ঢাকা, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭ ভাদ্র ১৪৩২
শেয়ারবাজারে চার ভাগের এক ভাগ শেয়ারই ১০ টাকার নিচে

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের শেয়ারবাজারের দুর্বল চিত্র আবারও স্পষ্ট হলো এক নতুন পরিসংখ্যানে। প্রধান শেয়ারবাজর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত প্রতি চারটি কোম্পানির একটির শেয়ার এখন ফেইস ভ্যালু বা অভিহিত মূল্যের নিচে লেনদেন হচ্ছে। এর মূল কারণ হলো কোম্পানিগুলোর দুর্বল আর্থিক অবস্থা এবং ধারাবাহিক ব্যর্থতা। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিপুল সংখ্যক নিম্ন-মূল্যের শেয়ার পুরো বাজারের আকর্ষণ কমিয়ে দিচ্ছে এবং দেশি-বিদেশি উভয় ধরনের বিনিয়োগকারীকে নিরুৎসাহিত করছে।
ফেইস ভ্যালু হলো একটি শেয়ার বা মিউচুয়াল ফান্ডের নির্ধারিত সর্বনিম্ন মূল্য, যা বাংলাদেশে সব শেয়ারের জন্য ১০ টাকা। ডিএসইতে রবিবার (৩১ আগস্ট) ৩৯৭টি শেয়ারের লেনদেন হয়েছে, যার মধ্যে ৯৮টিই ১০ টাকার নিচে হাতবদল হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক শেয়ারের দাম ছিল ৫ টাকার নিচে।
খারাপ ঋণ ও দুর্বল কোম্পানির ভার
নিম্ন-মূল্যের এই কোম্পানিগুলোর একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো, যা খেলাপি ঋণের বোঝায় জর্জরিত। এর বাইরে রয়েছে বিনিয়োগকারীদের আস্থা হারানো মিউচুয়াল ফান্ড এবং দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে থাকা বস্ত্র খাতের ১৭টি কোম্পানি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ রেকর্ড ৪.২০ লাখ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা মোট ঋণের প্রায় এক-চতুর্থাংশ। এর ফলে ১৮টি বাণিজ্যিক ব্যাংক তাদের দুর্বল আর্থিক অবস্থার কারণে বিনিয়োগকারীদের কোনো ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি।
বড় হচ্ছে ভালো-খারাপের ব্যবধান
বাজারের এমন পরিস্থিতিতে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এত বিপুল সংখ্যক কোম্পানির শেয়ারের দাম কম থাকার অর্থ হলো তাদের পারফরম্যান্স ভালো নয়, তাই এসব শেয়ারের চাহিদা কম। এটি বাজারে ভালো স্টকের ঘাটতিকেই নির্দেশ করে। তাঁরা বলছেন, ডিএসইতে প্রায় ৪০০ কোম্পানি তালিকাভুক্ত থাকলেও বিদেশি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে মাত্র ৫০ থেকে ৬০টি কোম্পানিই বিনিয়োগের যোগ্য বলে বিবেচিত হয়।
অন্যদিকে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যে বাজারে এত বেশি সংখ্যক জাঙ্ক স্টক থাকে, তা বিদেশি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে কখনই আকর্ষণীয় হতে পারে না। তারা সরকারের প্রতি শক্তিশালী কোম্পানিগুলোকে বাজারে নিয়ে আসার আহ্বান জানান।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার সক্রিয় ভূমিকা
বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যেসব কোম্পানির পর্যাপ্ত সম্পদ আছে, সেগুলোকে একীভূতকরণ বা অধিগ্রহণের মাধ্যমে পুনরুদ্ধার করা যেতে পারে। তবে সামগ্রিকভাবে বাজারের এই নিম্নগতি থেকে মুক্তি পেতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে, নয়তো সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে পাওয়া কঠিন হবে।
এসকে/
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- সম্ভাবনার নতুন দিগন্তে শেয়ারবাজারের খান ব্রাদার্স
- বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে শেয়ারবাজারের ১১ কোম্পানিতে
- মূলধন ঘাটতিতে দুই ব্রোকারেজ হাউজ, ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
- চলতি বছর শেয়ারবাজারে আসছে রাষ্ট্রায়াত্ব দুই প্রতিষ্ঠান
- মার্জারের সাফল্যে উজ্জ্বল ফার কেমিক্যাল
- সাকিবের মোনার্কসহ ৮ ব্রোকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
- তালিকাভুক্ত কোম্পানির ১৫ লাখ শেয়ার কেনার ঘোষণা
- বিমা আইন সংস্কার: বিনিয়োগ ও আস্থায় নতুন দিগন্ত
- শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর প্রথম ‘নো ডিভিডেন্ড’
- শেয়ারবাজারে রেকর্ড: বছরের সর্বোচ্চ দামে ১৭ কোম্পানি
- তিন শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি, ডিএসইর সতর্কবার্তা
- ডেনিম উৎপাদন বাড়াতে এভিন্স টেক্সটাইলসের বড় পরিকল্পনা
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ৫ কোম্পানির ডিভিডেন্ড-ইপিএস
- ব্যাখ্যা শুনতে ডাকা হচ্ছে শেয়ারবাজারের পাঁচ ব্যাংককে
- তিন কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা