ঢাকা, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২

কর্মসূচি স্থগিতের সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়ালেন প্রাথমিক শিক্ষকরা

২০২৫ নভেম্বর ১০ ০৮:২২:২৯

কর্মসূচি স্থগিতের সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়ালেন প্রাথমিক শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি আশ্বাসে কর্মবিরতি স্থগিতের ঘোষণা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই ফের সিদ্ধান্ত বদলে নিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষক নেতারা। তারা জানিয়েছেন, চলমান কর্মবিরতি ও শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি দুটোই একসঙ্গে চলবে। একইসঙ্গে সোমবার বিকেল ৫টায় অর্থসচিব এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে শিক্ষক নেতাদের চূড়ান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সচিবালয়ে সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে শিক্ষক নেতারা প্রথমে কর্মবিরতি স্থগিতের ঘোষণা দেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা।

বৈঠকে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দিন মাসুদ জানান, সহকারী শিক্ষকদের তিনটি প্রধান দাবি উপস্থাপন করা হয় বর্তমান ১৩তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ, চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেডের জটিলতা নিরসন এবং সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি। আলোচনায় মন্ত্রণালয় আশ্বাস দেয়, এসব বিষয় দ্রুত অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে এবং সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এই আশ্বাসের পর শিক্ষক নেতারা কর্মবিরতি স্থগিতের ঘোষণা দেন, তবে শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি বজায় রাখেন।

কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরই অবস্থানরত শিক্ষক ও নেতাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। শহীদ মিনারে উপস্থিত আন্দোলনকারীরা জানান, কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি এবং কর্মবিরতি চলবে।

রোববার দিবাগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটে সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন সমন্বয় পরিষদের সমন্বয়ক মু. মাহবুবুর রহমান বলেন, “আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। কেউ কর্মবিরতি স্থগিতের ভুল বার্তা প্রচার করে থাকতে পারেন।” তিনি আরও জানান, “আগামীকাল লক্ষাধিক শিক্ষক কেন্দ্রীয় অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। আমরা ঐক্যবদ্ধ ও শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি।”

এর আগে শনিবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে ‘কলম বিসর্জন’ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার সময় পুলিশ টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে বহু শিক্ষক আহত হন। পরে আন্দোলনকারীরা শহীদ মিনারে অবস্থান নেন এবং পরদিন থেকে সারাদেশের প্রায় ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু হয়। এতে প্রায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার শিক্ষক পাঠদান থেকে বিরত থাকেন।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৭টি। কর্মবিরতি চলাকালীন এসব বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সরকার প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১১তম থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করলেও সহকারী শিক্ষকদের গ্রেড ১৩তম থেকে ১২তম করার প্রস্তাব দেয়। এতে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে শিক্ষকরা আন্দোলনে নামেন, যা এখনো অব্যাহত।

ইএইচপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত