ঢাকা, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২

নির্বাচন নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে: রিজভী

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ ১৭:০৭:৫৪

নির্বাচন নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে: রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ নির্বাচন নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে কি না—এ প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তাঁর মতে, রাষ্ট্র ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আঁতাতে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নির্মূলের কোনো নীলনকশা তৈরি হচ্ছে কি না, তা এখন মানুষের ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিইএবি) মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি ছিল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৮তম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে।

রিজভী বলেন, দেশে এমন কিছু শক্তি উত্থিত হচ্ছে যা গণতন্ত্রের চর্চা, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের জন্য গুরুতর হুমকি। “এখানকার মানুষ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, নাটক দেখে, গান শোনে—এটাই আমাদের সাংস্কৃতিক বাস্তবতা। কিন্তু সবকিছু একপাক্ষিক করার চেষ্টা ফ্যাসিবাদের জন্ম দেয়, যার চূড়ান্ত রূপ হলো উগ্র সাম্প্রদায়িকতা ও উগ্র ধর্মীয় রাজনীতির বিস্তার।”

ছাত্রসংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলতে গিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে ব্যালট পেপার ছাপানো হয়েছে একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে, যার মালিকের সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। “সরকারি প্রেস থাকতেও ব্যক্তিগত প্রেসে ছাপানো হয়েছে ব্যালট। এটিকে কি অনিয়ম বলা যাবে না?” তিনি আরও জানান, এমন ঘটনায় জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষকেরাও দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন রিজভী। তাঁর অভিযোগ, ভিসি একটি কোড অব কন্ডাক্ট তৈরি করেছেন, যাতে সাবেক শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। “বিশ্ববিদ্যালয় মানেই আজীবনের সম্পর্কের জায়গা। এটি বিচ্ছিন্ন কোনো দ্বীপ নয়,” বলেন তিনি। রিজভীর দাবি, সরকারপন্থী কিছু গোষ্ঠীর সঙ্গে আঁতাত করে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন একচেটিয়া করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

রিজভী আরও বলেন, অতীতে যারা অভ্যুত্থানে যুক্ত ছিলেন, তারা এখন নতুন সংস্কৃতি চাপিয়ে দিতে চাইছেন। বিএনপি দেশের মাটি-মিশ্রিত রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ধারা অনুসরণ করে, কিন্তু কিছু গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক আধিপত্য বিস্তার করতে চাচ্ছে। “জামায়াত ইসলাম প্রচার করতে চায়, অথচ বাংলাদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বহু আগে। জনগণের মতামত ছাড়া কোনো মতবাদ চাপিয়ে দেওয়া যাবে না,” মন্তব্য করেন তিনি।

শেষে রিজভী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “রাষ্ট্র ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একসঙ্গে এমন এক মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন করতে চাইছে, যেখানে বলা হচ্ছে—আমরা আওয়ামী লীগকে সরিয়েছি, এবার বিএনপিকেও সরাতে হবে। এটি কি নতুন গভীর নীলনকশার অংশ নয়?” তাঁর মতে, এমন একপাক্ষিক পদক্ষেপ সমাজে নতুন ধরনের ফ্যাসিবাদের জন্ম দেবে, যা জাতীয় চেতনাকে ধ্বংস করবে।

ইএইচপি

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত