ঢাকা, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

যে ফল্টের কারণে হচ্ছে ভূমিকম্প, ঝুঁকিতে যেসব জেলা

২০২৫ নভেম্বর ২৩ ১০:৩৬:৩৮

যে ফল্টের কারণে হচ্ছে ভূমিকম্প, ঝুঁকিতে যেসব জেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাম্প্রতিক শক্তিশালী ভূমিকম্পে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ১০ জনের মৃত্যু এবং শতাধিক আহতের খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে অনুভূত এই ভূমিকম্পকে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। নরসিংদীর মাধবদীতে রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫.৭।

২৪ ঘণ্টা পার না হতেই একই এলাকায় ফের ৩.৩ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। শনিবার (২২ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে এটি রেকর্ড করা হয়। এরপর আরও একাধিক কম মাত্রার কম্পন অনুভূত হয়েছে। ভূতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাংলাদেশের তিনটি মূল প্লেট এবং ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ ফল্টই মূল ভূমিকম্পের কারণ হতে পারে।

বাংলাদেশের ভূতাত্ত্বিক প্লেট ও ফল্টসমূহ

প্রধান টেকটোনিক প্লেটবাংলাদেশ তিনটি বড় প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত:

ইন্ডিয়ান প্লেট: দেশের বৃহৎ অংশকে আচ্ছাদিত, উত্তরে ইউরেশিয়ান প্লেট এবং পূর্বে বার্মা প্লেটের সাথে সংঘর্ষ ঘটায়।

ইউরেশিয়ান প্লেট: হিমালয় অঞ্চলের ওপরে, উত্তরে; ইন্ডিয়ান প্লেটের সংঘর্ষের ফলে হিমালয় ও উত্তরের ভূকম্প সৃষ্টি হয়।

বার্মা প্লেট (Burma Microplate): বাংলাদেশের পূর্বে মিয়ানমার অঞ্চলে, যেখানে সবচেয়ে বিপজ্জনক ইন্দো-বার্মা মেগাথ্রাস্ট রয়েছে।

সক্রিয় ফল্টসমূহ

ডাউকি ফল্ট (Dauki Fault): সিলেট-মেঘালয়ের পাদদেশে অবস্থিত, বড় থ্রাস্ট ফল্ট। ঝুঁকি: এম ৭–৮। প্রভাবিত জেলা: সিলেট, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, মৌলভীবাজার।

মধুপুর ফল্ট (Madhupur Fault): টাঙ্গাইল–ময়মনসিংহ–গাজীপুর অঞ্চলের পশ্চিমে, ঝুঁকি: এম ৬.৫–৭, প্রভাবিত জেলা: টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, শেরপুর, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, ঢাকা।

চট্টগ্রাম ফোল্ড বেল্ট ফল্টসমূহ: পার্বত্য চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম, বহু সক্রিয় ক্রাস্টাল কম্প্রেশন। প্রভাবিত জেলা: চট্টগ্রাম, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার।

ইন্দো-বার্মা মেগাথ্রাস্ট: বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে, বড় সাবডাকশন ফল্ট, ঝুঁকি: এম ৮.৫+, প্রভাবিত জেলা: কক্সবাজার, বান্দরবান, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।

শিলং প্লাটো সীমান্ত ফল্ট: ভারতের শিলং–মেঘালয়ের উচ্চভূমি, ১৮৯৭ সালের মতো বড় ভূমিকম্পের সম্ভাবনা। প্রভাবিত জেলা: সিলেট, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহ।

তিস্তা লাইনামেন্ট, প্লায়া-গঙ্গা লাইনামেন্ট: উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে, তুলনামূলক কম ঝুঁকি। প্রভাবিত জেলা: রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও।

ঝুঁকিপূর্ণ জেলা

অত্যন্ত উচ্চ ঝুঁকি: ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, গাজীপুর।

উচ্চ ঝুঁকি: মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা, শেরপুর, সুনামগঞ্জ, রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, ফেনী।

মধ্যম ঝুঁকি: রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল।

কেএমএ

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত