মানবিক করিডোরের সমালোচনা করে যা বললেন ফরহাদ মজহার

ডুয়া নিউজ: সম্প্রতি রাখাইনে ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে ব্যাপক আলোচনার-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এবার রাখাইনে কথিত মানবিক করিডর দেওয়ার বিরোধিতা করে কবি, চিন্তাবিদ ও দার্শনিক ফরহাদ মজহার বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে আরেকটি যুদ্ধে (প্রক্সি ওয়ার) জড়াতে চায়। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের পক্ষের একজন মানুষ হিসেবে বলব, এই ধরনের করিডর দেওয়া উচিত নয়।”

আজ শুক্রবার (২ মে) দুপুরে বগুড়া প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে ফরহাদ মজহার বলেন, “আপনি (অন্তর্বর্তী সরকার) যদি মনে করেন যে রাখাইনের ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করতে চাইছে আরেকটি যুদ্ধে (প্রক্সি ওয়ার) জড়াবে, আমি চাই না সেনাবাহিনী এ ধরনের যুদ্ধে জড়িয়ে যাক।”

আওয়ামী লীগের বিষয়ে তিনি বলেন, “দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট হতে পারে তবে তাদের সবাই খারাপ নয়। আইন করে দলটি নিষিদ্ধ করা যেতে পারে। কিন্তু আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করে বরং পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে পরস্পরের ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটাতে হবে।”

ফরহাদ মজহার আরও বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাত করার জন্য নির্বাচনের দাবি করা হচ্ছে। নির্বাচনের জন্য ক্রমাগতভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে। ফলে এই সরকারের পক্ষে টিকে থাকা সম্ভব নয়।”

সংস্কার কমিশন গঠনের সমালোচনা করে এই দার্শনিক বলেন, “নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে জনগণের অভিপ্রায় বুঝতে হবে। জনগণের অভিপ্রায় বুঝতে হলে জনগণের কাছে যেতে হবে। আমরা আশা করেছিলাম যে, গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা যে সরকার কায়েম করেছি, এই সরকার জনগণের কাছে যাবে। কিন্তু তারা এটা করলেন না। তারা ওপর থেকে অনেকগুলো কমিশন বসিয়ে দিলেন। কমিশনগুলো ঢাকা শহরে বসে বসে আলোচনা করল। তারা জনগণকে ডাকেনি, তাদের কথা শোনেনি। যদি জনগণকেই আমরা অস্বীকার করি, তাহলে কী করে আমরা সত্যিকার অর্থে নতুন যে বাংলাদেশ বানাতে চাই, সেটা কী করে সম্ভব?”

সংসদ নির্বাচনের আগে গণপরিষদ নির্বাচনের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরে কবি মজহার আরও বলেন, “যারা আইন বোঝে, রাজনীতি বোঝে, কিন্তু দল বোঝে না, তাদের আমরা গণপরিষদ নির্বাচনে পাঠাব। তারা বসে খসড়া গঠনতন্ত্রের বিষয়ে তর্ক-বিতর্কের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ একটি খসড়া গঠনতন্ত্র পাস করবে। তারপর গণভোট হবে। জনগণ তাতে সম্মতি দিলে তা নতুন গঠনতন্ত্র হিসেবে চূড়ান্ত হবে। সেই নতুন গঠনতন্ত্রের অধীনে নতুন সরকার গঠনের নির্বাচন হবে।”