ঢাকা, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

‘কেয়ামত পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারকে দেখতে চাই না’

২০২৫ মে ১৭ ২১:৩০:১১
‘কেয়ামত পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারকে দেখতে চাই না’

ডুয়া ডেস্ক: অন্তর্বর্তী সরকারের একমাত্র ম্যান্ডেট একটি সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করা বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অবাধ নির্বাচন করা। আমরা বলেছিলাম, যথেষ্ট হয়েছে। নির্বাচনমুখী জরুরি সংস্কার দরকার। আমরা পরামর্শ দিয়েছি, জরুরি সংস্কার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে। গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, কিন্তু মনে করবেন না কেয়ামত পর্যন্ত আপনাদের আমরা এই জায়গায় দেখতে চাইব।

শনিবার বিকালে খুলনা মহানগরীর ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ ময়দানে তারুণ্যের অধিকার প্রতিষ্ঠার এক বিশাল সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে উদ্দেশ করে কড়া সমালোচনা করেন সালাউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, “আপনি মনে করছেন, জনগণ আপনাকে অসীম ক্ষমতাবান করে দিয়েছে। তাই রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো পরামর্শের প্রয়োজন নেই বলে আপনি ভাবছেন। কিন্তু এমন ধারণা আপনার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে।”

তিনি আরও বলেন, “ইতিমধ্যে আপনার দুই উপদেষ্টা এমন কিছু উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা করছে, যা আপনার নিরপেক্ষ অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তাদের উদ্দেশ্য হয়তো এই অনির্বাচিত সরকারকে অনির্দিষ্টকালের জন্য টিকিয়ে রাখা। আপনার উদ্দেশ্য পরিষ্কার নয়, তবে আমরা তা জানতে আগ্রহী যদি একদিন আমাদের জনগণের দাবি বাস্তবায়নে এই অন্তর্বর্তী সরকারকে ঘেরাও করতে হয়, সেটি জাতির জন্য এক দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি হবে।

তিনি বলেন, আপনি কী চান এই নির্বাচনের জন্য আপনার সঙ্গে আমাদের কোনো দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হোক? এ দেশের জনগণ সংশয় প্রকাশ করুক? যমুনামুখী লংমার্চ করুক? আপনাকে হুঁশিয়ার করে দিতে চাই ইউনূস সাহেব। আপনি বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব, সম্মানের সঙ্গে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করুন ডিসেম্বরের মধ্যে। যেই কথা আপনি আমাদের দিয়েছিলেন সংস্কার এবং বিচার চলমান প্রক্রিয়া- দুটোই চালু থাকবে যারাই সরকারে আসুক। অনন্তকাল ধরে আপনি বিচার এবং সংস্কারের বাহানা দিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে কণ্টকাকীর্ণ করবেন না।

সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, আপনার উপদেষ্টা পরিষদে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর আছে, আমরা চিহ্নিত করে দিয়েছিলাম। এখন কিছু বিদেশি দোসর আছে, আমরা এখন তাদের অপসারণের কথা বলছি। আর যারা এনজিও উপদেষ্টা আছে, তারা আপনাকে পরামর্শ দিচ্ছে বাংলাদেশের জনগণের কথা শোনার প্রয়োজন নাই। তাদের আপনি অপসারণ করুন। না করলে সসম্মানে বিদায় নিতে পারবেন কি না আমি সংশয় প্রকাশ করছি। আপনার সরকারকে লোকজন বলছে এনসিপি মার্কা সরকার। আপনার সরকারে এনসিপির দুইজন প্রতিনিধি বিদ্যমান। তারা উপদেষ্টা এবং এনসিপি সংগঠন করে। আপনি নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে চাইলে তাদের পদত্যাগ করতে বলুন। পদত্যাগ না করলে আপনি বিদায় করুন।

প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, আপনার সরকারে একজন বিদেশি নাগরিককে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা করেছেন। আপনার কি সেই আক্কেল জ্ঞান নেই, একজন বিদেশি নাগরিকের কাছে এই দেশের সেনাবাহিনী কিভাবে নিরাপত্তা সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রদান করবে? তিনি রোহিঙ্গা, মানবিক করিডোরের নামে বাংলাদেশকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করতে চায়।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ সাত হাজারেরও বেশি মানুষকে অপহরণ, গুম ও নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বক্তারা। সর্বশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেও ১,৪০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও মানুষের সাংবিধানিক অধিকারকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করেছে। দেশজুড়ে লুটপাট চালিয়ে ব্যাংকিং খাতকেও ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডের ফলেই আওয়ামী লীগ নিজেদের রাজনৈতিক পরিণতি ডেকে এনেছে।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে