ঢাকা, বুধবার, ১৩ আগস্ট ২০২৫, ২৯ শ্রাবণ ১৪৩২
শেয়ারবাজারের অনিয়ম ও কারসাজি বন্ধে সক্ষমতা বাড়াচ্ছে বিএসইসি

বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) দেশের শেয়ারবাজারে অনিয়ম ও কারসাজি প্রতিরোধের জন্য এবার নিজস্ব অর্থায়নে নজরদারি সক্ষমতা বাড়াচ্ছে। কমিশন জানাচ্ছে, হার্ডওয়ার ও সফটওয়্যার হালনাগাদ করার মাধ্যমে ভবিষ্যতে নজরদারির ক্ষমতা দুই থেকে তিন গুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।
বিএসইসি ২০১২ সালে সুইডেনের ট্র্যাপেটস কোম্পানি থেকে “ইনস্ট্যান্ট ওয়াচ মার্কেট” সফটওয়্যার গ্রহণ করে। এটি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সহায়তায় সরকারের শেয়ারবাজার গভর্ন্যান্স উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়িত হয়েছিল। তবে গত ১৩ বছর ধরে সফটওয়্যারটি হালনাগাদ হয়নি, ফলে প্রযুক্তিগতভাবে এটি পুরনো হয়ে পড়েছে।
বিএসইসি ইতিমধ্যেই ডাটা সেন্টার স্থাপন করে হার্ডওয়ারের সক্ষমতা বাড়িয়েছে। এতে বড় লেনদেন সংরক্ষণ এবং তথ্য সংরক্ষণের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সফটওয়্যার আপগ্রেডের মাধ্যমে নজরদারির গতি ও কার্যকারিতা বাড়বে, যা বাজারে কারসাজি শনাক্তকরণকে আরও কার্যকর করবে।
নতুন কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বে পুনর্গঠিত বিএসইসি শেয়ারবাজারের সার্ভিল্যান্স শক্তিশালী করার বিষয়ে সর্বোচ্চ উদ্যোগ নিয়েছে। কমিশনের লক্ষ্য হলো নামে-বেনামে খোলা বিও হিসাব এবং কয়েকজনের যোগসাজশে শেয়ারের দাম কৃত্রিমভাবে কমানো-বাড়ানোর মতো কারসাজি রোধ করা।
গত ১৫ বছরে শেয়ারবাজারে সিরিয়াল ট্রেডিংসহ বিভিন্ন ধরনের কারসাজি সহজলভ্য ঘটনা ছিল। তৎকালীন শিথিল নিয়মনীতি অনেক বিনিয়োগকারীর অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এবার প্রযুক্তি হালনাগাদ এবং নজরদারি শক্তিশালী করার মাধ্যমে এই ধরনের অনিয়ম সীমিত হবে।
গত বছরের ২৯ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের পর শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রধান ছিলেন অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ২০২৫ সালের ১ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিলে শ্বেতপত্রে বলা হয়, আগে শেয়ারবাজারে প্রতারণা ও কারসাজির জন্য প্রভাবশালী উদ্যোক্তা, ইস্যু ম্যানেজার, নিরীক্ষক ও বিনিয়োগকারীদের একটি নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছিল, যা অনেক বিনিয়োগকারীর আস্থা ক্ষুণ্ণ করেছিল।
বিএসইসির মার্কেট সার্ভিল্যান্স অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স বিভাগ লেনদেন পর্যবেক্ষণ করে, যাতে বেআইনি শর্ট সেলিং, ইনসাইডার ট্রেডিং এবং বাজার কারসাজি সীমিত করা যায়। ইনস্ট্যান্ট ওয়াচ মার্কেটের অ্যালার্ট ব্যবস্থার মাধ্যমে সন্দেহভাজন কার্যক্রম শনাক্ত ও তথ্য লিপিবদ্ধ করা হয়।
সার্ভিল্যান্স সফটওয়্যারটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন, অর্ডার এবং সংবাদভিত্তিক তথ্য পর্যবেক্ষণ করবে। এটি ইনসাইডার ট্রেডিং, বাজারে প্রভাব বিস্তার এবং অস্বাভাবিক কার্যক্রম চিহ্নিত করতে সক্ষম। ফলে শেয়ারবাজারে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করার পথে বিএসইসি আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ডিভিডেন্ড দিতে পারছে না বস্ত্র খাতের ১৩ কোম্পানি
- মার্জিন ঋণে মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ডে বিনিয়োগ করা যাবে না
- ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ফিরেছে আর্থিক খাতের কোম্পানি
- শেয়ারবাজারের ৬ ব্যাংকের রেকর্ড মুনাফা, ৫ ব্যাংকের লোকসান
- অস্বাভাবিক শেয়ার দাম: ডিএসইর সতর্কবার্তা জারি
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ৭ প্রতিষ্ঠানের ডিভিডেন্ড-ইপিএস
- মার্জিন ঋণ নিয়ে গুজব: ফের অস্থির শেয়ারবাজার
- ডিএসইর সতর্কবার্তার জালে দুর্বল দুই কোম্পানির শেয়ার
- ১২ আগস্ট : শেয়ারবাজারের সেরা ৯ খবর
- অস্বাভাবিক শেয়ার দাম: ডিএসইর সতর্কবার্তা জারি
- বিসিএসে স্বতন্ত্র বিভাগে অন্য বিভাগ অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ
- রবির অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তের মুখে গ্রামীণফোন
- টানা পতনেও শেয়ারবাজারে পুনরুজ্জীবনের সংকেত
- ডিভিডেন্ড পেল দুই কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- চলতি সপ্তাহে ৬ কোম্পানির ডিভিডেন্ড অনুমোদন