ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২

সাংবাদিকদের উপর পুলিশের হা’মলা

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ আগস্ট ২৭ ২০:৪৩:২৫
সাংবাদিকদের উপর পুলিশের হা’মলা

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পুলিশের মারধরে তিন সাংবাদিক ও একজন ইউটিউবার আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন নিউ ন্যাশনের শিমুল পারভেজ ও নোমান মোশাররফ, বাংলাভিশনের কেফায়েত শাকিল এবং ইউটিউবার আলম শরীফ। তাদের মধ্যে শিমুল ও নোমানকে ভর্তি করা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের গেটের পাশে এ ঘটনা ঘটে।

আহত সংবাদিক কেফায়েত শাকিল জানান, শিমুল পারভেজ ও নোমান মোটরসাইকেলে প্রেসক্লাব থেকে বের হচ্ছিলেন। তখন একটি প্রাইভেটকার হালকা ধাক্কা দেয়। এ নিয়ে তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে এক ব্যক্তি শিমুলকে ছুরি দিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করেন। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়।

শাকিল বলেন, আমি রাস্তার অন্য পাশে যাচ্ছিলাম। ঝামেলা শুনে গাড়ির জানালা দিয়ে দেখছিলাম, শিমুলকে পুলিশ বক্সের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। দৌড়ে এগিয়ে যাই, কিন্তু তখন শিমুলকে খুঁজে পাইনি। পরে বক্সের ভেতরে আরও একজনকে মারধর হতে দেখেছি। মোবাইলে ভিডিও ধারণ করতে চেষ্টা করি, কিন্তু পুলিশ আমার ওপর চড়াও হয়। ৫-৬ জন পুলিশ আমাকে ধরে বক্সের ভেতরে টেনে আনে, মোবাইল নিতে চায় এবং ভিডিও ডিলিট করতে বলে। আমি বারবার বলি, আমি টিভি সাংবাদিক, ভিডিও ধারণ আমার কাজ। তারপরও আমাকে মারধর করা হয়। এ সময় আলম নামে একজন মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিককেও পুলিশ মারধরের চেষ্টা করে। পরে উপস্থিত অন্যান্য সাংবাদিকদের প্রতিবাদে পুলিশ কিছুটা সরে আসে।

আহত সাংবাদিকদের হাসপাতালে দেখতে যাওয়া সহকর্মী ইয়াসির তন্ময় জানান, জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দিকে যাওয়ার সময় একটি মাইক্রোবাস সাংবাদিকদের মোটরসাইকেলের সামনে দাঁড়ায়। শিমুল পারভেজ গাড়িটা পিছিয়ে দিতে বলেন। গাড়ি না সরিয়ে চালক ও যাত্রীরা গালাগালি শুরু করে। একপর্যায়ে চালক ধারালো অস্ত্র নিয়ে শিমুলকে আঘাত করার চেষ্টা করেন। শিমুল হাত দিয়ে ঠেকালেও কিছু আঘাত লাগে এবং রক্ত বের হয়। এরপর চালক ও প্রাইভেটকারের অন্যরা নেমে এসে সাংবাদিকদের বেধড়ক মারধর শুরু করে।

জয়নাল নামের এক পুলিশ সদস্যের নেতৃত্বে আরও পুলিশ ছুটে আসে। তারা অবস্থানকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেন এবং পরে শিমুল, নোমান ও শাকিলের ওপর চড়াও হন। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সত্ত্বেও তাদের পুলিশ বক্সে নিয়ে আরও মারধর করা হয়। শিমুল পারভেজ অভিযোগ করেছেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে থাকলেও সাহায্য না করে উল্টো সাংবাদিকদের মারধর করেছে।

ডিএমপির রমনা ডিসি মাসুদ আলমকে ফোন করা হলেও তিনি পাওয়া যাননি। পরে পুলিশ বক্সের দায়িত্বরত কয়েকজনকে ডেকে নেওয়া হয় এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। সাংবাদিকরা অভিযুক্তদের অপসারণ ও বহিষ্কার দাবি করেছেন এবং পুলিশ আশ্বাস দিয়েছে, অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়া হবে।

ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, শিমুল পারভেজকে কয়েকজন ধরে মারধর করছেন। তাদের মধ্যে একজন গোলাপী শার্ট ও কালো প্যান্ট পরিহিত ছিলেন। পাশে একজন বয়স্ক ব্যক্তিও মারধর করছেন। পুলিশের উপস্থিতিতে আহত নোমানকেও বেধড়ক মারধর করা হয়।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত