ঢাকা, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২
রাজশাহীতে চাঁদাবাজের তালিকা প্রকাশ; রয়েছেন যেসব দলের নেতাকর্মী

সম্প্রতি দেশব্যাপী চাঁদাবাজি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এর মধ্যেই বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের পরিচয়ধারী ১২৩ জন ‘চাঁদাবাজের’ নাম সংবলিত একটি তালিকা রাজশাহী জেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। এই তালিকায় বিএনপি, ছাত্রদল ও তাদের সহযোগী সংগঠনের ৪৪ জন নেতা-কর্মী, ক্যাডার, সমর্থকের নাম পরিচয় রয়েছে। রয়েছে আওয়ামী লীগের ২৫ জন ও জামায়াতের ৬ জনের নাম। তবে বাকিগুলোর নাম ঠিকানা থাকলেও নেই রাজনৈতিক পরিচয়। তাদের বলা হয়েছে ‘সুবিধাবাদী’।
এদিকে এই তালিকা নিয়ে জানতে চাইলে পুলিশ জানায়, ‘এই রকম তালিকা তারা করেনি। তবে তালিকার বিষয়ে তারা গণমাধ্যমকর্মীদের থেকে শুনেছেন।’ এই তালিকা পুলিশের নাকি সরকারের অন্য কোনো সংস্থার তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সম্প্রতি রাজশাহীর একজন আবাসন ব্যবসায়ীর দায়ের করা চাঁদাবাজির মামলায় বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতার নাম উঠে এসেছে। মামলার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন ১৮ জন নেতা, যাদের বেশিরভাগই ছাত্রদল ও যুবদলের নেতৃবৃন্দ। মামলায় তাদের প্রধান আসামি করা হয়েছে।
এই মামলার প্রতিবাদে রাজশাহী মহানগর বিএনপি এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে এবং সাহেববাজারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে মামলাটিকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে।
প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, রাজশাহীর বিভিন্ন থানাভিত্তিক আসামির সংখ্যা হলো- বোয়ালিয়া থানায় ২২ জন, রাজপাড়া ১৮ জন, চন্দ্রিমা ১২ জন, মতিহার ৭ জন, শাহ মখদুম ২০ জন, এয়ারপোর্ট ১০ জন, পবা ৮ জন, কর্ণহার ২০ জন এবং কাশিয়াডাঙ্গা থানায় ৬ জন।
তালিকাভুক্তদের মধ্যে মহানগর বিএনপির একজন যুগ্ম আহ্বায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি মামলা দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করছেন। অন্য এক সদস্যকে নগরীর বোয়ালিয়া থানাধীন বিভিন্ন ফুটপাত থেকে নিয়মিত চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ছাত্রদলের এক নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আওয়ামী লীগের অনুসারীদের হুমকি ও কোচিং সেন্টারগুলোর কাছ থেকে চাঁদা তুলছেন।
জামায়াতে ইসলামীর এক নেতার বিরুদ্ধে ভূমি দখল, গণমাধ্যমকর্মীদের হুমকি এবং উন্নয়ন প্রকল্পে বাধা দিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়াও জামায়াতের অন্য নেতাদের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ রয়েছে। মামলার তালিকায় থাকা একজনের বিরুদ্ধে মাদক কারবারের অভিযোগও রয়েছে।
বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো বলছে, এসব মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের দমন করার কৌশলমাত্র। তারা এই মামলাগুলোর প্রতিবাদে আরও বৃহত্তর কর্মসূচির হুমকিও দিয়েছেন।
এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা বলেন, “তালিকার কথা শুনেছি, কিন্তু এখনও চোখে দেখিনি। প্রশাসন যদি এ বিষয়ে কিছু না জানে, তাহলে এটি শত্রুতামূলকভাবে করা হয়েছে।”
অন্যদিকে জামায়াতের মহানগর সেক্রেটারি এমাজ উদ্দিন মণ্ডলের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তবে একটি গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে তিনি স্বীকার করেছেন, “তালিকায় যাদের নাম এসেছে, তাদেরকে দলীয় কার্যক্রম থেকে বয়কট করা হয়েছে। নেতাদেরও বলে দেওয়া হয়েছে কারও কাছে যেন তারা ঘেঁষতে না পারেন।”
তালিকা নিয়ে রাজশাহী মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকেও দেওয়া হয়েছে প্রতিক্রিয়া। অতিরিক্ত উপকমিশনার ও পুলিশের মুখপাত্র মো. গাজিউর রহমান বলেন, “এমন কোনো তালিকা আমরা তৈরি করিনি। গণমাধ্যমে বিষয়টি শুনেছি। তবে তালিকায় যাদের নাম আছে, তারা যদি সত্যিই চাঁদাবাজিতে জড়িত থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- শেয়ারবাজারে দ্রুত মুনাফা তোলার ৫টি ট্রেডিং টিপস
- সাবেক কর্মীদের ১৮২৩ কোটি টাকা আটকে রেখেছে ম্যারিকো
- শেয়ার কারসাজিতে ৫ বিনিয়োগকারীকে ১৩ কোটি টাকা জরিমানা
- এক হাজার কোটি টাকার মামলায় শিবলী রুবাইয়াত গ্রেপ্তার
- তালিকাচ্যুতির ঝুঁকিতে অলিম্পিক এক্সেসরিজ
- রবির মাধ্যমে দেশে আসছে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট
- শেয়ার কারসাজিতে ১২ জনকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা জরিমানা
- সর্বোচ্চ চাহিদায় নাগালের বাইরে ১৪ প্রতিষ্ঠান
- তিন কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- কৃত্রিম চাপে শেয়ারবাজারে অস্থিরতা, সহসা পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা
- এক কোম্পারি অস্থিরতায় শেয়ারবাজারে তোলপাড়
- মুনাফা বাড়াতে নতুন পরিকল্পনা: ঘুরে দাঁড়াচ্ছে হাক্কানী পাল্প
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ইস্টার্ন হাউজিং
- চার জেডের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ আস্থা
- পাঁচ কোম্পানির কারণে থমকে গেল শেয়ারবাজারের উত্থান