ঢাকা, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ভারতে শেখ হাসিনা ইস্যুতে তীব্র বিতর্ক, ‘ফেরত পাঠানোর’ দাবি জোরদার
নিজস্ব প্রতিবেদক :বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকেই দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচন-সমালোচনা। আগে বিষয়টি সীমিত ছিল কূটনৈতিক পরিসরে, তবে এখন তা জাতীয় রাজনীতিতে উত্তপ্ত ইস্যু হয়ে উঠেছে। বিশেষত এনআরসি ও এসআইএর প্রক্রিয়ায় অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্তের সময় দিল্লি কতদিন হাসিনা, কামাল ও কাদেরদের মতো ব্যক্তিদের ‘মেহমানদারি’ করবে—এ প্রশ্ন তুলছে বিরোধী দলসহ বিভিন্ন মহল। ফাঁসির রায়ের পর সমালোচনা আরও তীব্র হয়েছে।
কূটনৈতিক মহলেও প্রশ্ন উঠছে—মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত একজন নেত্রীকে আশ্রয় দিয়ে কেন মোদি সরকার প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ঝুঁকির মুখে ফেলছে।
এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি শুরু থেকেই কড়া অবস্থানে। সাম্প্রতিক এক সমাবেশে তিনি অভিযোগ করেন, হিন্দু নির্যাতন নিয়ে যারা উচ্চকণ্ঠ, তারা এখন ‘স্বৈরাচারী হাসিনাকে’ ভিআইপি আতিথেয়তা প্রদান করছে। সাধারণ বাংলাদেশি যখন ভিসার জন্য হাহাকার করছে, তখন একজন পলাতক নেত্রীকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া ভারতের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন—এমন মন্তব্যও তিনি করেন। তার বক্তব্য সংখ্যালঘু সমাজ ও মানবাধিকারকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
পশ্চিমবঙ্গে উদ্বেগ—‘হাসিনা লায়াবিলিটি’
বাংলাদেশ ইস্যুতে বরাবরই সোচ্চার পশ্চিমবঙ্গের বিরোধীদলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারীর মতে, প্রকাশ্যে না বললেও বিজেপির একটি অংশসহ সীমান্ত রাজনীতিতে সক্রিয় অনেকেই মনে করছেন, শেখ হাসিনা এখন ভারতের জন্য ‘লায়াবিলিটি’ হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
মমতার নরম-কঠোর মন্তব্য
দীর্ঘ নীরবতার পর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মানবিক হলেও প্রতিবেশী দেশের পরিস্থিতি ও জনমত বিবেচনায় নেওয়া জরুরি। একজনের কারণে দীর্ঘদিনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নষ্ট হতে দেওয়া যায় না, আইনকে তার পথেই চলতে দিতে হবে—এ বক্তব্য অনেক বিশ্লেষকের মতে, হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর দাবির প্রতি পরোক্ষ সমর্থন।
কংগ্রেস, তৃণমূল ও বাম—একস্বর দাবি
বিজেপি ও এআইএমআইএমের সমালোচনার পর কলকাতার কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম দল এবং ছাত্রসমাজও হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর দাবি তুলেছে। প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী মন্তব্য করেন—ভারত কখনও স্বৈরাচারীদের নিরাপদ আশ্রয় হতে পারে না। বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ও সাবেক আমলা জহর সরকার বলেন, বাংলাদেশের মানুষের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে; একতরফাভাবে কোনো অবস্থান চাপিয়ে দেওয়া যায় না।
সিপিআইএমের রাজ্য কমিটির এক সদস্য বলেন, গণতন্ত্র দমনকারী শাসকের স্থান ভারতে নয়। বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার ওপর গুলির দায় হাসিনাকেই নিতে হবে; তাকে আশ্রয় দিয়ে ভুল বার্তা দেওয়া হচ্ছে।
সুশীল সমাজ ও ছাত্রদের অবস্থান
কলকাতার সুশীল সমাজ এবং ছাত্র নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন—প্রয়োজনে তারা রাস্তায় নামবেন। মানবাধিকারকর্মী ও চলচ্চিত্র পরিচালক সৌমিত্র দস্তিদার মনে করেন, জনগণের আন্দোলনে পতিত নেত্রীকে মানবিকতার দোহাই দিয়ে আশ্রয় দেওয়া মানে তার রাজনৈতিক অপরাধকে সমর্থন করা। ছাত্রনেতা অত্রি ভট্টাচার্য জানান, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের লড়াইয়ের সঙ্গে তারা একাত্ম; একজন দণ্ডিত নেত্রীকে রক্ষার নৈতিক অধিকার ভারতের নেই।
রাজনৈতিক চাপ ও জনমতের এই বিরূপ অবস্থান মোদি সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন দেশের ভেতরেই ‘হাসিনা হঠাও’ দাবি তীব্র হচ্ছে, তখন তাকে দীর্ঘদিন ধরে আশ্রয় দিয়ে রাখা দিল্লির জন্য ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে। ইতোমধ্যে কলকাতার কলেজ স্ট্রিট এলাকাতেও হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর দাবিতে পোস্টার লাগানো হয়েছে।
ডুয়া/নয়ন
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বাংলাদেশ বনাম আয়ারল্যান্ডের ২য় টেস্টের ৪র্থ দিনের খেলা শেষ-দেখুন স্কোর
- বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান: ম্যাচটি সরাসরি(LIVE) দেখুন এখানে
- চলছে বাংলাদেশ বনাম আয়ারল্যান্ডের ২য় টেস্ট ম্যাচ: খেলাটি সরাসরি দেখুন(LIVE)
- চলছে ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার ২য় টেস্ট: খেলাটি সরাসরি দেখুন এখানে
- বাংলাদেশ বনাম ভারত: সুপার ওভার শেষ, দেখুন ফলাফল
- পরবর্তী ব্রাজিল-বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের ম্যাচ কবে-প্রতিপক্ষ কারা
- বাংলাদেশ বনাম ভারত টি-২০ ম্যাচ: বোলিংয়ে বাংলাদেশ-সরাসরি দেখুন এখানে
- শুক্রবার গ্যাসের চাপ কম থাকবে যেসব এলাকায়
- ঢাবির শীতকালীন ছুটিনিয়ে যা জানা গেল
- আইসিবিকে নতুন তহবিল দেবে না সরকার, ঘুরে দাঁড়ানো আরও কঠিন
- বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান: টি-টোয়েন্টি ফাইনাল ম্যাচ-কখন, কোথায়-দেখবেন যেভাবে
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
- ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা: চাপে ভারত-খেলাটি সরাসরি(LIVE) দেখুন
- বাংলাদেশ বনাম আয়ারল্যান্ড: ব্যাটিংয়ে আয়ারল্যান্ড, দেখুন স্কোর-LIVE
- বাংলাদেশে বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকি নিয়ে নতুন তথ্য বিএমডির