ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

‘চিকিৎসা সেবাকে নিরাপদ রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর’

২০২৫ মে ১৩ ১৭:১৭:২৩
‘চিকিৎসা সেবাকে নিরাপদ রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর’

ডুয়া ডেস্ক: চিকিৎসা সেবার পরিবেশকে নিরাপদ রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। সাম্প্রতিক সময়ে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হামলা, ভাঙচুর কিংবা চিকিৎসকদের হুমকির মতো দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সরকার চিকিৎসকদের নিরাপত্তাসহ চিকিৎসার সামগ্রিক পরিবেশকে অনুকূল, নিরাপদ ও জনবান্ধব করতে কাজ করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সিভিল সার্জনদের প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে হবে।

মঙ্গলবার (১৩ মে) সকালে রাজধানীর শহিদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে দুই দিনব্যাপী সিভিল সার্জন সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

সিভিল সার্জনদের উদ্দেশ্যে উপদেষ্টা বলেন, আপনারা সমাজের সবচেয়ে মেধাবী মানুষ। তাই আপনাদের ওপর জনপ্রত্যাশা সবচেয়ে বেশি। জেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যখাতের চালিকাশক্তি হিসেবে আপনাদের প্রতিটি সিদ্ধান্ত, প্রচেষ্টা ও ত্যাগ সরাসরি মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করে, ছুঁয়ে যায়। তাই, আপনারা হচ্ছেন মানুষের আশার আলো, দুঃসময়ে ভরসার আশ্রয়। সেবাকে আরো জনমুখী করতে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, পোস্টমর্টেম সেবাকে থানা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া; মহিলাদের পোস্টমর্টেম মহিলা ডাক্তার দিয়ে করানো; ধর্ষণ মামলার ক্ষেত্রে মহিলা ডাক্তার দিয়ে পরীক্ষা করানো, না পাওয়া গেলে মহিলা সেবিকা দিয়ে করিয়ে পুরুষ ডাক্তার দিয়ে প্রতিস্বাক্ষর করা, শিক্ষক ও শিক্ষা উপকরণহীন এবং ভবনকেন্দ্রিক বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো বন্ধ করা, অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল গঠন করে মেডিকেল কলেজগুলোর মান উন্নীতকরণ, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ৬ মাস শহরে ও ৬ মাস গ্রামে করার ব্যবস্থাকরণ ও গ্রামে থাকাকালীন সম্মানী ভাতা বৃদ্ধিকরণ, ইত্যাদি।

তিনি আরো বলেন, এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা গেলে জনগণ দ্রুত সেবা পাবে ও জনদুর্ভোগ হ্রাস পাবে। তাছাড়া মানহীন চিকিৎসক তৈরির হাত থেকে দেশ ও জাতি রক্ষা পাবে।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেন, মাদকবিরোধী অভিযান ও মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এসময় থানা বা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সঙ্গে অংশীদার হয়ে মাদক পুনর্বাসন ও কাউন্সেলিং কার্যক্রমকে ফলপ্রসূ করতে সিভিল সার্জনদের আহ্বান জানান।

চিকিৎসকদের প্রতি জনগণের কিছু অভিযোগ রয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, চিকিৎসা পেশা নিঃসন্দেহে সম্মানজনক। চিকিৎসকদেরই জনগণকে সবচেয়ে বেশি সেবা দেয়ার সুযোগ রয়েছে এবং তারা তা করতে সচেষ্ট আছেন। তথাপিও চিকিৎসকদের প্রতি জনগণের কিছু অভিযোগ রয়েছে।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করতে চাই এ অভিযোগগুলো যেন মিথ্যা প্রমাণিত হয়। তিনি আরও বলেন, জনগণের সবচেয়ে বড় অভিযোগ হলো- অনেক সরকারি চিকিৎসক হাসপাতালে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপস্থিত হন না বা পূর্ণ সময় থাকেন না। অনেক উপজেলা বা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীরা ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও চিকিৎসা পান না। এই অনুপস্থিতি স্বাস্থ্যসেবার মানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ও স্বাস্থ্যখাত সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করে।

প্রশ্নোত্তর পর্বে উপদেষ্টা সিভিল সার্জনদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। সিজিল সার্জনরা এসময় উপদেষ্টার নিকট বিভিন্ন দাবি-দাওয়া উত্থাপন করেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- জেলা হাসপাতালগুলোকে কেপিআই স্থাপনার স্বীকৃতি প্রদান ও সেখানে পুলিশ টহল বৃদ্ধিকরণ, জেলার পোস্টমর্টেম সেন্টারকে আধুনিকীকরণ, সিভিল সার্জনদের জন্য গানম্যান প্রদান, ইত্যাদি। উপদেষ্টা যৌক্তিক দাবিগুলো বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে