ঢাকা, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২

ইরানী ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত থেকে যেভাবে রক্ষা পায় যাত্রীবাহী বাংলাদেশি বিমান

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ জুন ১৮ ১১:০৫:২০
ইরানী ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত থেকে যেভাবে রক্ষা পায় যাত্রীবাহী বাংলাদেশি বিমান

রাত ২টা ১৫ মিনিট। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে উড্ডয়ন করে একটি যাত্রীবাহী বাংলাদেশি উড়োজাহাজ। বিমানটির ককপিটে ছিলেন ক্যাপ্টেন ইনাম তালুকদার ও কো-পাইলট রাফসান রিয়াদ।

ফ্লাইটটি নির্ধারিত রুটে ভারত হয়ে ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত অতিক্রম করে যখন বাহরাইনের আকাশসীমায় পৌঁছে তখন স্থানীয় সময় ভোর ৫টা। ৪০ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে নিচের পৃথিবী তখন এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্যপট। কিন্তু সেই সৌন্দর্য মুহূর্তেই এক ভয়ানক দৃশ্যে রূপ নেয়।

পারস্য উপসাগরের উপর দিয়ে উড়তে থাকা অবস্থায় ক্যাপ্টেন ইনাম হঠাৎ ইরানের আকাশে উজ্জ্বল আলোর ঝলকানি দেখতে পান। প্রথমে ভেবেছিলেন কোনো সামরিক মহড়া চলছে। কিন্তু পরক্ষণেই সারি সারি ক্ষেপণাস্ত্র আকাশ ছেঁড়ে পশ্চিম দিকে ধেয়ে যেতে দেখেন তারা। পরে জানা যায় ইসরায়েলের তেহরানে হামলার পাল্টা জবাবে ইরান এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছিল।

এই হঠাৎ বিস্ফোরণ ও রকেট নিক্ষেপের দৃশ্য দেখে কো-পাইলট রাফসানও হতবাক হয়ে যান। ককপিটে মুহূর্তেই চাপা উত্তেজনা। তাদের মাথায় তখন একটি প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছিল— যদি কোনো একটি ক্ষেপণাস্ত্র দিকভ্রষ্ট হয়ে বিমানের দিকে চলে আসে তবে কী হবে?

অভিজ্ঞ ক্যাপ্টেন ইনাম দ্রুত পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে ফ্লাইটের রুট পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন। খুবই সতর্কতার সঙ্গে তারা বিমানের গতিপথ বদলে ক্ষেপণাস্ত্র থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখেন। আগুনের গোলাগুলি থেকে কয়েক মাইল দূর দিয়ে পার হয়ে শেষ পর্যন্ত তারা নিরাপদে সৌদি আরবের রিয়াদ বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।

বিমানবন্দরে অবতরণের পর মোবাইল চালু করতেই ক্যাপ্টেন ইনাম বিভিন্ন সংবাদ শিরোনামে চোখ রাখেন— “ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা”। তিনি বলেন, “সেদিন শুধু একজন পাইলট হিসেবে দায়িত্ব পালন করিনি ইতিহাসের এক নাটকীয় মুহূর্তের প্রত্যক্ষ সাক্ষীও ছিলাম।”

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত