ঢাকা, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২

শিক্ষার্থী পেটানোর অভিযোগে পরিচালক ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

ডুয়া নিউজ- শিক্ষা
২০২৫ জুলাই ২৫ ২১:৪৪:১৪
শিক্ষার্থী পেটানোর অভিযোগে পরিচালক ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

সিরাজগঞ্জের শহীদ মডেল স্কুল ও ক্যাডেট একাডেমির ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে নির্মমভাবে পেটানোর অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকসহ দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) আহত শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জ সদর আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার আসামিরা হলেন: শহীদ ক্যাডেট একাডেমি সিরাজগঞ্জ শাখার পরিচালক হাসানুজ্জামান রঞ্জু এবং সহকারী শিক্ষক বুলবুল হোসেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী গত সাত মাস ধরে শহীদ ক্যাডেট একাডেমির আবাসিক হোস্টেলে থেকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। আবাসিকে শিক্ষার্থীদের দেখাশোনার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন সহকারী শিক্ষক বুলবুল হোসেন। গত ১৭ জুলাই অসুস্থতার কারণে ঘুম থেকে উঠতে দেরি করায় শিক্ষক বুলবুল হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে এলোপাতাড়ি বেত্রাঘাত করেন।

এরপর মারধরের বিষয়টি গোপন রাখতে তাকে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। ১৮ জুলাই সাপ্তাহিক ছুটির দিনে শিশুটির মা-বাবা তাকে দেখতে গেলে সহপাঠীদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারেন। এ সময় তারা ফাহিমের শরীরে কাঠের বাটাম দিয়ে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান।

ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে শিশুটিকে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর অভিভাবকরা প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক হাসানুজ্জামান রঞ্জুর কাছে বিচার চাইলে তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু পরে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো শিক্ষার্থীর বাবাকে হুমকি দিয়ে অফিস থেকে বের করে দেন পরিচালক। এ বিষয়ে সদর থানায় অভিযোগ করতে গেলেও পুলিশ অভিযোগ আমলে নেয়নি। বাধ্য হয়েই তারা আদালতের শরণাপন্ন হন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী নিখিল চন্দ্র ঘোষ জানান, শিক্ষার্থী পেটানোর ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি সমালোচনার মুখে পড়ে। এরপর মামলা হলে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম রাসেল মাহমুদ বিষয়টি আমলে নিয়ে এফআইআর হিসেবে গণ্য করতে সদর থানাকে নির্দেশ দেন।

আইনজীবী আরও জানান, এর আগেও ২০১৮ সালে শিক্ষার্থী পেটানোর একাধিক ঘটনায় পরিচালক ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তদন্ত হয়েছিল। সেই তদন্তে জেলা প্রশাসন পরিচালক মো. হাসানুজ্জামান রঞ্জুকে বরখাস্তের নির্দেশ দিলেও তিনি বহাল তবিয়তে রয়েছেন।

একাডেমির পরিচালক হাসানুজ্জামান রঞ্জু বলেন, "ছেলেটাকে একটু বেশিই মারধর করেছেন শিক্ষক। তার অভিভাবক আমার কাছে আসেননি। তিনি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। এরপর বিষয়টি মীমাংসার জন্য তাকে বারবার ফোন দিলেও সাড়া দেননি।"

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোখলেছুর রহমান জানান, অভিভাবকের অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি তদন্ত করতে সময় চাওয়া হয়। এরপর আমাদের কাছে না এসে তিনি আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন বলে জেনেছি।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আফসার আলী বলেন, প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক-শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আগেও শিক্ষার্থী পেটানোর একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রশাসনের নির্দেশে নতুন অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তিন সদস্যের কমিটিও করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি আমলে নিয়েছে প্রশাসন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে তিনি জানান।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত