ঢাকা, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২

ব্যাংকিংয়ে রূপান্তর: শাখা ছাড়াই টাকা জমা

২০২৫ অক্টোবর ১৩ ১৫:০১:৩৪

ব্যাংকিংয়ে রূপান্তর: শাখা ছাড়াই টাকা জমা

নিজস্ব প্রতিবেদক:বাংলাদেশে ডিজিটাল ব্যাংক চালুর মাধ্যমে আর্থিক খাতে এক নতুন যুগের সূচনা হতে যাচ্ছে। মোবাইল থেকে মোবাইলে টাকার লেনদেনের মতোই এবার ডিজিটাল ব্যাংক আধুনিক সুবিধা নিয়ে আসবে, যেখানে টাকা জমা, ঋণ গ্রহণ এবং প্রবাসী আয়সহ সব ধরনের আর্থিক সেবা হাতের মুঠোয় মিলবে। শাখা ছাড়াই সম্পূর্ণ ডিজিটাল এই ব্যাংক সেবার খরচ কমিয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ব্যাংকিং পরিষেবা পৌঁছে দেবে, যা আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে আরও সহজতর করবে।

দেশে ব্যাংকিং পরিষেবার বাইরে থাকা বড় অংশের মানুষের জন্য ডিজিটাল ব্যাংক নতুন সুযোগ তৈরি করবে। আগামী বছর থেকে কার্যক্রম শুরু হতে পারে এই ব্যাংকের, যার লাইসেন্স প্রদানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে চায়। আবেদন প্রক্রিয়ায় ৫ লাখ টাকা ফি ও প্রয়োজনীয় নথি জমা দিতে হবে।

ডিজিটাল ব্যাংক হবে শাখাহীন, যেখানে সব সেবা মোবাইল অ্যাপ বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা উপলব্ধ থাকবে। ভার্চুয়াল কার্ড, কিউআর কোডসহ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রাহক অন্য ব্যাংকের এটিএম ও এজেন্ট সেবাও নিতে পারবে। তবে এটি বড় বা মাঝারি শিল্পে ঋণ দেবে না, শুধুমাত্র ক্ষুদ্র ঋণই প্রদান করবে।

বিশ্বজুড়ে ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। যুক্তরাজ্যের রেভোলুট, জার্মানির এনটুসিক্স, লাতিন আমেরিকার নিওব্যাংক ও দক্ষিণ কোরিয়ার কাকাওব্যাংক তাদের উদ্ভাবনী সেবার মাধ্যমে কোটি কোটি গ্রাহকের কাছে পৌঁছেছে। বাংলাদেশে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও স্মার্টফোন ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে ডিজিটাল ব্যাংক দেশের প্রতিটি প্রান্তে আধুনিক ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিতে পারবে।

বর্তমান মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসগুলো ডিজিটাল লেনদেনে অভ্যাস গড়ে তুললেও সেগুলোর সেবা সীমিত। ডিজিটাল ব্যাংক আমানত গ্রহণ ও ঋণ প্রদানে বেশি স্বাধীনতা পাবে, যা ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা, নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়াবে। এছাড়া, ডিজিটাল ঋণ ও রেমিট্যান্স গ্রহণের খরচ কমিয়ে সেবা সহজ করবে।

তবে লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে দুর্নীতি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও স্বচ্ছতার অভাব বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে, যা উদ্ভাবন ও নতুন উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করছে। তাই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি। ডিজিটাল ব্যাংকিং প্রযুক্তির উন্নয়ন ছাড়াও অর্থনৈতিক বৈষম্য কমানো ও টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। তাই যথাযথ অভিজ্ঞতা ও সক্ষমতা সম্পন্ন উদ্যোক্তাদের হাতে এই লাইসেন্স দেওয়া উচিত।

ডুয়া/নয়ন

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত