ঢাকা, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২ কার্তিক ১৪৩২

মার্জিন ঋণের ধাক্কায় শীর্ষ মূলধনী কোম্পানির শেয়ারেও অস্থিরতা

২০২৫ অক্টোবর ২৭ ১৫:৩৪:৫৬

মার্জিন ঋণের ধাক্কায় শীর্ষ মূলধনী কোম্পানির শেয়ারেও অস্থিরতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএসইসি-এর নতুন মার্জিন ঋণ নীতিমালা নিয়ে সৃষ্ট উদ্বেগের কারণে শেয়ারবাজারে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। কেবল লোকসানি বা দুর্বল কোম্পানি নয়, বাজারের মৌলভিত্তির ও বৃহৎ মূলধনী কোম্পানিগুলোর শেয়ারও এই আতঙ্কের কারণে বড় ধরনের দরপতনের শিকার হয়েছে। সোমবার (২৭ অক্টোবর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ৪০ পয়েন্টের বেশি কমেছে, যার প্রধান প্রভাব পড়েছে বাজারের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলোর ওপর।

বৃহৎ মূলধনী শেয়ারে ব্যাপক দরপতন

বাজারের সবচেয়ে বেশি মূলধনী ২০টি কোম্পানির শেয়ারদর পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কেবল পূবালী ব্যাংক সামান্য ১০ পয়সা ইতিবাচক ছিল এবং দিনের শেষে এর ক্লোজিং প্রাইস ছিল ২৭ টাকা ৭০ পয়সা। বাকি ১৯টি কোম্পানির মধ্যে ১৮টির শেয়ারদরই কমেছে। ফ্লোর প্রাইসে থাকায় বেক্সিমকো লিমিটেডের কোনো পরিবর্তন হয়নি।

এদিন টেলিকম, ফার্মাসিউটিক্যালস, ব্যাংক এবং প্রকৌশল খাতের মতো স্থিতিশীল খাতের কোম্পানিগুলোতেও পতন দেখা গেছে:

• টেলিকম জায়ান্ট: গ্রামীণফোন-এর শেয়ারদর ৩ টাকা ৬০ পয়সা কমে ক্লোজিং প্রাইস দাঁড়িয়েছে ২৮২ টাকা ৫০ পয়সা।

• ফার্মাসিউটিক্যালস: রেনাটা-র শেয়ারদর ৩ টাকা ৭০ পয়সা কমে ৪৪৮ টাকা ৫০ পয়সা, স্কয়ারফার্মা-র ১০ পয়সা কমে ২১৪ টাকা ৩০ পয়সা এবং বেক্সিমকো ফার্মা-র ৯০ পয়সা কমে ১১২ টাকা ১০ পয়সা হয়েছে।

• ব্যাংকিং খাত: ব্র্যাক ব্যাংক-এর শেয়ারদর ১.৫০ টাকা কমে ৬৮.৪ টাকা, ডাচ বাংলা-র ০.৫০ টাকা কমে ৩৮.১ টাকা এবং ইসলামী ব্যাংক-এর ১.৪০ টাকা কমে ৩৭.০ টাকায় লেনদেন শেষ করেছে।

• অন্যান্য: বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানি ইউপিজিডিসিএল-এর শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি, ১১ টাকা কমে ১৩৩ টাকা ৭০ পয়সায় ঠেকেছে। এছাড়া, ওয়ালটন-এর শেয়ারদর ৪ টাকা ৩০ পয়সা কমে ৩৭৪ টাকা ৮০ পয়সা, ম্যারিকো-র ২ টাকা ৮০ পয়সা কমে ২ হাজার ৭৯৬ টাকা ৭০ পয়সা এবং ইউনিলিভার-এর ২ টাকা ৯০ পয়সা কমে ১ হাজার ৪১৭ টাকা ৯০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে।

বাজারের আতঙ্কের নেপথ্যে

বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বিএসইসি কর্তৃক মার্জিন ঋণ নীতিমালায় পরিবর্তন আনার ঘোষণার ফলেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চরম অনিশ্চয়তা ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এই কঠোর নীতিমালার কারণে শেয়ারবাজার আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে— এমন আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন, যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোর ওপর।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আতঙ্কের ফলে বাজারে তারল্য কমে যাচ্ছে এবং মূলধনী শেয়ারের দরপতন সার্বিকভাবে শেয়ারবাজারকে দুর্বল করে দিচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের আপত্তি সত্ত্বেও নিয়ন্ত্রক সংস্থা যদি দ্রুত এই নিয়ম কার্যকর করার দিকে ঝুঁকতে থাকে, তবে স্বল্পমেয়াদে বাজারের পতন আরও বাড়তে পারে।

এএসএম/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত