ঢাকা, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২
এবার ইরানের ভেতরেও শুরু হচ্ছে যুদ্ধ?
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা ছিল ইরানে দীর্ঘদিন ধরে গড়ে ওঠা মোসাদের গুপ্তচর নেটওয়ার্কের একটি প্রকাশ্য বহিঃপ্রকাশ। এই হামলায় লক্ষ্য করা হয়েছিল ইরানের সামরিক নেতৃত্ব থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু বিজ্ঞানীদের পর্যন্ত। মোসাদ এসব তথ্য সংগ্রহ করেছে এমন সব ব্যক্তির মাধ্যমে, যারা ইরানেরই নাগরিক।
এখান থেকেই শুরু হয়েছে ইরানের ভেতরের আতঙ্ক। কারণ শত্রু যদি বাইরের হয়, তাকে শনাক্ত ও প্রতিরোধ করা সহজ। কিন্তু যখন শত্রু নিজের দেশের ভেতরে, নিজের পরিচয়ে লুকিয়ে থাকে— তখন রাষ্ট্রীয় প্রতিক্রিয়া হয়ে ওঠে আরও কঠোর ও দমনমূলক।
যদিও কার্যকর ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিকে কেন্দ্র করে বিশ্ব সম্প্রদায় কিছুটা স্বস্তি অনুভব করছে। তবুও ইরানের অভ্যন্তরে এখন এক অদৃশ্য আতঙ্ক বিরাজ করছে। যুদ্ধক্ষেত্রে গোলাগুলি থেমে গেছে ঠিকই, কিন্তু শুরু হয়েছে আরেকটি যুদ্ধ নিজ দেশের মানুষের বিরুদ্ধেই।
বিশ্লেষকদের মতে, 'যুদ্ধ চলাকালে ইরানের নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে ইসরায়েলের প্রবেশ বড় এক ব্যর্থতা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। মোসাদের সফল অনুপ্রবেশ তেহরানের ভেতরে চরম সন্দেহ ও অবিশ্বাস তৈরি করেছে। এই সুযোগেই সরকার ভিন্নমত দমনে নামে আরও কঠোর হাতে।'
ঙ্গলবার (২৪ জুন) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিবিসি পারসিয়ান জানিয়েছে, ইরানের কেরমানশাহ প্রদেশের সরকারি কৌঁসুলি হামিদরেজা কারিমি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, "রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগে ১১৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন ইউরোপীয় নাগরিক রয়েছেন, যার বিরুদ্ধে সরাসরি গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়েছে।"
তিনি আরও জানান, "আটকদের ছোট একটি অংশ গুপ্তচর সন্দেহে গ্রেপ্তার হলেও, অধিকাংশের অপরাধ হচ্ছে-‘রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা’, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট, বিদেশি সংযোগ রাখা বা সরকারের সমালোচনার মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।"
গত কয়েক দিনে অন্তত তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান সরকার। যদিও তাদের পরিচয় বা মামলার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থাকার অভিযোগে দেশজুড়ে আরও ডজনখানেক নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এই দমননীতিকে আরও আইনগত ভিত্তি দিতে ইরানের পার্লামেন্ট সম্প্রতি একটি সংশোধিত আইন পাস করেছে। এর মাধ্যমে গুপ্তচরবৃত্তি সংক্রান্ত মামলার দ্রুত বিচার ও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা যাবে।
ইরানের বিচার বিভাগের মুখপাত্র বলেন, "আগের আইনে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ চলাকালে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে কার্যকর বিচার সম্ভব ছিল না। এখন পার্লামেন্ট আমাদের সেই ক্ষমতা দিয়েছে, যাতে ‘উদাহরণস্বরূপ শাস্তি’ দেওয়া যায়।"
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর বলছে, "ইরান সরকার যুদ্ধের আবহকে ব্যবহার করছে ভিন্নমত ও নাগরিক স্বাধীনতা রুদ্ধ করার হাতিয়ার হিসেবে। তারা এটিকে ‘প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ’ নয়, বরং ‘প্রতিশোধমূলক দমননীতি’ বলে অভিহিত করছে।"
প্রসঙ্গত, ইরানে সংস্কারের আহ্বান নতুন নয়। বহুদিন ধরেই সে দাবি উঠে আসছে। তবে বাস্তবতা হলো, দেশটির ইতিহাসে প্রতিটি সংকট শেষ পর্যন্ত আরও কঠোর শাসনের ভিত্তি তৈরি করেছে।
যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে ইরান হয়তো বাইরের শত্রুর হাত থেকে কিছুটা নিরাপদ হয়েছে। কিন্তু দেশটির সাধারণ মানুষ এখন নিজেদের দেশেই নতুন এক লড়াইয়ের মুখোমুখি এক শ্বাসরুদ্ধকর, আতঙ্কঘেরা দমন-পীড়নের বাস্তবতায়।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ফাইনাল: কবে, কখন-যেভাবে দেখবেন লাইভ
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া: খেলাটি মোবাইলে সরাসরি(LIVE) দেখুন
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া: খেলাটি ফ্রিতে সরাসরি(LIVE) দেখুন
- পাকিস্তান বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা: খেলাটি সরাসরি(LIVE) দেখবেন যেভাবে
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ৯৫ কোম্পানি, দেখুন এক নজরে
- আজ বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় টি-টোয়েন্টি: যেভাবে দেখবেন লাইভ (LIVE)
- ডিএসই’র দুই ব্রোকারেজের ট্রেডিং লাইসেন্স বাতিল
- বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় টি-২০: কবে, কখন, কোথায়-যেভাবে দেখবেন খেলাটি
- ইপিএস প্রকাশ করেছে ৬৮ কোম্পানি, দেখুন এক নজরে
- মার্জিন রুল থেকে মিউচুয়াল ফান্ড—সবখানেই আসছে বড় পরিবর্তন
- বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩য় টি-টোয়েন্টি: খেলাটি সরাসরি(LIVE) দেখবেন যেভাবে
- ইপিএস প্রকাশ করেছে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া: খেলাটি মোবাইলে সরাসরি দেখুন (LIVE)
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ
- ‘নো ডিভিডেন্ড’ ঘোষণার পর শেয়ার দামে রেকর্ড দৌড়