ঢাকা, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২

‘হ্যালো ভাই, চাকরি লাগবে?’ — তারপরই শুরু হতো ব্ল্যাকমেইল

২০২৫ আগস্ট ২২ ১৪:৩৮:২৮

‘হ্যালো ভাই, চাকরি লাগবে?’ — তারপরই শুরু হতো ব্ল্যাকমেইল

চাকরির লোভ দেখিয়ে যুবকদের ‘হানি ট্র্যাপ’-এর ফাঁদে ফেলে অর্থ আত্মসাৎ করছিল একটি প্রতারক চক্র। এমন অভিযোগে রাজধানীর মিরপুর থেকে এই চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের মিরপুর বিভাগ। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাতে মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় একাধিক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—মো. বিপ্লব খান (৩৩), ফারিন তানহা তোফা (২৯), সম্পা আক্তার (২৪), শাহ মো. জোবায়ের অভিক (২৩), মো. আল-মাসুদ (৩২), মোছা. মনিকা আক্তার (১৮) ও মো. আবু সুফিয়ান।

ডিবির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. সোনাহর আলী শরীফ জানান, অভিযানে ভুক্তভোগীদের ব্যবহৃত একটি রেডমি ফোন ও আরও তিনটি স্মার্টফোন উদ্ধার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা প্রতারণার বিভিন্ন কৌশলের কথা স্বীকার করেছে।

অভিযোগ অনুযায়ী, চক্রটি চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রথমে ভুয়া প্রলোভন তৈরি করত। পরে চাকরিপ্রার্থীদের মিরপুর বা আশপাশের বাসায় ডেকে নেওয়া হতো। সেখানে আটকে রেখে মারধর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় করা হতো। কখনো নারীদের সামনে বসিয়ে ভিডিও ধারণ করে তা ভাইরাল করার হুমকিও দেওয়া হতো।

সম্প্রতি শরীয়তপুরের মো. রহমান ও বান্দরবানের মো. মনির উদ্দিন এমনই একটি ফাঁদে পড়েন। মিরপুরের এক বাসায় তাঁদের আটকে রেখে ৬৬ হাজার টাকা আদায় করে চক্রটি। ছিনিয়ে নেয় মোবাইল ফোনও।

ডিবি জানায়, প্রতারণার এ চক্রটি শুধু রাজধানী নয়—বরিশাল, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লাতেও সক্রিয় ছিল। তারা ফেসবুক, ইমো, টেলিগ্রামের মতো মাধ্যমে বন্ধুত্ব, সম্পর্ক বা চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তরুণদের ফাঁদে ফেলত। গ্রামীণ অঞ্চলের যুবকেরা ছিল তাদের প্রধান টার্গেট।

ডিবি কর্মকর্তা সোনাহর আলী শরীফ জানান, গ্রেপ্তারদের সঙ্গে আরও কয়েকজনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। মূল হোতাদের শনাক্তে কাজ চলছে। ভুক্তভোগীদের অনেকেই সম্মানহানির ভয়ে অভিযোগ করতেন না, এই সুযোগেই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা চালিয়ে আসছিল। চক্রটির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

পুলিশ সবাইকে এমন প্রতারণা থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত