ঢাকা, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
ফু-ওয়াং ফুডসের আর্থিক অনিয়ম: বিএসইসির তদন্ত কমিটি গঠন

শেয়ারবাজারে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ফু-ওয়াং ফুডস লিমিটেড-এর ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে অসংগতি ও অনিয়মের অভিযোগে অনুসন্ধানে নেমেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ লক্ষ্যে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কমিশন। কমিটিকে ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানিটির প্রকাশিত আর্থিক বিবরণীতে একাধিক অসংগতি এবং অনিয়ম পাওয়া গেছে, যা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের পরিপন্থী। কমিশনের পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম জানান, এসব অনিয়ম খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত ১৭ মে জারি করা এক আদেশে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ রকিবুর রহমান, উপপরিচালক মো. শাহনেওয়াজ এবং ডিএসইর ডেপুটি ম্যানেজার বদরুল ইসলামকে।
তদন্তে ২০২৪ সালের অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন ছাড়াও ব্যবসায়িক কার্যক্রম, সম্পদ ও দায়, শেয়ারহোল্ডারদের মূলধন, নগদপ্রবাহ, এবং আর্থিক বিবরণীর আইএএস, আইএফআরএস ও আইএসএ-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যতা যাচাই করা হবে। পাশাপাশি কোম্পানিটির প্ল্যান্ট ও মেশিনারি, ভূমি, ভবন ইত্যাদির মালিকানা ও প্রকৃত অস্তিত্বও পর্যালোচনা করা হবে।
উল্লেখযোগ্য, টানা দুই অর্থবছরে (২০২৩ ও ২০২৪) শেয়ারহোল্ডারদের জন্য কোনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি ফু-ওয়াং ফুডস। সর্বশেষ ২০২২ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে মাত্র ০.৫০ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল কোম্পানিটি। আর ২০২৫ সালের মার্চ শেষে কোম্পানিটির ৯ মাসের শেয়ারপ্রতি লোকসান দাঁড়িয়েছে ৩৩ পয়সা, যা আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে।
এছাড়া, কোম্পানিটির বর্তমান ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিয়া মামুনের বিরুদ্ধে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও উঠেছে।
২০১৭ সালে এমারেল্ড অয়েল অধিগ্রহণের পর ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি ফু-ওয়াং ফুডসের ৭.৬১ শতাংশ শেয়ার কিনে নেয় মিনোরি বাংলাদেশ। তবে মালিকানা পরিবর্তনের পরও কোম্পানিটি আর্থিকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে ব্যর্থ হয়। উল্টো বিএসইসির নিয়ম অনুসারে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ হয়েছে নতুন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষও।
২০০০ সালে ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানি হিসেবে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ফু-ওয়াং ফুডসের পরিশোধিত মূলধন ১১০ কোটি ৮৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা এবং মোট শেয়ার সংখ্যা ১১ কোটি ৮ লাখ ৩৯ হাজার ২৮৪টি। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, উদ্যোক্তাদের হাতে রয়েছে মাত্র ৭.৮৫ শতাংশ শেয়ার, যার বিপরীতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৮২.৫৭ শতাংশ শেয়ার—যা কোম্পানিটির বর্তমান পরিস্থিতিকে আরও স্পর্শকাতর করে তুলেছে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বাতিল হচ্ছে ২০ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স, তালিকায় শেয়ারবাজারের ১৪টি
- ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ১.৪ বিলিয়ন ডলারের শেয়ার বিক্রির ঘোষণা
- শেয়ারবাজারের ৬৬ কোম্পানির প্রতি বিএসইসি’র কঠোর বার্তা
- গভীর রাতে ঢাবি শিবির সভাপতির ফেসবুক পোস্টে তোলপাড়
- বনানীতে ঢাবির সাবেক ছাত্রীর ম’রদেহ উদ্ধার
- শেয়ারবাজারের ১৮ ব্যাংককে ডিভিডেন্ড না দেওয়ার নির্দেশ
- ড. ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি, তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব
- ঢাবির পীরগাছা উপজেলা সংগঠনের নেতৃত্বে রবিউল ও সৈকত
- ড. ইউনূসকে ‘আক্রমণ’!
- শেয়ারবাজার ধসের দায় চাপছে বিএসইসি নেতৃত্বের ওপর
- জেড ক্যাটাগরি ও ন্যুনতম শেয়ারধারণে ব্যর্থ কোম্পানিতে বসছে স্বতন্ত্র পরিচালক
- ঈদের ছুটি নিয়ে নতুন প্রস্তাবনা
- মন্দার বাজারে আলো ছড়িয়েছে ২০ শেয়ার
- ফাঁস হলো হাসনাত-সার্জিসকে হ-ত্যার ভ'য়ঙ্কর পরিকল্পনা
- ‘বাংলাদেশের শেয়ারবাজার ডাকাতদের আড্ডা হয়ে গেছে’