ঢাকা, রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২

বাকশাল প্রতিষ্ঠা ছিল আওয়ামী গণতন্ত্রের নমুনা: সালাহউদ্দিন আহমদ

২০২৫ নভেম্বর ০৮ ২১:০৬:০৭

বাকশাল প্রতিষ্ঠা ছিল আওয়ামী গণতন্ত্রের নমুনা: সালাহউদ্দিন আহমদ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ মন্তব্য করেছেন যে, আওয়ামী লীগের জন্ম থেকে শেষ পর্যন্ত তাদের চেতনা, রক্ত এবং ডিএনএ-তে গণতন্ত্রের বীজ নেই। তিনি বলেন, বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে সাংবিধানিকভাবে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বিলুপ্ত করা হয়েছিল এবং প্রশাসনের কোনো স্তরেই গণতান্ত্রিক প্রতিনিধিত্ব ছিল না, যা আওয়ামী গণতন্ত্রের নমুনা। সালাহউদ্দিন আহমদ অভিযোগ করেন, শেখ মুজিবুর রহমান নিজেই তা প্রমাণ করেছেন এবং তার কন্যা শেখ হাসিনা আরও স্পষ্টভাবে তা দেখিয়েছেন।

শনিবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ তার বক্তব্যে বলেন, যেখানে গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও পরিবর্তনের সব দরজা বন্ধ থাকে, সেখানে অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া কোনো না কোনো সময় উন্মুক্ত হতে বাধ্য হয়। তিনি বলেন, আওয়ামী বাকশালী সরকার তখন এমন অবস্থা সৃষ্টি করেছিল, যেখানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও আদায়ের জন্য আরেকটি মাধ্যম প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। ৭ নভেম্বরের ঘটনা আমাদের শেখায় যে, যখনই প্রয়োজন হবে, বাংলাদেশের মানুষ, সিপাহী-জনতা, সব শ্রেণি-পেশার আপামর জনসাধারণ দেশের অস্তিত্ব, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, যদি বাংলাদেশে ৭ নভেম্বর সংঘটিত না হতো, তাহলে বাংলাদেশের কী হতো? তিনি উল্লেখ করেন, তৎকালীন সাংবিধানিকভাবে মাত্র ১৩ মিনিটের মাথায় একটি অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছিল, যার নেতৃত্বে ছিলেন তৎকালীন স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে সংবিধান সংশোধন করেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য চতুর্থ সংশোধনী নিয়ে বলেন, এই সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার প্রবর্তন করা হয়, যেখানে রাষ্ট্রপতি সরাসরি নির্বাচিত না হয়েও নিজেকে নির্বাচিত ঘোষণা করেন। সেই সংশোধনীতে রাষ্ট্রপতির মেয়াদ পাঁচ বছর নির্ধারিত ছিল এবং একই সংসদকে আবারও বৈধ ঘোষণা করা হয়। তিনি আরও বলেন, ওই সংশোধনীর মাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা দেন যে সবাইকে একটি মাত্র দলে যোগ দিতে হবে - রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে সরকারি কর্মচারী পর্যন্ত। বাকশালের সদস্য না হলে কেউ সংসদ সদস্য হিসেবে বিবেচিত হবে না। বিচার বিভাগকেও রাষ্ট্রপতির অধীনে আনা হয়, ফলে প্রধান বিচারপতি পর্যন্ত প্রশাসনের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যান। রাষ্ট্রপতি যে কাউকে ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগে বরখাস্ত করতে পারবেন - এই বিধানও যোগ করা হয়।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, যেখানে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সরকার পরিবর্তনের অধিকার থাকে না, সেখানে অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া উৎসাহিত হয় - এটি বিশ্ব ইতিহাসে বহুবার দেখা গেছে। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি সবসময় মিথ্যায় ভরপুর। শেখ মুজিব সাংবিধানিকভাবে উন্মুক্তভাবে বাকশাল কায়েম করেছিলেন, আর শেখ হাসিনা একই বাকশাল বাস্তবায়ন করতে চেয়েছেন গণতন্ত্রের মুখোশে, প্রহসনের ভোটের ছদ্মবেশে। একদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তনের এটাই ছিল তার লক্ষ্য।

এসপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত