ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সাম্য হ-ত্যা-কা-ণ্ড ইস্যুতে যা বলছেন সহপাঠীরা

২০২৫ মে ২০ ১৩:৫৫:৪৫
সাম্য হ-ত্যা-কা-ণ্ড ইস্যুতে যা বলছেন সহপাঠীরা

ঢাবি প্রতিনিধি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্যের হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে ছাত্র সংগঠনগুলো বিভাজন ও নোংরা রাজনীতি করছে বলে দাবি করেছে সাম্যের সহপাঠীরা।

মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুর বারোটায় ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের সামনে সাম্য হত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিতের দাবিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমন দাবি করেন তারা।

লিখিত বক্তব্যে সাম্যের বন্ধু ও ঢাবির ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী এস এম নাহিয়ান বলেন, সাম্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার আগে থেকেই সে বিভিন্ন যৌক্তিক দাবীতে দেশের হয়ে আন্দোলন করে। প্রশ্নফাঁস আন্দোলন থেকে শুরু করে জুলাই গণঅভ্যুত্থান এর সম্মুখসারির যোদ্ধা দিল সাম্য।

তিনি আরও বলেন, আমরা দুঃখজনকভাবে দেখতে পাচ্ছি সাম্যর হত্যাকান্ডের পর তাকে নিয়ে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলো বিভাজন ও নোংরা রাজনীতি করছে। এই নির্মম হত্যাকান্ডকে ঘিরে রাজনৈতিক দলাদলি আমাদের আশাহত করেছে। আরেকটি দুঃখজনক ব্যাপার হলো সাম্যকে নিয়ে অনলাইনে নানা ধরনের বাজে ও করুচিপূর্ণ মন্তব্য করা হচ্ছে। তার চরিত্র হলনের চেষ্টা করা হচ্ছে। যে কুচক্রী মহল এই ঘৃণিত কাজ করছে তাদের প্রতি নিন্দা জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৯ দফা দাবি পেশ করেন সাম্যের সহপাঠী ও ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী মশিউর আমিন শুভ। তাদের উল্লেখযোগ্য দাবিসমূহ হলো :

১. সাম্যের হত্যাকারী সকলকে দ্রুত শনাক্ত ও গ্রেফতার করে জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে।

২. হত্যার আশেপাশের এলাকার সকল সিসিটিভি ফুটেজ মিডিয়ায় প্রকাশ করতে হবে। ৩. ঘটনার সময় হত্যার সহযোগীদের জনতা আটকিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। কিন্তু কোন এক অজানা কারণে পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়। যেসব পুলিশ এই কাজের সাথে যুক্ত তাদের দ্রুত জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।

৪. শাহবাগ থানার পাশেই যে অস্ত্র ও মাদক সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে এর সাথে সম্পৃক্ত সকলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। সর্বোপরি শাহবাগ থানার আসামী ধরার ক্ষেত্রে স্পষ্ট গাফিলতির জবাবদিহিতা করতে হবে।

৫. সাম্যর হত্যার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের গাফিলতি দৃশ্যমান। তার জানাযার সময়ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস চলেছে এবং পরের দিন অর্ধ দিবস শোক ঘোষণা করার প্রহসন করেছে। এই ধরনের প্রহসন ও গাফিলতি আমরা আর মেনে চিনব না। প্রশসনকে শিক্ষার্থীদের যেকোন প্রয়োজনে আরো তৎপর হতে হবে।

৬. ভিসি, প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তদন্ত ও বিচারের নিয়মিত ফলোআপ নেয়া এবং দেয়ার জন্য সর্বোচ্চ তৎপর থাকতে হবে। এবং সেখানে সাম্যর পরিবার, বন্ধু ও সহপাঠীদের যুক্ত রাখতে হবে।

৭. 'সাম্যর বিচার নিশ্চিতকরণ কমিটি' করতে হবে যাতে তদন্ত কর্মকর্তা, ভিসি, প্রক্টর, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট এর ডিরেক্টর, শিক্ষক ও সহপাঠীদের প্রতিনিধি যুক্ত থাকতে হবে। আজকের মধ্যে এটা নিশ্চিত করতে হবে।

৮. সাম্যর বিচার নিশ্চিতকরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব সংগঠনগুলো প্রতিবাদ জানায় নি তাদের আমাদের সাথে এক হয়ে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানাচ্ছি।

৯. ক্যাম্পাস সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী কর্মসূচি সম্পর্কে সাম্যের সহপাঠী সোহেল রানা সাব্বির বলেন, আগামী দুইদিনের মধ্যে কোন অগ্রগতি না হলে বৃহস্পতিবার (২২ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে লংমার্চ করা হবে।

এসময় শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) হোসনে আরা বেগমসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

বিশ্ববিদ্যালয় এর সর্বশেষ খবর

বিশ্ববিদ্যালয় - এর সব খবর



রে