ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ আগস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২

তুরস্ককে ছাড়ছে ভারত : পেছনে কী রহস্য?

ডুয়া নিউজ- আন্তর্জাতিক
২০২৫ আগস্ট ১৩ ১২:৩৫:০৮
তুরস্ককে ছাড়ছে ভারত : পেছনে কী রহস্য?

‘অপারেশন সিঁদুরে’প্রসঙ্গে পাকিস্তানকে সমর্থন, ড্রোন সরবরাহসহ নানা ভূরাজনৈতিক অবস্থানের কারণে ভারতীয় জনমনে তীব্র ক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে তুরস্ক। এরই প্রেক্ষিতে সামাজিক মাধ্যমে ‘বয়কট তুরস্ক’ ট্রেন্ড শুরু হয়, যার প্রতিফলন স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে ভারতের বিভিন্ন খাতে।

সবচেয়ে আগে ধাক্কা খেয়েছে পর্যটন খাত। ভারতের সরকারি ও ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রির তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের জুনে তুরস্কে গিয়েছিলেন ৩৮,৩০৭ ভারতীয়, যা ২০২৫ সালের জুনে কমে দাঁড়িয়েছে ২৪,২৫০-তে —এক বছরে প্রায় ৩৭% কম। মে মাসে টিকিট বাতিলের হার বেড়ে যায় কয়েকগুণ। কলকাতা থেকেই পুজোর মৌসুমে অন্তত ১,৫০০ তুরস্কগামী ভ্রমণ বাতিল হয়েছে, যার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬০-৭৫ কোটি টাকা।

শুধু কলকাতাই নয়, কানপুরসহ বিভিন্ন শহরে গ্রুপ ট্যুর বাতিলের পরিমাণও লক্ষণীয়। এই ধারা অব্যাহত থাকলে তুরস্কের পর্যটন আয়ে ভারতীয় অংশ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে, যদিও তা আগে থেকেই মাত্র ০.৬% ছিল।

শিক্ষাক্ষেত্রেও তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্ক শিথিল হচ্ছে। দিল্লি ও মুম্বাইয়ের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় তুর্কি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে থাকা ছাত্রবিনিময় কর্মসূচি ও সমঝোতা বাতিল করেছে। এতে ভিসা, স্কলারশিপ ও অ্যাকাডেমিক গাইডেন্স অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তুরস্কগামী ভারতীয় শিক্ষার্থীদের জন্য।

সবচেয়ে কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে বিমান খাতে। একাধিক ভারতীয় বিমানবন্দরে কাজ করা তুর্কি মালিকানাধীন গ্রাউন্ড-হ্যান্ডলিং সংস্থার নিরাপত্তা অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে। একইসঙ্গে, তুর্কি অংশীদারিত্বে থাকা কিছু কোডশেয়ার ও লিজচুক্তিও চাপে পড়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এটি একটি ‘মার্কেট-সিগন্যাল’। যেখানে ভারতের জনমত, নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক অবস্থান একসঙ্গে কাজ করছে। ভারতের পক্ষ থেকে এটি একপ্রকার বার্তা— যে দেশ জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে, তাদের সঙ্গে বাস্তব খাতেও সম্পর্ক সীমিত করা হবে।

তুরস্কের জন্য ভারতের এই অবস্থান শুধু সামাজিক মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ নয়— তা বাস্তব খাতেও প্রভাব ফেলছে। বয়কট তুরস্ক এখন শুধু এক ডাকে নয়, এক স্পষ্ট কৌশলগত অবস্থান।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত