ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২
আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশে তিন মাস সময় চেয়েছে ন্যাশনাল টি

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়াত্ব প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল টি কোম্পানি লিমিটেড ব্যবস্থাপনা সংকট, শ্রমিক অসন্তোষ এবং কর্মী সংকটের কারণে চলতি অর্থবছরের নয় মাসের (মার্চ পর্যন্ত) আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য তিন মাসের সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে।
কোম্পানির কর্মকর্তাদের মতে, ন্যাশনাল টি এপ্রিলের শেষে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছিল। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছ থেকে এখনও কোন প্রতিউত্তর পায়নি।
তালিকাভুক্তির নিয়ম অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে ত্রৈমাসিক শেষ হওয়ার এক মাসের মধ্যে তাদের অনিরীক্ষিত ত্রৈমাসিক আর্থিক প্রতিবেদন জমা দিতে হয়। এটি পালনে ব্যর্থ হলে প্রতিদিন ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা হয়।
কোম্পানিটির তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের সময়সীমা এপ্রিলে শেষ হয়েছে। কিন্তু এখনো তা প্রকাশ করতে পারেনি।
ন্যাশনাল টি-এর একজন কর্মকর্তা বলেছেন, গত বছর রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর থেকে অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা তাদের আর্থিক প্রতিবেদন তৈরিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, গত বছর রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর থেকে কোম্পানিটি গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। পূর্ববর্তী সরকার কর্তৃক নিযুক্ত বেশ কয়েকজন বোর্ড সদস্যকে অপসারণ করা হয়েছে এবং কোম্পানি কর্মীদের বেতন পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে। এর ফলে চা বাগানগুলিতে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, যদিও এখন ব্যবসায়িক কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে। বর্তমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ আর্থিক বিবরণী চূড়ান্ত করতে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে।
বিএসইসি-কে পাঠানো চিঠিতে ন্যাশনাল টি বিলম্বের পেছনে তিনটি প্রধান কারণ উল্লেখ করেছে-
প্রথমত, ন্যাশনাল টি জুলাই ও আগস্ট ২০২৪ এর রাজনৈতিক অস্থিরতার কথা উল্লেখ করেছে, যা মন্ত্রণালয় এবং রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিতে, যেমন শিল্প মন্ত্রণালয়, কৃষি ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ব্যাংক বড় ধরনের প্রশাসনিক রদবদল ঘটিয়েছে। এই বিঘ্নগুলি মজুরি বিতরণে প্রভাব ফেলেছিল, শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি করেছিল এবং একাধিক চা বাগানে হিসাবরক্ষণ কার্যক্রমে বিলম্ব ঘটিয়েছিল।
দ্বিতীয়ত, গত বছরের আগস্টে চারজন স্বাধীন পরিচালক এবং দুজন নির্বাচিত পরিচালকের পদত্যাগের ফলে বোর্ড এবং এর কমিটিগুলি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিল, যা মূল তদারকি কার্যক্রমে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
তৃতীয়ত, কোম্পানির অর্থ ও হিসাব বিভাগ বর্তমানে মাত্র একজন সহকারী ব্যবস্থাপক এবং তিনজন অফিস সহকারী দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। এই কর্মী সংকট দৈনন্দিন কার্যক্রম এবং বছর শেষের আর্থিক উভয় কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করেছে।
এসব বাধা সত্ত্বেও কোম্পানিটি জানিয়েছে, তারা সম্প্রতি তাদের বোর্ড পুনর্গঠন করেছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, “এটি উল্লেখ করার মতো যে কোম্পানি সম্প্রতি একটি পূর্ণাঙ্গ বোর্ড গঠন করেছে। বোর্ডের একজন নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন এবং তিনি ইতিমধ্যে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। দুটি শূন্য নির্বাচিত পরিচালকের পদ পূরণের জন্য দুজন নতুন পরিচালক বোর্ডে যোগদান করেছেন। সাথে তিনজন নতুন স্বাধীন পরিচালকও রয়েছেন। এছাড়াও, একজন নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং কোম্পানি সচিব কোম্পানিতে যোগদান করেছেন। আমরা আশা করছি, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) নিয়োগ প্রক্রিয়া খুব শীঘ্রই শুরু হবে।"
এসব উন্নয়নের পরিপ্রেক্ষিতে, ন্যাশনাল টি তালিকাভুক্তি বিধিমালা ১৭(১) এর অধীনে ১ জুলাই ২০২৪ থেকে ৩১ মার্চ ২০২৫ এবং ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত সময়কালের অনিরীক্ষিত নয় মাসের এবং তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য তিন মাসের সময় বাড়ানোর অনুরোধ করেছে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- শেয়ারবাজারে বিস্ময়: এক লাখ টাকার শেয়ার ৮০ কোটি!
- ডিভিডেন্ডের উপর উচ্চ কর: শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ
- বদলে গেছে ধারণা, বিস্মিত ইসরায়েল
- শেয়ারবাজারের শর্ত পূরণে ৬০ কোম্পানিকে বিএসইসির আল্টিমেটাম
- মূলধন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত শেয়ারবাজারের ১৩ ব্যাংকের
- শেয়ারবাজারের ১০ ব্যাংকে আমানত বেড়েছে ৩২ হাজার কোটি টাকা
- নীলক্ষেত হোস্টেল থেকে ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থীর ম’রদেহ উদ্ধার
- ইরানকে হা-ম-লা বন্ধে প্রস্তাব
- ঢাবিতে হটাৎ ছাত্রলীগের বিক্ষোভ, ককটেল বি-স্ফো-র-ণ
- কারাগারে ফাঁসিতে ঝুললেন সেই অস্ত্রধারী আ’লীগ নেতা
- দুই বড় খবরের মধ্যে আজ খুলছে দেশের শেয়ারবাজার
- ডিভিডেন্ড বেড়েছে শেয়ারবাজারের সাত ব্যাংকের
- মূলধনের বেশি রিজার্ভ জ্বালানি খাতের ১৪ কোম্পানির
- মুনাফা বেড়েছে ১৮ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির
- শেয়ারবাজারে হাজার কোটির ক্লাবে ব্যাংকবহির্ভূত ৬ কোম্পানি