ঢাকা, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২
এনবিআর-বিএসইসির ভুলে শেয়ারবাজারে নতুন অস্থিরতা
নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে পতনের ধারা যেন কোনোভাবেই থামছে না। গত চার কর্মদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৭২ পয়েন্ট পড়ে গেছে। এর মধ্যে আজ সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সূচক আরও প্রায় ৪৫ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার৩৩৭ পয়েন্টে নেমে এসেছে। চার দিনে বাজার মূলধন থেকে গায়েব হয়েছে প্রায় ৮ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা। এদিন লেনদেনও নেমে এসেছে ৫৪৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকায়। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিন পর বাজারে যখন ইতিবাচক ধারা তৈরি হচ্ছিল, তখন এনবিআর এবং বিএসইসি উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাজারে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি করেছে।
অযাচিত চিঠি, বাজারে হঠাৎ আতঙ্ক
এই সংকটের সূচনা হয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) একটি চিঠি থেকে। এনবিআর ৫০ লাখ টাকার বেশি ক্যাশ গেইন করা বিনিয়োগকারীদের তথ্য চেয়ে গত ২৫ আগস্ট বিএসইসির কাছে একটি চিঠি পাঠায়। কিন্তু কোনো প্রকার যাচাই-বাছাই ছাড়াই বিএসইসি সেটি ১৪ সেপ্টেম্বর স্টক এক্সচেঞ্জগুলোতে পাঠিয়ে দেয়। স্বাভাবিকভাবেই এমন উদ্যোগ বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয় এবং বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির দিকে ঝুঁকে পড়েন।
নিয়ন্ত্রকদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা
বাজারের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের অবস্থানও ছিল ভিন্ন। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) দ্রুত ব্রোকারেজ হাউসগুলোকে গ্রাহকের পোর্টফোলিও জমা দিতে নির্দেশ দিলেও সমালোচনার মুখে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সেই নির্দেশনা প্রত্যাহার করে। অন্যদিকে, ডিএসই প্রথমে সিদ্ধান্ত নেয়, তারা কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে বিষয়টি নিয়ে বিএসইসির সঙ্গে আলোচনা করবে। এতে বোঝা যায়, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর মধ্যে কতটা সমন্বয়হীনতা রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের ক্ষোভ
একটি ব্রোকারেজ হাউসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, এই ঘটনা বাজারে আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য যথেষ্ট। এনবিআর ব্যক্তিগত পোর্টফোলিওর তথ্য চেয়েছে, যা অত্যন্ত গোপনীয়। বিএসইসি কোনো যাচাই না করেই সেটি বাজারে ছড়িয়ে দিয়েছে। এর দায়ভার নিয়ন্ত্রকদেরই নিতে হবে বলে বলেন উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি।
বিএসইসি’র দায়িত্বজ্ঞানহীনতা
বিএসইসির ভেতরের একাধিক সূত্রও স্বীকার করেছে যে, কমিশনের একজন নিম্নপদস্থ কর্মকর্তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে এনবিআরের চিঠিটি এক্সচেঞ্জগুলোর কাছে পাঠিয়ে দেন। এটি যে অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ ছিল, সে ব্যাপারে কমিশনের ভেতরেই ক্ষোভ রয়েছে। অনেকেই বলছেন, এ ধরনের ঘটনার ফলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বাড়ছে বাজারে আস্থাহীনতা
প্রসঙ্গত, অর্থবছর ২০২৪ থেকে ৫০ লাখ টাকার বেশি ক্যাশ গেইনের উপর ১৫% কর আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু কর পরিপালন যাচাইয়ের জন্য যেভাবে প্রক্রিয়াটি পরিচালিত হচ্ছে, তা বাজারের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এনবিআরের চিঠি ও বিএসইসির অসতর্ক ব্যবস্থাপনা বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট আরও তীব্র করছে।
বাজার শিগগির ঘুরে দাঁড়াবে
বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বর্তমান অস্থিরতা অস্থায়ী। বাজার ইতিমধ্যেই তার সর্বনিম্ন পর্যায় অতিক্রম করেছে এবং এখন ঘুরে দাঁড়ানোর পালা। দেশের শেয়ারবাজারের মূল শক্তি এখনও টিকে আছে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগকারী ও প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে, যারা সূচকের স্বাভাবিক পুনর্গঠন এবং স্থিতিশীলতার মাধ্যমে বাজারকে পুনরায় সচল করতে সক্ষম। এছাড়া সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার ইতিবাচক অগ্রগতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে, যা শিগগিরই বাজারকে পুনরুদ্ধারে সহায়তা করবে।
এএসএম/
শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ফাইনাল: কবে, কখন-যেভাবে দেখবেন লাইভ
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া: খেলাটি ফ্রিতে সরাসরি(LIVE) দেখুন
- পাকিস্তান বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা: খেলাটি সরাসরি(LIVE) দেখবেন যেভাবে
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ৯৫ কোম্পানি, দেখুন এক নজরে
- ইপিএস প্রকাশ করেছে ৬৮ কোম্পানি, দেখুন এক নজরে
- মার্জিন রুল থেকে মিউচুয়াল ফান্ড—সবখানেই আসছে বড় পরিবর্তন
- বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩য় টি-টোয়েন্টি: খেলাটি সরাসরি(LIVE) দেখবেন যেভাবে
- ইপিএস প্রকাশ করেছে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া: খেলাটি মোবাইলে সরাসরি দেখুন (LIVE)
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ
- ‘নো ডিভিডেন্ড’ ঘোষণার পর শেয়ার দামে রেকর্ড দৌড়
- ইপিএস প্রকাশ করেছে বিএটিবিসি
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে একমি পেস্টিসাইডস
- শেয়ারবাজারে ২৭৫ কোটি টাকা আত্মসাত, ৯ বিদেশির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে মনোস্পুল বিডি