ঢাকা, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১ ভাদ্র ১৪৩২
উত্তাল ইন্দোনেশিয়া, নেপথ্যে যে কারণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা থেকে শুরু করে দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে। সংসদ সদস্যদের জন্য মাসিক ৫০ মিলিয়ন রুপি বা প্রায় ৩ হাজার মার্কিন ডলারের আবাসন ভাতা অনুমোদনের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তীব্র হয়ে উঠেছে। এই ভাতা দেশের ন্যূনতম মজুরির প্রায় ১০ থেকে ২০ গুণ বেশি, যা ক্ষমতাশালী রাজনীতিক ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে বৈষম্যের বড় ফারাক স্পষ্ট করেছে।
অস্থিরতার উত্তাপ আরও বেড়ে যায়, যখন ২১ বছর বয়সী ফুড ডেলিভারি কর্মী আফফান কুরনিয়াওয়ান পুলিশের গাড়ির চাপায় নিহত হন। বিক্ষোভে অংশ না নিলেও খাবার পৌঁছে দিতে গিয়েই তার মৃত্যু ঘটে। আফফানের এই দুঃখজনক ঘটনা সাধারণ মানুষের মধ্যে জমে থাকা ক্ষোভকে নতুন করে উস্কে দেয়।
আফফানের মৃত্যুর পর জাকার্তা, সুমাত্রা, সুলাওয়েসি, কালিমান্তান ও বালির রাস্তায় মানুষ বিক্ষোভে নেমে আসে। পুলিশ তাদের দমন করতে টিয়ার গ্যাস এবং জলকামান ব্যবহার করে। একাধিক স্থানে সংঘর্ষ ও সরকারি ভবন ও সংসদ সদস্যদের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বিক্ষোভকারীরা শুধু অতিরিক্ত ভাতার বিরুদ্ধেই নয়, বরং সামগ্রিক বৈষম্য, দুর্নীতি এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছে। নারীবাদী কর্মীরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার হরণের অভিযোগ তুলেছেন। এছাড়া আচেহর মতো অঞ্চলে নতুন সেনা ব্যাটালিয়ন স্থাপনের পরিকল্পনার বিরোধিতা করছে স্থানীয় জনগণ, যা সামরিক প্রভাব বৃদ্ধির আশঙ্কা জাগিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, প্রেসিডেন্ট প্রাবোও নির্বাচনী প্রচারণায় প্রবৃদ্ধি ও সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিলেও ক্ষমতায় এসে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামো খাতে বড় কাটছাঁট করেছেন। যদিও তার জনপ্রিয়তা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত, তবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার সুযোগ এখনও রয়েছে। জনআস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য দুর্নীতি দমন, অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের দায়ীদের শাস্তি এবং স্বচ্ছ শাসন ব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন।
চাপের মুখে সংসদ আবাসন ভাতা বাতিল, বেতন বৃদ্ধি স্থগিত এবং অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তবে জনতার ক্ষোভ শিথিল হবে কি না তা নিশ্চিত নয়। ইন্দোনেশিয়ার ২৮ কোটিরও বেশি মানুষ এখন অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, বৈষম্য এবং সামরিক প্রভাবের বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করছে। জনগণের দাবি স্পষ্ট—মৌলিক চাহিদা পূরণ, স্বচ্ছ শাসন ব্যবস্থা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এমজে
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে শেয়ারবাজারের ১১ কোম্পানিতে
- কোম্পানি পুরোদমে উৎপাদনে, তারপরও শঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা!
- পাকিস্তান বনাম সংযুক্ত আরব আমিরাত সাম্প্রতিক ম্যাচের পরিসংখ্যান
- বিও অ্যাকাউন্টের ফি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের সুখবর দিল বিএসইসি
- মার্জারের সাফল্যে উজ্জ্বল ফার কেমিক্যাল
- এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় ৫ কোম্পানি
- শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর প্রথম ‘নো ডিভিডেন্ড’
- শেয়ারবাজারে মিডল্যান্ড ব্যাংকের নতুন যাত্রা
- তদন্তের খবরে থামছে দুই কোম্পানির ঘোড়দৌড়
- আট কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কাড়াকাড়ি
- নতুন উচ্চতায় অগ্রসর হচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার
- সর্বনিম্ন দামে আটকে গেল ৭ কোম্পানির শেয়ার
- ডেনিম উৎপাদন বাড়াতে এভিন্স টেক্সটাইলসের বড় পরিকল্পনা
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ৫ কোম্পানির ডিভিডেন্ড-ইপিএস
- পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার পথে এগোচ্ছে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার