ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২

রপ্তানি কম, আমদানি বেশি: বাড়ছে বাণিজ্য ঘাটতি

২০২৫ নভেম্বর ১১ ২০:০৯:১৪

রপ্তানি কম, আমদানি বেশি: বাড়ছে বাণিজ্য ঘাটতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের চেয়ে আমদানিতে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বাণিজ্য ঘাটতি ক্রমেই বড় হচ্ছে। এতে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে চলতি হিসাবও নেতিবাচক অবস্থায় পড়েছে, যা অর্থনীতিতে নতুন চাপ তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা অর্থনীতিবিদদের। তাদের মতে, চলতি হিসাব ও বাণিজ্য ঘাটতি বাড়তে থাকলে টাকার মান ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ উভয়েই চাপে পড়তে পারে।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের চলতি হিসাবের ভারসাম্য (ব্যালান্স অব পেমেন্ট) সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বাংলাদেশ থেকে ১,১০৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে।

অপরদিকে একই সময়ে আমদানি হয়েছে ১,৬৮০ কোটি ডলার। ফলে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫৭১ কোটি ২০ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের ৪৬৪ কোটি ডলারের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে চলতি হিসাব উদ্বৃত্ত থাকলেও, এবার তা ৪ কোটি ৮০ লাখ ডলারের ঘাটতিতে পরিণত হয়েছে। তবে সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে উল্টো প্রবণতা দেখা গেছে গত বছর যেখানে ঘাটতি ছিল ১৪৮ কোটি ডলার, সেখানে এবার তা ৮৫ কোটি ৩০ লাখ ডলারের উদ্বৃত্তে পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জানিয়েছেন, রমজান উপলক্ষে ভোগ্যপণ্যের আমদানি আগেভাগে বেড়ে যাওয়ায় এই ঘাটতি তৈরি হয়েছে। ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয়ার্ধে রমজান শুরু হওয়ায় পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে আমদানির এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) আগে থেকেই খোলা হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, “সব আমদানি নেতিবাচক নয়; উৎপাদনশীল খাতের জন্য কাঁচামালও আমদানি হয়েছে, যা ভবিষ্যতে রপ্তানি বা স্থানীয় বিক্রিতে সহায়তা করবে। ফলে পরবর্তীতে চলতি হিসাব ভারসাম্যে ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ৭ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা আগের বছরের তুলনায় ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি। গত বছর এই সময় রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ৬ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার।

এ সময় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগেও (এফডিআই) ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। আগের অর্থবছরে প্রথম তিন মাসে বাংলাদেশে এফডিআই ছিল ১১ কোটি ৪০ লাখ ডলার, যা এবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ কোটি ৮০ লাখ ডলারে।

তবে দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ (পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট) বিপরীত প্রবণতায় রয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যে পরিমাণ অর্থ এনেছেন, তার চেয়ে বেশি তুলে নিয়েছেন। আগের অর্থবছরে নিট বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৫০ লাখ ডলার এবার তা ঋণাত্মক হয়ে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ২০ লাখ ডলার।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত