ঢাকা, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫, ২৫ আশ্বিন ১৪৩২

অবৈধ নিয়ন্ত্রণ মুক্ত চায় ইসলামী ব্যাংক, মালিকানা ফেরতের দাবি

২০২৫ অক্টোবর ১০ ২০:৪৯:২২

অবৈধ নিয়ন্ত্রণ মুক্ত চায় ইসলামী ব্যাংক, মালিকানা ফেরতের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ইসলামী ব্যাংকের ৮২ শতাংশ শেয়ার এখনো এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে—যা বাংলাদেশ ব্যাংক জব্দ করলেও এখন পর্যন্ত লিকুইডেশন করে ব্যাংকের দায় পরিশোধে ব্যবহার করা হয়নি।

সচেতন ব্যবসায়ী ফোরাম অভিযোগ করেছে, এভাবে দেশের বৃহত্তম বেসরকারি ব্যাংকটি এখনো “অবৈধ নিয়ন্ত্রণে” রয়ে গেছে, যা ব্যাংকিং খাতের সুশাসনের জন্য হুমকি।

বৃহস্পতিবার (০৯ অক্টোবর) ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি তোলেন সংগঠনের নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সচেতন ব্যবসায়ী ফোরামের সদস্যসচিব মো. মুস্তাফিজুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন বারভিডার সভাপতি আবদুল হক, বাংলাদেশ শেয়ারবাজার বিনিয়োগকারী সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি আ. ন. ম. আতাউল্লাহ নাঈম, নিউ অটো গ্যালারির স্বত্বাধিকারী নজরুল ইসলাম আলম এবং উদ্যোক্তা আল মামুন প্রমুখ।

“২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি একটি বিশেষ বাহিনী ব্যবহার করে ইসলামী ব্যাংক দখল করা হয়। পরে শেয়ারবাজার কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণের শর্ত আরোপ করে প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নেওয়া হয়—যা কোম্পানি আইন ও সংবিধানে নেই।”

তিনি অভিযোগ করেন, সরকার, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসি-কে একাধিকবার অবহিত করা হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। “আমরা দাবি জানাচ্ছি—ব্যাংকের শেয়ার প্রকৃত মালিকদের কাছে ফেরত দিতে হবে,” তিনি বলেন।

সংগঠনটির দাবি, ইসলামী ব্যাংকের ৮২ শতাংশ শেয়ার এখনো এস আলমের দখলে, যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে সেগুলো জব্দ করেছে।

মুস্তাফিজুর রহমান প্রশ্ন তোলেন, “যখন শেয়ার জব্দ করা হয়েছে, তখন তা লিকুইডেশন করে ব্যাংকের দায় শোধ করা হচ্ছে না কেন? এটা বোঝা যাচ্ছে না।”

তার মতে, বাংলাদেশ ব্যাংক যদি সত্যিই ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে চায়, তবে অবিলম্বে এস আলমের শেয়ার বিক্রি করে বা লিকুইডেশন প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত।

সচেতন ব্যবসায়ী ফোরামের সদস্যসচিব আরও বলেন, “এস আলম ব্যাংক দখল করে নিজের গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলোর এলসি অনুমোদন দিত, অন্য প্রতিষ্ঠানের এলসি বন্ধ করে দেয়। এভাবে টাকা পাচার করে ব্যাংককে কৃত্রিম সংকটে ফেলে।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ব্যাংক দখলের পর ৮,৩৪০ জনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়, যাদের অনেকেই নাকি ভুয়া সার্টিফিকেট ব্যবহার করেছেন। এর ফলে ব্যাংক বছরে প্রায় ১,৫০০ কোটি টাকার ক্ষতি করছে—৭ বছরে যা ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ইসলামী ব্যাংকের অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অবিলম্বে বহিষ্কার করতে হবে।তাদের মতে, ব্যাংকের সক্ষমতা পুনর্গঠনের জন্য নতুন করে মেধাভিত্তিক নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করতে হবে এবং সারা দেশ থেকে যোগ্য প্রার্থীদের বাছাই করা উচিত।

বক্তারা আরও বলেন, ইসলামী ব্যাংক দেশের ব্যাংকিং খাতে একসময় আস্থার প্রতীক ছিল। এখন সেই ব্যাংককে রাজনৈতিক ও গোষ্ঠীগত স্বার্থের বলি হতে দেওয়া হলে পুরো আর্থিক খাত ঝুঁকিতে পড়বে।

এএসএম/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

আজকের (১০ অক্টোবর) মুদ্রা বিনিময় হার

আজকের (১০ অক্টোবর) মুদ্রা বিনিময় হার

ডুয়া ডেস্ক: বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে বিদেশি মুদ্রার সঙ্গে টাকার বিনিময় হারও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রতিদিনের লেনদেনে ব্যবসায়ী... বিস্তারিত