ঢাকা, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২
ঢাবি ডাকসু নির্বাচনে প্রতিশ্রুতির মুখোশে বাস্তবতার সংকট

নিজস্ব প্রতিবেদক :ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের আগ্রহ বাড়ছে। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন সমর্থিত ও স্বতন্ত্র প্যানেল তাদের ইশতেহার ঘোষণা করেছে। শিক্ষার্থীদের মন জয় করতে প্রতিটি প্যানেল নানারকম প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আশঙ্কা রয়েছে, এসব প্রতিশ্রুতি পুরোনো এবং বাস্তবায়নে মূল ভূমিকা নেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, ডাকসুর নয়।
বিভিন্ন প্যানেলের ইশতেহারে আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা, নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, খাবারের মান উন্নয়নসহ একাধিক প্রতিশ্রুতি রয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেল, ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’, বামপন্থি জোট সমর্থিত ‘প্রতিরোধ পরিষদ’, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ সমর্থিত ‘ডাকসু ফর চেঞ্জ’ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রায় একই ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
শিক্ষার্থীদের সবার জন্য হলের পূর্ণাঙ্গ আবাসন নিশ্চিত করা, নারীদের নিরাপত্তা বাড়ানো, ক্যান্টিনে পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ, স্বাস্থ্যসেবা আধুনিকীকরণ এবং মানসিক স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নের কথা প্রতিটি ইশতেহারে উল্লেখ রয়েছে। তবে এই অধিকাংশ বিষয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বে থাকায় ডাকসুর ক্ষমতার বাইরে বলে মনে করা হয়।
ডাকসুর সংবিধান অনুযায়ী, এর দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে কমন রুম রক্ষণাবেক্ষণ, ইনডোর গেমসের আয়োজন, জার্নাল ও ম্যাগাজিন প্রকাশ, বিতর্ক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বক্তৃতা ও সামাজিক সমাবেশ আয়োজন। কিন্তু বিশ্লেষণে দেখা গেছে, কোনো প্যানেলই বিতর্ক আয়োজনের ব্যাপারে উল্লেখ করেনি, যা ডাকসুর মূল কাজগুলোর একটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্যানেল শিক্ষার্থীদের ক্যান্টিন ও আবাসন ব্যবস্থায় ভর্তুকি ও মানোন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ বলেছে, পুষ্টিবিদের মাধ্যমে খাবারের মান নিয়ন্ত্রণ ও পুষ্টিকর খাবারের মেনু প্রণয়নের পরিকল্পনা রয়েছে। বামপন্থি ‘প্রতিরোধ পরিষদ’ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে কাফেটেরিয়া চালু ও খাবারে ক্যালোরি নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেছে। অন্যদিকে ছাত্রদল ভর্তুকি বাড়ানো, পুষ্টিবিদ টিম গঠন ও মান নিয়ন্ত্রণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় সকল প্যানেল গুরুত্ব দিয়েছে। পোশাকের স্বাধীনতা, যৌন হয়রানি প্রতিরোধ, স্যানিটারি প্যাড ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন, নারী চিকিৎসক নিয়োগ, নিরাপদ পরিবহন ব্যবস্থা প্রভৃতি বিষয় প্যানেলগুলো অন্তর্ভুক্ত করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলছেন, প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের দাবি ও কর্মপরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তুলে ধরতে পারে এবং বাস্তবায়নের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে পারে, তবে বাস্তবায়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, ভোটারদের মন জয় করতে প্রতিশ্রুতিগুলো দেওয়া হলেও, বাস্তবতায় তা পূরণ করা কঠিন হবে। ২০১৯ সালের নির্বাচনের ইশতেহারগুলোও প্রায় একই রকম ছিল, কিন্তু সেই নির্বাচিত ডাকসু শিক্ষার্থীরা তেমন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি, যেখানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপই বেশি ছিল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের প্রার্থীদের কাজ এবং তাদের বাস্তবায়ন দক্ষতার ওপর নজর থাকবে, যেখানে প্রতিশ্রুতির সাথে সাথে বাস্তবতা কতটা মিলবে সেটাই বড় প্রশ্ন।
নয়ন
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে শেয়ারবাজারের ১১ কোম্পানিতে
- কোম্পানি পুরোদমে উৎপাদনে, তারপরও শঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা!
- বিও অ্যাকাউন্টের ফি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের সুখবর দিল বিএসইসি
- এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় ৫ কোম্পানি
- শেয়ারবাজারে দ্রুত মুনাফা তোলার ৫টি ট্রেডিং টিপস
- রবির মাধ্যমে দেশে আসছে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট
- শেয়ারবাজারে মিডল্যান্ড ব্যাংকের নতুন যাত্রা
- তদন্তের খবরে থামছে দুই কোম্পানির ঘোড়দৌড়
- আট কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কাড়াকাড়ি
- নতুন উচ্চতায় অগ্রসর হচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার
- সর্বনিম্ন দামে আটকে গেল ৭ কোম্পানির শেয়ার
- পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার পথে এগোচ্ছে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার
- শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মাথাব্যথার ১১ শেয়ার
- চার জেডের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ আস্থা
- তিন কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা