ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

নাম পরিবর্তন চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ভবনে তালা, অনিশ্চয়তায় গুচ্ছ পরীক্ষা

২০২৫ মে ০৬ ১২:০৩:৪৮
নাম পরিবর্তন চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ভবনে তালা, অনিশ্চয়তায় গুচ্ছ পরীক্ষা

ডুয়া ডেস্ক: গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অবস্থিত বিশেষায়িত সরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি’র নাম পরিবর্তনের দাবিতে আন্দোলনে উত্তাল শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়েও প্রতিক্রিয়া না পাওয়ায় এবার শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা মেরে পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন ঘোষণা করেছেন। এতে বন্ধ হয়ে গেছে ক্লাস, পরীক্ষা এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম। আসন্ন গুচ্ছভিত্তিক ‘এ’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষাও এখন অনিশ্চয়তার মুখে।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত গেজেটে ‘গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি’ নাম ব্যবহার করায় শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর থেকে তাঁরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে আসছেন—মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান, সংবাদ সম্মেলনসহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে।

কিন্তু কার্যকর প্রতিক্রিয়া না পাওয়ায় ২৪ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা রেলপথ অবরোধ করেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নুরুন আক্তার সেদিন তিন সপ্তাহের মধ্যে সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিলেও নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও অগ্রগতি না হওয়ায় ৮ এপ্রিল থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউনের ঘোষণা দেন।

পরবর্তীতে প্রধান উপদেষ্টার আইসিটি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব ১৩ এপ্রিল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে আশ্বস্ত করেন যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম থেকে ‘গাজীপুর’ এবং ‘ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি’ শব্দদ্বয় বাদ দেওয়া হবে। তিনি একে একটি ভুল ধারণার প্রতিফলন বলে উল্লেখ করেন। তাঁর এই আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা শাটডাউন সাময়িকভাবে শিথিল করে ‘সি’ ও ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা হতে দেন।

তবে নাম পরিবর্তনের কোনো আইনি পদক্ষেপ না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা পুনরায় শাটডাউন কার্যকর করেন এবং জানিয়ে দেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে।

আইওটি বিভাগের শিক্ষার্থী ফখরুল হাসান ফয়সাল বলেন, “আমাদের আন্দোলন শুরু হয় ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে। এরপর বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কার্যকর কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় আন্দোলন জোরদার করেছি। যদি দ্রুত সমাধান না হয় তাহলে গুচ্ছের ‘এ’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষাও হতে দেব না।”

সাইবার সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী তৌফিক ইমরোজ বলেন, “আমরা চাই দ্রুত বাস্তবসম্মত ও মর্যাদাপূর্ণ একটি নামকরণ হোক। দাবি মানা না হলে আন্দোলন চলবে।”

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আবু ইউসুফ বলেন, “আমি ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছি। ছাত্রদের দাবির যৌক্তিকতা মেনে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি। ভর্তি পরীক্ষা যথাসময়েই অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করছি।”

উল্লেখ্য, আগামী শুক্রবার ৯ মে সারাদেশে গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির তিন হাজারের বেশি শিক্ষার্থী অংশ নেবেন। তবে চলমান অচলাবস্থায় এসব শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা দিয়েছে চরম অনিশ্চয়তা।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

বিশ্ববিদ্যালয় এর সর্বশেষ খবর

বিশ্ববিদ্যালয় - এর সব খবর



রে