ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২

অন্ধকার যুগে আলো ছড়ানো এক মহামানব—রাসুলুল্লাহ (সা.)

২০২৫ অক্টোবর ১৪ ১৮:৪৫:৩৮

অন্ধকার যুগে আলো ছড়ানো এক মহামানব—রাসুলুল্লাহ (সা.)

ডুয়া ডেস্ক::মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন মানবীয় গুণাবলির পূর্ণাঙ্গ প্রতিচ্ছবি—যে গুণগুলো জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে বিকশিত হয়, সেসবের সবটিই তাঁর জীবনে পরিপূর্ণভাবে প্রকাশ পেয়েছিল। তিনি ছিলেন চিন্তা, আচরণ, ন্যায়পরায়ণতা ও প্রজ্ঞার অনন্য দৃষ্টান্ত। আল্লাহ তাঁকে দান করেছিলেন সৌন্দর্যমণ্ডিত ব্যক্তিত্ব, তীক্ষ্ণ বুদ্ধি, গভীর জ্ঞান ও উদ্দেশ্য পূরণের সাফল্য। দীর্ঘ সময় নীরব ধ্যানে নিমগ্ন থেকে তিনি বিষয়গুলোর গভীরে প্রবেশ করতেন, বিচক্ষণ চিন্তা ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সত্য ও ন্যায়ের সন্ধান করতেন।

তৎকালীন অশান্ত ও অন্যায়প্রবণ সমাজে থেকেও নবী করিম (সা.) ছিলেন সম্পূর্ণ পবিত্র ও নৈতিকতার প্রতীক। চারপাশে মদ, জুয়া, মূর্তিপূজা ও অসংযম ছড়িয়ে থাকলেও তিনি কখনো এসবের স্পর্শ পর্যন্ত করেননি। এমনকি দেব-দেবীর নামে জবাইকৃত পশুর গোশতও তিনি গ্রহণ করেননি। জীবনের প্রথম থেকেই তিনি জাহেলি সমাজের ভ্রান্ত উপাসনা ও কুসংস্কারের প্রতি ঘৃণা পোষণ করতেন এবং মূর্তিপূজাকে মানবতার জন্য সবচেয়ে অপমানজনক বলে মনে করতেন।

আল্লাহ তাআলা নবী করিম (সা.)-কে বিশেষ অনুগ্রহ ও তত্ত্বাবধানে রেখেছিলেন। যখনই কোনো পার্থিব আকর্ষণ বা প্রলোভন তাঁর সামনে এসেছে, তখনই আল্লাহর নিয়ন্ত্রণ তাঁকে রক্ষা করেছে। নবী (সা.) নিজেই একবার বলেছিলেন, জাহেলিয়াত যুগে মানুষ যা করত, তা করতে তাঁর মনে কেবল দুইবার ইচ্ছা জেগেছিল—কিন্তু উভয়বারই আল্লাহ তাঁকে তা থেকে বিরত রেখেছেন। একবার এক বন্ধুর কাছে ছাগল রেখে তিনি মক্কায় এক অনুষ্ঠান দেখতে গিয়েছিলেন, কিন্তু বাদ্যযন্ত্রের শব্দ শুনে বসতেই আল্লাহ তাঁর শ্রবণশক্তি বন্ধ করে দেন, তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে সূর্যের তাপে জেগে ওঠার পর তিনি ফিরে আসেন। এমন ঘটনাই দ্বিতীয়বারও ঘটেছিল, এরপর আর কখনো তাঁর মধ্যে ওই প্রবৃত্তি জাগেনি।

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্র ছিল সর্বোত্তম, আচরণ ছিল সবচেয়ে আকর্ষণীয়, আর উদারতা ছিল সর্বযুগের মানুষের জন্য অনুসরণযোগ্য। তিনি কখনো মিথ্যা বলেননি, প্রতারণা করেননি। তাঁর সত্যবাদিতা ও বিশ্বাসযোগ্যতার জন্যই আরববাসী তাঁকে “আল-আমিন”—অর্থাৎ বিশ্বস্ত বলে অভিহিত করত।

(উৎস: আর-রাহিকুল মাখতুম)

ডুয়া/নয়ন

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত