ঢাকা, শনিবার, ৩ মে ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে ইসরায়েলিদের

২০২৫ মে ০৩ ১১:২৩:২৩
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে ইসরায়েলিদের

ডুয়া ডেস্ক: গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযান থামার কোনো লক্ষণ নেই। প্রতিদিনই হামলায় প্রাণ হারাচ্ছেন ফিলিস্তিনি নাগরিকরা। দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা অবরোধে মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে পুরো গাজা উপত্যকা। তবে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে ইসরায়েলিদের একটি বড় অংশ।

প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ বিরোধী আন্দোলন দিন দিন জোরালো হচ্ছে। সম্প্রতি ইসরায়েলের তিন বাহিনীর হাজার হাজার রিজার্ভ সেনা এক খোলা চিঠিতে নেতানিয়াহুকে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের প্রধান দাবি, গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করে হামাসের হাতে বন্দি থাকা ৫৯ জন ইসরায়েলিকে দ্রুত ফিরিয়ে আনা হোক।

প্রথমদিকে সরকারকে সমর্থন জানালেও দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও জিম্মিদের মুক্ত করতে না পারায় সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরক্তি ও হতাশা বাড়ছে। গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে কিছুটা আশা জাগলেও, ১৮ মার্চ সেই চুক্তি ভেঙে ফের হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা বিক্ষোভকে আরও বেগবান করেছে।

মোসাদের সাবেক প্রধান ড্যানি ইয়াতম বলেন, ‘নেতানিয়াহুর প্রধান লক্ষ্য নিজের রাজনৈতিক অবস্থান রক্ষা করা, বন্দিদের জীবন নয়। আমার প্রতিবাদ রাজনৈতিক নয় বরং জাতীয় উদ্বেগ থেকে।’

এপ্রিল মাসে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর প্রায় ১ হাজার রিজার্ভ সদস্য ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা এক খোলা চিঠিতে যুদ্ধের প্রতিবাদ জানান। তারা বলেন, এই যুদ্ধ কোনো লক্ষ্য অর্জন করছে না বরং বন্দিদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলছে। এরপর থেকে আরও ১২ হাজারের বেশি রিজার্ভ সদস্য সেই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী অনেকাংশেই রিজার্ভ সদস্যদের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু এখন তাদের অংশগ্রহণ কমে ৫০-৬০ শতাংশে নেমে এসেছে, যা বিশ্লেষকদের মতে ১৯৮২ সালের লেবানন যুদ্ধের পর সবচেয়ে ভয়াবহ সংকেত।

এক পদাতিক রিজার্ভ সদস্য ইয়াভ বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম আমি সঠিক কাজ করছি। কিন্তু এখন মনে হয় বিষয়টা হামাসকে হারানোর নয় বরং আমাদের দেশ রক্ষার প্রশ্ন।’

বামপন্থী পত্রিকা ‘হারেৎজ’-এ অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল আমিরাম লেভিন লিখেছেন, ‘যুদ্ধাপরাধে জড়িয়ে পড়া ও সেনাবাহিনীর নৈতিক ভিত্তি ধ্বংস হওয়ার ঝুঁকি আমাদের আর চুপ থাকতে দিচ্ছে না।’

অন্যদিকে নেতানিয়াহু এই আন্দোলনকে 'মিথ্যা প্রচারণা ও বিচ্ছিন্ন কিছু অবসরপ্রাপ্তদের কর্মকাণ্ড' বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে সর্বশেষ জনমত জরিপ বলছে, বেশিরভাগ ইসরায়েলিই মনে করেন, এখন সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার হওয়া উচিত জিম্মিদের মুক্ত করা।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে