ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২

শেয়ারবাজারে মার্জিন ঋণের যৌক্তিক সংস্কারের দাবি বিনিয়োগকারীদের

ডুয়া নিউজ- শেয়ারবাজার
২০২৫ আগস্ট ২৬ ০৮:৩২:৪০
শেয়ারবাজারে মার্জিন ঋণের যৌক্তিক সংস্কারের দাবি বিনিয়োগকারীদের

শেয়ারবাজারে প্রস্তাবিত নতুন মার্জিন ঋণ নীতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। বিশেষ করে কোম্পানির ক্যাটাগরি পরিবর্তন এবং মূল্য-আয় (পি/ই) অনুপাতের মানদণ্ডসংক্রান্ত বিধানগুলো নিয়ে তাঁদের ঘোর আপত্তি। বিনিয়োগকারীদের দাবি, এই নিয়মগুলো সংশোধন করা না হলে বাজারে বড় ধরনের পতন এবং তীব্র তারল্য সংকট দেখা দিতে পারে। তাই অবিলম্বে মার্জিন ঋণ নীতিমালার যৌক্তিক সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

সোমবার দুপুরে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেজনর্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমআইএ) সভাপতি এস এম ইকবাল হোসেন লিখিত বক্তব্যে এসব কথা তুলে ধরেন।

যেসব নিয়মে আপত্তি

পি/ই অনুপাতের সীমা: খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, যেসব সিকিউরিটিজের পি/ই অনুপাত ৩০-এর বেশি, সেগুলো মার্জিন ঋণের জন্য অযোগ্য হবে। যদিও কোনো খাতের গড় পি/ই ৩০-এর নিচে থাকলে সেই খাতের সব শেয়ার ঋণ পাবে। বিনিয়োগকারীদের মতে, এই নিয়ম অবাস্তব। কারণ, লোকসানি বা দুর্বল কোম্পানির কারণে অনেক সময় পুরো খাতের পি/ই অনুপাত অস্বাভাবিক হয়ে যায়, যার ফলে ভালো ও শক্তিশালী কোম্পানিও ঋণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়। যেমন, ব্যাংকিং খাতের মতো কম পি/ই অনুপাতের ক্ষেত্রে এই নিয়মটি অতিরিক্ত কঠোর।

ফোর্সড সেল: প্রস্তাবিত নীতিতে বলা হয়েছে, মার্জিন অ্যাকাউন্টের কোনো 'এ' বা 'এন' ক্যাটাগরির শেয়ার 'বি' বা 'জেড' ক্যাটাগরিতে নেমে গেলে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তা বিক্রি (ফোর্সড সেল) করে দিতে হবে। এই ধরনের নিয়মকে ‘মার্কেট-কিলার’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বিনিয়োগকারীরা বলছেন, এত অল্প সময়ে ফোর্সড সেল কার্যকর হলে বাজারে তীব্র বিক্রির চাপ সৃষ্টি হবে, যা প্যানিক সেলিংয়ের জন্ম দেবে এবং বাজারকে অস্থিতিশীল করে তুলবে। এর বদলে কমপক্ষে তিন মাসের একটি সমন্বয় সময় দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন তাঁরা।

ঝুঁকি বাড়ার শঙ্কা: খসড়ায় আরও প্রস্তাব করা হয়েছে, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মোট বাজার মূলধন যদি তাদের পরিশোধিত মূলধনের সাত গুণের বেশি হয়, তাহলে সর্বোচ্চ ঋণ-থেকে-ইক্যুইটি অনুপাত হবে ১:০.৫। এতে তারল্য সংকট দেখা দেবে এবং বাজার সূচক একটি সীমিত গণ্ডির মধ্যে আটকে থাকবে বলে বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন।

এর পাশাপাশি, বিনিয়োগকারীরা এমন কিছু নিয়ম তৈরির দাবি জানিয়েছেন যেন কোনো কোম্পানিকে তালিকাচ্যুত করার আগে বিনিয়োগকারীর স্বার্থ সুরক্ষিত হয় এবং দুর্নীতি বা অনিয়মের কারণে লোকসান হলে সংশ্লিষ্ট মিউচুয়াল ফান্ডের সম্পদ ব্যবস্থাপককে জবাবদিহির আওতায় আনা হয়। তাঁরা আরও বলেন, বিভ্রান্তিকর আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশকারী কোম্পানিগুলোর ফরেনসিক অডিট হওয়া উচিত।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত