ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২

'বাংলাদেশ দেখেনি এমন' নির্বাচন করতে চাই: প্রধান উপদেষ্টা

মো. সাজ্জাদ বিন জলিল
মো. সাজ্জাদ বিন জলিল

রিপোর্টার

২০২৫ সেপ্টেম্বর ৩০ ০০:২০:০৬

'বাংলাদেশ দেখেনি এমন' নির্বাচন করতে চাই: প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে একটি বড় প্রচারাভিযান চালানো হবে বলে ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, সরকার চায় ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির নির্বাচন হোক মুক্ত, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক—যেমনটা বাংলাদেশ আগে কখনো দেখেনি। বিশেষ করে নারী ভোটারদের স্বাগত জানাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটসের প্রেসিডেন্ট কেরি কেনেডি-এর নেতৃত্বে আসা মানবাধিকার কর্মীদের এক উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা জানান।

অধ্যাপক ইউনূস প্রতিনিধিদলকে দেশের নির্বাচন প্রস্তুতি, ব্যাপক সাংবিধানিক সংস্কারের প্রক্রিয়া এবং মানবাধিকার বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি জানান, মূল খাতগুলোতে সংস্কারের সুপারিশ দিতে ১১টি কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং এসব সুপারিশের ওপর কাজ করছে একটি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, অক্টোবরের মধ্যে বড় ধরনের সাংবিধানিক সংস্কারের প্রস্তাবনা সংবলিত ‘জুলাই চার্টার’-এ যোগ দেওয়া রাজনৈতিক দলগুলো সই করবে।

মানবাধিকার প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গত বছর সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের তদন্তে জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল এবং তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই জাতিসংঘের অধীনে একটি মানবাধিকার মিশন গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। পাশাপাশি গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান ও তদন্তে একটি কমিশন নিয়মিত প্রতিবেদন দিচ্ছে।

আসন্ন নির্বাচন নিয়ে ড. ইউনূস উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, কিছু আন্তর্জাতিক মহল নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। এর পেছনে বিপুল অর্থ ব্যয় হচ্ছে এবং ভেতরে-বাইরে এর সুবিধাভোগী রয়েছে। তিনি এই পরিস্থিতিকে 'বিপজ্জনক' বলে মন্তব্য করেন।

এসময় তিনি মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে অর্থপাচারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, চুরি করা অর্থ ফেরত আনার আইনি প্রক্রিয়া কঠিন এবং ব্যাংকগুলো যেন এ ধরনের সম্পদ লুকাতে না পারে, সেজন্য মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সোচ্চার হওয়া জরুরি, কারণ এই অর্থ আসলে জনগণের।

বৈঠকে উপস্থিত এনসিপি নেতা তাসনিম জারা বলেন, দেশের তরুণরা কাঠামোগত সংস্কারের জন্য আন্দোলন করেছে, যাতে বাংলাদেশ আর কখনো জুলাইয়ের বিদ্রোহের মতো পরিস্থিতিতে না পড়ে। মানবাধিকার কর্মীরা নিরাপত্তা খাতের সংস্কারের ওপর জোর দেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অ্যাডভোকেসি ডিরেক্টর জন সিফটন রাজনৈতিক দলগুলোকে যত বেশি সম্ভব সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য চাপ দেওয়ার আহ্বান জানান, যাতে সংসদ বসার পরও এই প্রক্রিয়া চলতে থাকে।

বৈঠকে রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটসের স্টাফ অ্যাটর্নি ক্যাথেরিন কুপার, সিভিকাসের সেক্রেটারি জেনারেল মানদীপ তিওয়ানা, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এশিয়া অ্যাডভোকেসি ডিরেক্টর ক্যারোলিন ন্যাশ সহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

এসপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত