ঢাকা, রবিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২
বড় গ্যাসক্ষেত্রগুলোর উৎপাদন হ্রাস, জ্বালানি নিয়ে বাড়ছে শঙ্কা
.jpg)
দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, কারণ প্রধান গ্যাসক্ষেত্রগুলোর উৎপাদন আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে দৈনিক প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন প্রায় ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট কমে গেছে, যা চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ব্যবধানকে আরও প্রশস্ত করেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত সরকারের দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধানের বদলে আমদানিনির্ভর নীতির কারণেই আজ এই সংকটজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৫ হাজার মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি হলেও এলএনজিসহ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে মাত্র ২ হাজার ৮৩২ মিলিয়ন ঘনফুট।
উৎপাদনে ধসের চিত্র:
দেশের বড় গ্যাসক্ষেত্রগুলোর উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। পেট্রোবাংলার হিসাব বলছে:
তিতাস: দেশের অন্যতম বৃহৎ এই গ্যাসফিল্ডের উৎপাদন গত বছরের ৩৭৮ মিলিয়ন ঘনফুট থেকে কমে ৩১৯ মিলিয়ন ঘনফুটে দাঁড়িয়েছে।
বিবিয়ানা: শেভরনের মালিকানাধীন এই গ্যাসক্ষেত্রটির উৎপাদন ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট থেকে কমে ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুটে নেমে এসেছে।
অন্যান্য ক্ষেত্র: হবিগঞ্জ গ্যাসফিল্ডের উৎপাদন ১১৬ থেকে ৯০ মিলিয়ন ঘনফুটে এবং রশীদপুর গ্যাসফিল্ডের উৎপাদন ৬৯ থেকে ৬১ মিলিয়ন ঘনফুটে নেমেছে।
উৎপাদন ঘাটতি মেটাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি বাড়িয়েছে। যেখানে গত বছর দৈনিক ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হতো, চলতি বছর তা বাড়িয়ে ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত করা হয়েছে। এছাড়া, পুরোনো কূপগুলোর উৎপাদন বাড়াতে কম্প্রেসার স্থাপনের মতো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এগুলো তাৎক্ষণিক সমাধান মাত্র। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ইজাজ হোসেনের মতে, "বিগত সরকার অনুসন্ধানে জোর না দিয়ে আমদানিতে জোর দিয়েছিল, যা একটি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।" তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১০০টি নতুন কূপ খননের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও মনে করিয়ে দেন যে, একটি নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার থেকে উৎপাদনে আসতে প্রায় তিন বছর সময় লাগে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে অনুসন্ধান চলছে, তবে এটি সময়সাপেক্ষ। তিনি বলেন, "আমাদের সময়ে হয়তো এর সুফল পাওয়া যাবে না। তাই আমরা ভবিষ্যৎ সরকারের জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করে যাব।"
বড় গ্যাসক্ষেত্রগুলোর মজুত কমে যাওয়ায় এবং নতুন উৎস থেকে গ্যাস উত্তোলনে দীর্ঘ সময় লাগার কারণে দেশের জ্বালানি পরিস্থিতি বড় ধরনের বিপর্যয়ের ঝুঁকিতে রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- হলে ঢাবি ছাত্রীর হঠাৎ অসুস্থতা, হাসপাতালে মৃত্যু
- মার্জিন ঋণে মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ডে বিনিয়োগ করা যাবে না
- ‘পদত্যাগ করতে পারেন ড. ইউনূস’
- শেয়ারবাজারের ৬ ব্যাংকের রেকর্ড মুনাফা, ৫ ব্যাংকের লোকসান
- বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পছন্দের শীর্ষে পাঁচ শেয়ার
- ঢাবির হলে 'গাঁ’জার আসর', চার শিক্ষার্থীকে আটক
- ১২ আগস্ট : শেয়ারবাজারের সেরা ৯ খবর
- মার্জিন ঋণ নিয়ে গুজব: ফের অস্থির শেয়ারবাজার
- ডিএসইর সতর্কবার্তার জালে দুর্বল দুই কোম্পানির শেয়ার
- দুই কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা জারি
- অস্বাভাবিক শেয়ার দাম: ডিএসইর সতর্কবার্তা জারি
- বেক্সিমকো-বেক্সিমকো ফার্মাসহ চার ব্যক্তি-এক প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা-সতর্ক
- সামিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র কিনছে আরব আমিরাতের কোম্পানি
- বেসরকারি হাসপাতাল মালিকদের নতুন কমিটির অভিষেক শনিবার
- বিসিএসে স্বতন্ত্র বিভাগে অন্য বিভাগ অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ