ঢাকা, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ছাত্রত্ব বাতিলে জিএস পদও অবৈধ গোলাম রাব্বানীর, আলোচনায় রাশেদ খান

২০২৫ নভেম্বর ২৬ ১৯:৪৫:০০

ছাত্রত্ব বাতিলে জিএস পদও অবৈধ গোলাম রাব্বানীর, আলোচনায় রাশেদ খান

নিজস্ব প্রতিবেদক: নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর এমফিল প্রোগ্রামে ভর্তি যথাযথ প্রক্রিয়ায় না হওয়ায় তা বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। একইসঙ্গে ২০১৯ সালের নির্বাচনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) জিএস নির্বাচিত হওয়া অবৈধ ঘোষণার সুপারিশ করা হয়েছে। তাতে রাব্বানীর স্থলে ডাকসু-২০১৯ এর জিএস এর আলোচনায় আছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া রাশেদ খান।

আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। একাডেমিক কাউন্সিলের একাধিক সদস্য তা নিশ্চিত করেছে। অধিকতর তদন্ত শেষে জিএস পদ থেকেও বাদ দেওয়া হবে গোলাম রাব্বানীকে।

২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে জিএস প্রার্থী রাশেদ খাঁন এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মো. সানাউল্লাহ হক গত ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে একটি আবেদন করেন। তাতে অবৈধ উপায়ে ভর্তি হয়ে ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সব সদস্যের ডাকসুর সদস্যপদ বাতিলপূর্বক ভুক্তভোগী প্রার্থীদের মূল্যায়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ২২ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে ডাকসু ভবনে সংঘটিত নৃশংস হামলার ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের বিচারের দাবি জানানো হয়। এই তদন্ত কমিটিও তার ছাত্রত্ব বাতিলের সুপারিশ করেছিল।

একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন-২০১৯ অনুষ্ঠানের বিষয়ে কিছু প্রার্থী/প্যানেলের পক্ষ হতে ভোটদান, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়া, ভোট কারচুপি করা, ভোট দানের জন্য কৃত্রিম লাইন সৃষ্টি করা, ভোট কেন্দ্র দখল করা, ব্যালট পেপারে অবৈধভাবে সিল মারা, ভোট দানে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা, অবৈধ উপায়ে ভর্তি হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা, ব্যালট বাক্সসহ নানা কারচুপি ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। তবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন।

এতে আরও বলা হয়, প্রাপ্ত তথ্য প্রমাণাদি ও সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের সাক্ষাৎকার হতে প্রাপ্ত তথ্যসমূহ পর্যালোচনা করে কমিটির কাছে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে যে, ক্রিমিনোলজি বিভাগের (১) জনাব গোলাম রাব্বানী (২) মেহজাবিন হক ও (৩) ফাহমিদা তাসনিম অনি-এর এম.ফিল প্রোগ্রামে ভর্তি যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। অতএব উক্ত ভর্তি আইনের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ বাতিল বলে গণ্য হবে। এমতাবস্থায় বৈধ ছাত্রত্ব না থাকার কারণে গত ১১-৩-২০১৯ তারিখে অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে জনাব গোলাম রাব্বানীর প্রার্থীতা বৈধ ছিল না। সুতরাং এই কমিটি জনাব গোলাম রাব্বানীর জিএস নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টিকে অবৈধ ঘোষণার জন্য জোর সুপারিশ করে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চূড়ান্তভাবে গোলাম রাব্বানীর জিএস পদ অবৈধ ঘোষণা করা হলে সেই সময় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া রাশেদ খানকে ২০১৯-এর জিএস ঘোষণা করা হতে পারে। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।

এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দেন গণঅধিকার পরিষদের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। তিনি লিখেন, 'আলহামদুলিল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের গোলাম রাব্বানীর এমফিলের ছাত্রত্ব চূড়ান্তভাবে বাতিলের সিদ্ধান্ত। ছাত্রত্ব বাতিল হওয়ায় ঢাবি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী তার ডাকসু পদও অবৈধ। ২০১৯ সাল থেকে আমার সংগ্রাম চালু ছিলো। ২০২৫ সালে এসে ন্যায়বিচার পেলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অসংখ্য ধন্যবাদ।'

কেএমএ

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

বিশ্ববিদ্যালয় এর অন্যান্য সংবাদ