের কাছ থেকে ফেরত আনার নির্দেশ দিলেও, সোনালী ব্যাংক সূত্র অনুযায়ী কেউই তা ফেরত দেননি। অন্যান্য ব্যাংকও অনুরূপভাবে বেশি বোনাস দিয়েছে।

নতুন নির্দেশিকায় রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএল—এই ছয় ব্যাংক পাঁচটি উপাদান বা কর্মসম্পাদন পরিমাপকের ভিত্তিতে উৎসাহ বোনাস দেবে। এগুলো হলো: চলতি মূলধনের ওপর নিট মুনাফার হার, আমানতের পরিমাণ বৃদ্ধির হার, ঋণ ও অগ্রিমের পরিমাণ বৃদ্ধির হার, খেলাপি ঋণ আদায়ের হার এবং অবলোপন করা ঋণ আদায়ের হার। একই পদ্ধতি বিশেষায়িত ব্যাংক (বিকেবি, রাকাব, কর্মসংস্থান ব্যাংক, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ও আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক) এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে, তবে কিছু সূচকে পরিবর্তন রয়েছে।

মূল্যায়নের ভিত্তিতে ১০০ নম্বরের মধ্যে ৪০ এর নিচে পেলে কোনো বোনাস দেওয়া যাবে না। ৪০ থেকে ৫০ নম্বরের ক্ষেত্রে একটি, ৫০ থেকে ৬০ নম্বরে দেড়টি, ৬০ থেকে ৭০ নম্বরে দুটি, ৭০ থেকে ৮০ নম্বরে আড়াইটি এবং ৮০’র বেশি নম্বর পেলে সর্বোচ্চ ৩টি বোনাস দেওয়া যাবে। একটি বোনাস বলতে এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ বোঝাবে এবং হিসাব বছরের শেষ মাসের প্রাপ্য মূল বেতন উৎসাহ বোনাসের ভিত্তি হিসেবে গণ্য হবে।

এই নির্দেশিকার আলোকে রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নিজ নিজ পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে এবং বিশেষায়িত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অনুমোদন নিয়ে উৎসাহ বোনাস প্রদান করবে। কোনো বছরে বোনাস প্রাপ্য না হলেও, বিশেষ অর্জনের ক্ষেত্রে পরিচালনা পর্ষদের সুপারিশের ভিত্তিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ এক্স-গ্রেসিয়া হিসেবে প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারবে।

এসপি

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত