ঢাকা, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

আয়ারল্যান্ডের টপ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনার সব তথ্য এক নজরে

২০২৫ নভেম্বর ২৬ ১৮:১৭:০১

আয়ারল্যান্ডের টপ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনার সব তথ্য এক নজরে

ডুয়া ডেস্ক: উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের দ্বীপরাষ্ট্র আয়ারল্যান্ড কেবল তার ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্যই নয়, আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার জন্যও বিশ্বব্যাপী খ্যাত। বিশ্বের অন্যতম শান্তিপূর্ণ দেশগুলোর তালিকায় আয়ারল্যান্ড দ্বিতীয় অবস্থান অর্জন করেছে। পাশাপাশি, কিউএস র‍্যাংকিংয়ে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয়। এর মধ্যে ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিনের অবস্থান ৮১, ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিন ১৭১, গালওয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ২৮৯, এবং ইউনিভার্সিটি কলেজ কর্ক ২৯২। এছাড়াও ইউনিভার্সিটি অব লিমেরিক ও ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটি যথাক্রমে ৪২৬ ও ৪৩৬তম।

ম্যানেজমেন্ট, অর্গানাইজেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, সাইকোলজি, মেডিসিন ও হেলথ বিষয়গুলো আয়ারল্যান্ডে শিক্ষার্থীদের কাছে বিশেষ আকর্ষণীয়। শিক্ষার্থীদের জন্য প্রক্রিয়াটিও সহজ, কারণ ব্লক অ্যাকাউন্ট বা রেস্ট্রিকটেড ব্যাংক অ্যাকাউন্টের প্রয়োজন নেই।

ভিসার ধরন ও আবেদন প্রক্রিয়া

আয়ারল্যান্ডে দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে ভর্তি হতে Long Stay ‘D’ Student Visa আবশ্যক। আবেদন করতে হয় অনলাইনে AVATS সিস্টেমের মাধ্যমে। আবেদন ফর্ম প্রিন্ট করে প্রয়োজনীয় নথিসহ নির্ধারিত ভিসা অফিসে জমা দিতে হয়। বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়াও বাধ্যতামূলক।

ভিসা ফি

*সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা: €60 (প্রায় সাড়ে ৮ হাজার টাকা);

*মাল্টি এন্ট্রি ভিসা: €100 (প্রায় ১৪ হাজার টাকার বেশি);

যদি পড়াশোনার অংশ হিসেবে অন্য দেশে যেতে হয়, মাল্টি এন্ট্রি ভিসা বাধ্যতামূলক। কিছু দেশ ফি থেকে অব্যাহতি পেলেও বাংলাদেশ তার মধ্যে নেই। ভিসার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিমাও বাধ্যতামূলক।

টিউশন ফি

*ব্যাচেলর: €9,000–€13,000;

*মাস্টার্স: €10,000–€15,000;

২০২৫ সালের আপডেটে শিক্ষার্থীদের আর্থিক সামর্থ্য প্রমাণের ক্ষেত্রে কঠোরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ৮ মাস বা তার বেশি সময়ের কোর্সের জন্য €10,000, আর ৮ মাসের কম হলে মাসে €833 বা মোট €6,665 দেখাতে হবে। ব্যাংক স্টেটমেন্টে গত ৬ মাসের লেনদেন প্রদর্শন করতে হবে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

*বৈধ পাসপোর্ট (ন্যূনতম ১২ মাস মেয়াদ);

*দুই কপি ছবি;

*বিশ্ববিদ্যালয়ের Acceptance লেত্তের;

*SOP (Statement of Purpose);

*ব্যাংক স্টেটমেন্ট;

*স্বাস্থ্যবিমা;

*অ্যাকাডেমিক ও ইংরেজি ভাষাদক্ষতার সার্টিফিকেট;

*টিউশন ফি পরিশোধের রসিদ;

*স্টাডি গ্যাপ থাকলে ব্যাখ্যা;

*পূর্ববর্তী ভিসা রিফিউজ থাকলে তা উল্লেখ;

বি:দ্র সব নথি ইংরেজি বা আইরিশ ভাষায় জমা দিতে হবে।

ইংরেজি দক্ষতা বাধ্যতামূলক

আয়ারল্যান্ডে MOI ভিত্তিক ভর্তি প্রায় অস্বীকৃত। IELTS/TOEFL/PTE/Duolingo—যেকোনো আন্তর্জাতিক মানের স্কোর লাগবে।

*ব্যাচেলর:

IELTS: 6.0–6.5

Duolingo: 105–110

*মাস্টার্স:

IELTS: 6.5–7.0

Duolingo: 110–120

পড়াশোনার সময় কাজের সুযোগ

স্টুডেন্ট ভিসা (Stamp 2) নিয়ে শিক্ষার্থীরা—সেমিস্টার চলাকালে ২০ ঘণ্টা/সপ্তাহ ছুটির সময় ৪০ ঘণ্টা/সপ্তাহ কাজ করতে পারবেন।

পড়াশোনা শেষে চাকরির

আয়ারল্যান্ডে কোর্স শেষ হলে শিক্ষার্থীরা Third Level Graduate Programme–এর অধীনে ১–২ বছরের Stamp 1G (গ্র্যাজুয়েট ভিসা) পেয়ে কাজের ভিসার পথে যেতে পারে।

আবেদন প্রক্রিয়া

প্রতি বছরের জানুয়ারি, মে–জুন ও সেপ্টেম্বর ইনটেকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী গ্রহণ করে আয়ারল্যান্ড, যার মধ্যে সেপ্টেম্বর সবচেয়ে জনপ্রিয়। ভিসার আবেদন করতে হয় অনলাইনে AVATS স্বয়ংক্রিয় ভিসা আবেদন ও ট্র্যাকিং সিস্টেমের মাধ্যমে।

১. পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে হবে।

২. অনলাইনে ফর্ম পূরণ ও আবেদন ফি পরিশোধ।

৩. ট্র্যাকিং সিস্টেম জানিয়ে দেবে কোথায় নথি পাঠাতে হবে।

৪. নির্ধারিত ভিসা অফিস/দূতাবাসে নথি জমা দিলে শুরু হবে ভিসা প্রক্রিয়া।

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভ্রমণের ৩ মাস আগে আবেদন করার নির্দেশনা রয়েছে।

অনলাইন আবেদন শেষে সারসংক্ষেপ ফর্ম প্রিন্ট করে স্বাক্ষরসহ প্রয়োজনীয় নথির সঙ্গে জমা দিতে হবে। ভিসা প্রক্রিয়ায় বায়োমেট্রিক তথ্য (ছবি ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট) দিতে হয়। তবে কোনো সাক্ষাৎকার নিতে হয় না।

স্টুডেন্ট ভিসা শিক্ষাক্রমের মেয়াদ পর্যন্ত বৈধ থাকে। কোর্সের মেয়াদ দীর্ঘ হলে প্রতি বছর ভিসা নবায়ন করতে হয়।

ভিসা প্রসেসিং সময়

সাধারণত ৪–৮ সপ্তাহ, তবে ইনটেক অনুযায়ী বাড়তে পারে।

আয়ারল্যান্ডের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ

*ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিন;

*ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিন;

*ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটি;

*ইউনিভার্সিটি কলেজ কর্ক;

*টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি ডাবলিন;

*ইউনিভার্সিটি অব লিমেরিক;

*আমেরিকান কলেজ ডাবলিন;

*মায়নুথ বিশ্ববিদ্যালয়;

*কুইন্স ইউনিভার্সিটি বেলফাস্ট;

*ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব আয়ারল্যান্ড, গালওয়ে;

কেন আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো গন্তব্য?

*পড়াশোনা শেষে কাজের ভালো সুযোগ;

*ইংরেজি ভাষাভিত্তিক সমাজ ও পরিবেশ;

*ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া তুলনামূলক সহজ;

*ইউরোপের অন্যতম নিরাপদ দেশ;

*ব্লক অ্যাকাউন্টের দরকার নেই।

কেএমএ

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

বৃত্তি এর অন্যান্য সংবাদ