ঢাকা, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২

ওষুধ কোম্পানির প্রভাবমুক্ত

সরকারি চিকিৎসকদের জন্য ৮ নির্দেশনা

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১২ ২১:১৭:০৩

সরকারি চিকিৎসকদের জন্য ৮ নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকদের পেশাগত ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখা এবং ওষুধ কোম্পানির অযাচিত প্রভাব প্রতিরোধ করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নতুন আট দফা নির্দেশনা জারি করেছে। নতুন নির্দেশনার আওতায় সরকারি চিকিৎসকদের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক এড়িয়ে চলার পাশাপাশি রোগীদের জন্য নিরপেক্ষ ও মানসম্মত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

এই নির্দেশনা বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এ বি এম আবু হানিফ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জারি করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সরকারি চিকিৎসকদের প্রতি জনগণের আস্থা অটুট রাখার জন্য, স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত করার লক্ষ্য এবং হাসপাতালগুলোতে স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য এই নির্দেশনা কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে।

নির্দেশনার মূল দিকগুলো হলো-

১) কোনো অবস্থাতেই বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ক্লিনিক বা ওষুধ কোম্পানির নামাঙ্কিত প্যাডে প্রেসক্রিপশন বা পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া যাবে না।

২) সরকারি হাসপাতালে যে পরীক্ষা ও ওষুধ বিদ্যমান, তা বাইরের প্রতিষ্ঠান থেকে করানো বা কিনতে রোগীকে বলা যাবে না।

৩০ সরকার অনুমোদিত বা সরবরাহ করা সিল ছাড়া অন্য কোনো বেসরকারি সিল ব্যবহার করা যাবে না। তবে জেনেরিক নামের বিজ্ঞাপনবিহীন সিল ব্যবহার করা যাবে।

৪) ওষুধ কোম্পানির সরবরাহ করা ওষুধের তালিকা সরকারি হাসপাতালের টেবিলে রাখা যাবে না।

৫) কোনো কোম্পানির প্রতিনিধি রোগীর প্রেসক্রিপশন বা ব্যক্তিগত তথ্যের ছবি তোলা বা সংগ্রহ করতে পারবেন না।

৬) সপ্তাহে নির্ধারিত দুই দিন সোমবার ও বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত প্রতিনিধিরা চিকিৎসকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন।

৭) এসময়ের বাইরে হাসপাতালে অবস্থান করলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

৮) সাক্ষাতের সময় কোম্পানি কর্তৃক প্রদত্ত আইডি কার্ড অবশ্যই দৃশ্যমান স্থানে রাখতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতে, নতুন নির্দেশনাগুলো কার্যকর হলে সরকারি চিকিৎসকদের পেশাগত ভাবমূর্তি আরও দৃঢ় হবে এবং রোগীদের মধ্যে চিকিৎসকদের প্রতি আস্থা ফিরে আসবে। সম্প্রতি দেখা গেছে, বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ওষুধ কোম্পানির অযাচিত চাপের কারণে অনেক রোগীর উপর অতিরিক্ত আর্থিক বোঝা পড়ছে, যা নিয়ন্ত্রণের অতি জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

স্বাস্থ্য খাত সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শুধুমাত্র নির্দেশনা জারি করলেই কার্যকারিতা নিশ্চিত হবে না; তা সঠিকভাবে বাস্তবায়নও অপরিহার্য। হাসপাতালের অভ্যন্তরে নিয়মিত তদারকি, পর্যবেক্ষণ এবং রোগীদের সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম পরিচালনা করলে উদ্যোগটি আরও ফলপ্রসূ হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, যদি কেউ এই নির্দেশনা লঙ্ঘন করে, তবে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি বা চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে, সরকারি স্বাস্থ্যসেবার মান ও সাধারণ মানুষের আস্থা অক্ষুণ্ণ থাকে।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত