ঢাকা, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২
ভুয়া ঋণের নামে ৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে শাখা ব্যবস্থাপক

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ইউনিয়ন ব্যাংকের হাটখোলা শাখাব্যবস্থাপক জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট থেকে ৮ কোটি টাকারও বেশি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তদন্তে এ তথ্য জানা গেছে।
গ্রাহকদের অজান্তে স্থায়ী আমানতের বিপরীতে ভুয়া ঋণ তৈরি, অ্যাকাউন্ট জালিয়াতি এবং তহবিল স্থানান্তরের মতো নানা প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপক।
একজন গ্রাহক ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে যখন তার মুদারাবা টার্ম ডিপোজিট থেকে টাকা তুলতে যান, তখনই শুরু হয় এই কেলেঙ্কারির। অনুসন্ধানে উঠে আসে, শাখা ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন তার দায়িত্বকালীন উভয় মেয়াদেই জালিয়াতিমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।
ব্যাংকের তদন্ত অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ২৫ জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর এবং দ্বিতীয় দফায় ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত হাটখোলা শাখার ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন জাকির হোসেন। তিনি এই সময়ে নানা কৌশলে গ্রাহকের অর্থ তছরুপ করেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনি মুদারাবা টার্ম ডিপোজিট রসিদ (MTDR) ব্লক নকল করে এবং ভুয়া ঋণ সৃষ্টি করে অর্থ আত্মসাৎ করেন। একই সঙ্গে কিছু সঞ্চয়ী হিসাব থেকেও অননুমোদিতভাবে টাকা স্থানান্তর করেন এবং তা অন্য অ্যাকাউন্টে জমা দেখিয়ে ঋণ সমন্বয় করেন।
মিজানুর রহমান নামে একজন ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক জানান, তিনি MTDR-এর অধীনে দুটি অ্যাকাউন্টে ৬০ লাখ টাকা জমা রেখেছিলেন। এর মধ্যে একটি ঋণ আগেই পরিশোধ করা হলেও দ্বিতীয় MTDR-এর বিপরীতে কখনো ঋণ নেননি। তবে জানুয়ারিতে টাকা তুলতে গেলে ব্যাংক জানায়, তার নামে ৬০ লাখ টাকার ঋণ রয়েছে যা পরিশোধ না করলেMTDR ফেরত দেওয়া হবে না।
মিজানুর বলেন, “ব্যবস্থাপকের অনুরোধে আসলMTDR জমা দিয়েছিলাম। এরপর জানতে পারি, আমার অ্যাকাউন্ট থেকে ভুয়া ঋণ দেখিয়ে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বারবার ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করেও এখন পর্যন্ত টাকাটা ফেরত পাইনি।”
তিনি আরও জানান, ঢাকার সাভারে তার একটি জুতা তৈরির কারখানা রয়েছে এবং পুঁজি সংকটে তিনি সময়মতো অর্ডার সরবরাহে ব্যর্থ হচ্ছেন।
অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ইউনিয়ন ব্যাংক এখনো ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দেয়নি। অন্তত ২০ জন গ্রাহক কয়েক মাস ধরে ব্যাংকের শাখা ও প্রধান কার্যালয়ে ঘুরেও আশান্বিত কোনো আশ্বাস পাননি।
ব্যাংক জানিয়েছে, অভিযুক্ত জাকির হোসেনের কাছ থেকে অর্থ উদ্ধারের পর গ্রাহকদের ফেরত দেওয়া হবে। তবে কীভাবে ও কখন এই অর্থ ফেরত দেওয়া হবে, তা নিয়ে এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা জানায়নি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর ইউনিয়ন ব্যাংকসহ একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান মূলধন সংকটে পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি জানিয়েছেন, ইউনিয়ন ব্যাংকসহ পাঁচটি ইসলামিক ব্যাংককে একীভূত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- সাবেক কর্মীদের ১৮২৩ কোটি টাকা আটকে রেখেছে ম্যারিকো
- শেয়ার কারসাজিতে ৫ বিনিয়োগকারীকে ১৩ কোটি টাকা জরিমানা
- এক হাজার কোটি টাকার মামলায় শিবলী রুবাইয়াত গ্রেপ্তার
- তালিকাচ্যুতির ঝুঁকিতে অলিম্পিক এক্সেসরিজ
- সরকারের সিদ্ধান্তে ডুবছে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বপ্ন?
- শেয়ারবাজারে প্রতারণা ঠেকাতে মাঠে নামছে গোয়েন্দা সংস্থা
- শেয়ার কারসাজিতে ১২ জনকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা জরিমানা
- তিন কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- সর্বোচ্চ চাহিদায় নাগালের বাইরে ১৪ প্রতিষ্ঠান
- আরএসআই বিশ্লেষণে সর্বোচ্চ সতর্ক সংকেত পাঁচ শেয়ারে
- কৃত্রিম চাপে শেয়ারবাজারে অস্থিরতা, সহসা পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা
- এক কোম্পারি অস্থিরতায় শেয়ারবাজারে তোলপাড়
- মুনাফা বাড়াতে নতুন পরিকল্পনা: ঘুরে দাঁড়াচ্ছে হাক্কানী পাল্প
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ইস্টার্ন হাউজিং
- পাঁচ কোম্পানির কারণে থমকে গেল শেয়ারবাজারের উত্থান