ঢাকা, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ৪ কার্তিক ১৪৩২

শেয়ারবাজারের দুই জায়ান্টের লড়াই

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৩ ০৬:১৪:৩৬

শেয়ারবাজারের দুই জায়ান্টের লড়াই

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন (বিসিসি) গ্রামীণফোনের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ খারিজ করে দিয়েছে। ফলে প্রতিদ্বন্দ্বী রবি’র করা প্রতিযোগিতা-বিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগের মামলা এগিয়ে যাবে।

রবি গত জানুয়ারিতে অভিযোগ দায়ের করে জানায়, গ্রামীণফোন কৃত্রিমভাবে সিমের দাম কমিয়ে শিকারমূল্য নির্ধারণ (predatory pricing), আগ্রাসী বাজার কৌশল এবং খুচরা বিক্রেতাদের ওপর বৈষম্যমূলক শর্ত আরোপ করেছে।

গ্রামীণফোন পরে প্রতিযোগিতা কমিশনের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তবে কমিশন তা খারিজ করে দিয়েছে বলে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিসিসি’র চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান জানান। তিনি বলেন, “অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে, শিগগিরই শুনানির তারিখ ঘোষণা করা হবে।”

রবি’র অভিযোগ অনুযায়ী, এসব কর্মকাণ্ড প্রতিযোগিতা আইন লঙ্ঘন করছে, বাজারে প্রতিদ্বন্দ্বী অপারেটরদের প্রবেশাধিকার সীমিত করছে এবং দীর্ঘমেয়াদে একচেটিয়া অবস্থান তৈরি করতে পারে। অনুরূপ অভিযোগ ইতোমধ্যে বাংলালিংকও করেছে, যার শুনানি আগামী মাসে নির্ধারিত।

এর আগে, গত ১৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত এক আনুষ্ঠানিক শুনানিতে তিন অপারেটরের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে রবি ও গ্রামীণফোন তাদের যুক্তি তুলে ধরে, আর বাংলালিংক অতিরিক্ত সময় চায় তাদের অবস্থান জানাতে।

রবি ও বাংলালিংক কমিশনকে অনুরোধ করেছে— গ্রামীণফোনের কর্মকাণ্ড তদন্ত করতে, উৎপাদন খরচের নিচে সিম বিক্রি বন্ধ করতে, অস্বাভাবিক মূল্য নির্ধারণ রোধ করতে, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে এবং বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে।

রবি আজিয়াটা পিএলসি’র চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম এ বিষয়ে বলেছেন, “প্রতিযোগিতা কমিশনের এ সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। আধিপত্যের অপব্যবহার এবং প্রতিযোগিতা-বিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তদন্তের যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থার জন্য ইতিবাচক।”

তিনি আরও বলেন, “এটি এমন একটি পদক্ষেপ যা উদ্ভাবন এবং ন্যায্য প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি করবে, যার সুফল ভোক্তা এবং পুরো শিল্প উভয়ই পাবে। আমরা কমিশনের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সুস্থ প্রতিযোগিতা শক্তিশালী করতে নীতিমালার পক্ষে কাজ চালিয়ে যাব।”

অন্যদিকে, এক বিবৃতিতে গ্রামীণফোন জানিয়েছে, “আমরা জানতে পেরেছি একটি আদেশ জারি হয়েছে। তবে এখনো আনুষ্ঠানিক কপি হাতে পাইনি, তাই বিস্তারিত মন্তব্য করা সম্ভব নয়।”

গ্রামীণফোন আরও জানায়, “আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, গ্রামীণফোন বিদ্যমান প্রতিযোগিতা আইন মেনে ব্যবসা পরিচালনা করছে। আমরা কোনোভাবেই প্রতিযোগিতা-বিরোধী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নই। মূল্য, বিপণন বা বিতরণ নিয়ে সব অভিযোগ আমরা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করছি।”

অপারেটরটি আরও উল্লেখ করে, বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাত বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) দ্বারা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত এবং টেলিযোগাযোগ আইন ২০০১ দ্বারা পরিচালিত। এটি বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা, উন্মুক্ততা ও ভোক্তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।

“বিটিআরসি বাজার প্রবেশ, মূল্য নির্ধারণ এবং প্রতিযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড সবই নিয়ন্ত্রণ করে। বর্তমানে একটি Significant Market Power (SMP) অপারেটর হিসেবে গ্রামীণফোন কেবলমাত্র বিদ্যমান আইনি কাঠামোর মধ্যে পরিচালিত হচ্ছে,” উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানটি।

এছাড়া তারা জানায়, “আমাদের কার্যক্রম পরিচালিত হয় নির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রক নির্দেশনার ভিত্তিতে— যেমন অসম MNP লক-ইন, প্রচার অনুমোদন, ইন্টারকানেকশন চার্জ ইত্যাদি। এত বেশি নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন এবং নেতিবাচক প্রতিযোগিতামূলক উদ্দেশ্য প্রতিফলিত করে।”

এএসএম/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

রাকসুতে পরাজিত প্রার্থীদের ব্যতিক্রমী আয়োজন

রাকসুতে পরাজিত প্রার্থীদের ব্যতিক্রমী আয়োজন

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (রাকসু) নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীরা একটি মিলনমেলার আয়োজন করেছেন। শনিবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের... বিস্তারিত