ঢাকা, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২
সাত কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের পুঁজির বড় অংশ উধাও

শেয়ারবাজারে চলমান পতন বিনিয়োগকারীদের জন্য এক দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। টানা দরপতনের ফলে অনেকে তাদের সব পুঁজি হারিয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরতে বাধ্য হয়েছেন। যারা এখনও বাজারে টিকে আছেন, তাদের অধিকাংশই বড় লোকসানের বোঝা নিয়ে ধুঁকছেন। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত এক মাসে সাতটি কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা এমন এক ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েছেন, যেখানে তাদের বিনিয়োগের ১৮ শতাংশ থেকে ২৪ শতাংশ পর্যন্ত পুঁজি উধাও হয়ে গেছে।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে-উত্তরা ফাইন্যান্স, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, বে-লিজিং, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, এনআরবিসি ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া ও ইসলামী ফাইন্যান্স।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে উত্তরা ফাইন্যান্সের শেয়ারের দাম কমেছে ২৩.৮৫ শতাংশ, যা বিনিয়োগকারীদের একটি বিশাল অংশ গিলে খেয়েছে। দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের দরপতনের হার ছিল ১৯.৫৩ শতাংশ, যা ছোট বিনিয়োগকারীদের জন্য এক বড় ধাক্কা। বে-লিজিংয়ের শেয়ার মূল্য কমেছে ১৮.৮৭ শতাংশ, যা তাদের আর্থিক স্থিতিশীলতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে।
ব্যাংক খাতের প্রতিষ্ঠান আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক ১৮.৬৯ শতাংশ এবং এনআরবিসি ব্যাংক ১৮.৬৭ শতাংশ দরপতনের শিকার হয়েছে, যা ব্যাংক খাতের বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও হতাশা ছড়িয়ে দিয়েছে। একইভাবে, ব্যাংক এশিয়ার শেয়ারের দাম ১৮.৪৮ শতাংশ কমেছে এবং ইসলামী ফাইন্যান্সের বিনিয়োগকারীরা ১৭.৭৮ শতাংশ পুঁজি হারিয়েছেন।
এই পরিসংখ্যানটি কেবল সংখ্যা নয়, এগুলো হাজার হাজার বিনিয়োগকারীর মুখের হাসি কেড়ে নেওয়া এবং তাদের ভবিষ্যতের স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার করুণ চিত্র। যারা স্বল্প বা মধ্যমেয়াদী লাভের আশায় শেয়ারবাজারে এসেছিলেন, তাদের অনেকেই এখন ঋণের জালে জড়িয়ে পড়েছেন। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা, যারা অনেক আশা নিয়ে সামান্য সঞ্চয় বাজারে খাটিয়েছিলেন, তাদের অনেকেরই এখন "খালি হাতে বাড়ি ফেরা" ছাড়া কোনো উপায় নেই। পুঁজি হারানোর এই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তাদের মনোবল ভেঙে দিয়েছে এবং নতুন করে বিনিয়োগের ঝুঁকি নিতে তাদের আত্মবিশ্বাস তলানিতে ঠেকেছে।
শেয়ারবাজারের এই অস্থিরতা কেবল বিনিয়োগকারীদের ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, এটি সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতির ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বাজারের প্রতি আস্থাহীনতা বাড়ছে, যা নতুন বিনিয়োগ প্রবাহকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করছে। এই পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং বাজার সংশ্লিষ্টদের দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে এবং তাদের ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে দিতে শুধু পরিকল্পনা প্রণয়নই যথেষ্ট নয়, সেগুলোর কার্যকর বাস্তবায়ন প্রয়োজন। অন্যথায়, এই ক্ষতির বোঝা আরও অনেক বিনিয়োগকারীর কাঁধে চাপবে, যা দেশের আর্থিক খাতকে আরও দুর্বল করে দিতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য কঠোর পদক্ষেপ এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরির বিকল্প নেই।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বদলে গেছে ধারণা, বিস্মিত ইসরায়েল
- শেয়ারবাজারের শর্ত পূরণে ৬০ কোম্পানিকে বিএসইসির আল্টিমেটাম
- ‘বিপর্যয় থেকে বিশ্ব মাত্র কয়েক মিনিট দূরে’
- নীলক্ষেত হোস্টেল থেকে ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থীর ম’রদেহ উদ্ধার
- প্রথম প্রান্তিকে মুনাফা থেকে লোকসানে গেল চার ব্যাংক
- ইরানকে হা-ম-লা বন্ধে প্রস্তাব
- ঢাবিতে হটাৎ ছাত্রলীগের বিক্ষোভ, ককটেল বি-স্ফো-র-ণ
- কারাগারে ফাঁসিতে ঝুললেন সেই অস্ত্রধারী আ’লীগ নেতা
- সাত কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের পুঁজির বড় অংশ উধাও
- দুর্বল ১৫ আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিলুপ্তির চিন্তাভাবনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক
- একাধিক মিসাইল ছুঁড়েছে উত্তর কোরিয়া
- দুই বড় খবরের মধ্যে আজ খুলছে দেশের শেয়ারবাজার
- ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাবিতে ক্লাস ছুটি কতদিন, যা জানা গেল
- লন্ডন ছাড়ছেন তারেক রহমান
- মোবাইলে কল এলেই ইন্টারনেট বন্ধ? এক মিনিটেই সমাধান!