ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ডেনিশ প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ

'ডেনমার্কের বিনিয়োগ দেশের বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে নতুন যুগের সূচনা করেছে'

২০২৫ নভেম্বর ১৮ ০৯:০২:৩৩

'ডেনমার্কের বিনিয়োগ দেশের বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে নতুন যুগের সূচনা করেছে'

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, চট্টগ্রামের লালদিয়া টার্মিনালে ডেনমার্কের কোম্পানি এপিএম টার্মিনালসের বিনিয়োগ বাংলাদেশের বাণিজ্য ও প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন যুগের সূচনা করেছে। তিনি এটিকে দেশের জন্য একটি নতুন সূচনা এবং ডেনমার্ক ও ইউরোপ থেকে বৃহত্তর ও বহুমুখী বিনিয়োগের নতুন দ্বার উন্মোচনকারী হিসেবে অভিহিত করেছেন।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মায়ের্স্ক গ্রুপ ও ডেনিশ সরকারের একটি প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

এপিএম (এপি মোলার-মায়ের্স্ক) টার্মিনালসের মালিকানা প্রতিষ্ঠান মায়ের্স্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান রবার্ট মায়ের্স্ক উগলা এই প্রতিনিধিদলে নেতৃত্ব দেন। ডেনমার্কের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক স্টেট সেক্রেটারি লিনা গান্দলোসে হ্যানসেনও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

লালদিয়া টার্মিনাল চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকায় আসা উগলা জানান, চট্টগ্রাম বন্দর টার্মিনালে তার কোম্পানির বিনিয়োগ হবে বাংলাদেশে কোনো ইউরোপীয় কোম্পানির সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ। তিনি বলেন, ২০৩০ সালে লালদিয়া টার্মিনাল চালু হলে এটি চট্টগ্রাম বন্দরে বড় জাহাজ আগমনের সুযোগ তৈরি করবে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের গতি সঞ্চার করবে। উগলা আরও বলেন, এটি হবে একটি টেকসই বন্দর এবং আরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ খাতে ডেনিশ বিনিয়োগ বাংলাদেশে আরও ইউরোপীয় বিনিয়োগকারী আকৃষ্ট করতে সহায়তা করবে।

মায়ের্স্ক গ্রুপ চেয়ারম্যান আরও জানান, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শিপিং লাইন মালিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে তারা বাংলাদেশের লজিস্টিকস ও সাপ্লাই চেইন খাতে আরও বিনিয়োগের সুযোগ অন্বেষণ করবে। প্রধান উপদেষ্টা গত জানুয়ারিতে দাভোসে বৈঠকের পর বাংলাদেশে বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য উগলাকে ধন্যবাদ জানান এবং ডেনিশ কোম্পানির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, "আমরা আনন্দিত ও উচ্ছ্বসিত।"

অধ্যাপক ইউনূস এপিএম টার্মিনালসকে লালদিয়া টার্মিনালের নির্মাণ দ্রুত সম্পন্ন করার আহ্বান জানান। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশকে লাখ লাখ উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে এবং অবকাঠামো উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে হবে। তিনি বলেন, এটি হবে আমাদের অর্থনৈতিক প্রবেশদ্বার এবং ভবিষ্যতের দ্বার উন্মোচন করবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, চট্টগ্রাম উপকূলরেখার বন্দরকে বিশ্বমানের সুবিধায় রূপান্তর করা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও বাণিজ্য সম্ভাবনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

দাভোসে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের কথা স্মরণ করে উগলা বলেন, একটি ফাউন্ডেশনের মালিকানাধীন মায়ের্স্ক গ্রুপ অধ্যাপক ইউনূসের কাজ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছে। তিনি বলেন, এই বিনিয়োগ স্থানীয় সম্প্রদায়ে বড় প্রভাব ফেলবে এবং কোম্পানি নারীদের সহায়তার উদ্যোগেও গুরুত্ব দেবে।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিডা নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনও উপস্থিত ছিলেন। লুৎফে সিদ্দিকী এই বিনিয়োগকে "আমাদের জন্য একটি মাইলফলক" হিসেবে উল্লেখ করে ডেনিশ বিনিয়োগের প্রশংসা করেন এবং বলেন, এটি প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে অন্তর্বর্তী সরকারের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে। হ্যানসেন সম্প্রতি অনুমোদিত শ্রম আইন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অভিনন্দন জানান এবং বলেন, এটি আরও বেশি ইউরোপীয় কোম্পানিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত করবে। প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং বাংলাদেশে ডেনিশ রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিক্স মোলারও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

এসপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত