ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২
গোল্ডেন হারভেস্টের জালিয়াতির প্রমাণ, বিএসইসির কড়া পদক্ষেপ

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানি গোল্ডেন হারভেস্ট অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড-এর বিরুদ্ধে গুরুতর অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে মিথ্যা ও জাল তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে বলে কমিশনের সাম্প্রতিক পরিদর্শনে উঠে এসেছে।
শুধু তাই নয়, এসব অনিয়ম শনাক্ত না করে প্রতিবেদনে সঠিকতা নিশ্চিতের দায়িত্বে থাকা ম্যাবস অ্যান্ড জে পার্টনার্স চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস নামের নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানকেও দায়ী করা হয়েছে। বিএসইসি মনে করছে, নিরীক্ষকরা দায়িত্ব পালন না করে বিনিয়োগকারী ও স্টেকহোল্ডারদের আস্থাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) কাছে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, গোল্ডেন হারভেস্টের আর্থিক বিবরণীতে এমন সব লেনদেন দেখানো হয়েছে, যা বাস্তবে ঘটেনি। অনেক ক্ষেত্রে জাল লেনদেন ও বিভ্রান্তিকর সম্পদমূল্য প্রদর্শন করা হয়েছে, যাতে প্রকৃত সম্পদের চেয়ে কোম্পানিকে শক্তিশালী দেখানো যায়। বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করার মতো এই অনিয়মগুলো নিরীক্ষকরা ধরতে পারেননি, কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে উপেক্ষা করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট কোম্পানি ও নিরীক্ষকদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে নতুন কমিশনের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বিএসইসি অনিয়ম দমন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। বর্তমান চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদর নেতৃত্বে অনিয়মে জড়িত কোম্পানি ও নিরীক্ষকদের জবাবদিহির আওতায় আনা হচ্ছে।
বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের টিম গোল্ডেন হারভেস্টের কারখানা ও অফিস সরাসরি পরিদর্শন করেছে। সেখানে হিসাবের বই ও প্রাসঙ্গিক তথ্য যাচাই করে আর্থিক প্রতিবেদনে অসত্য তথ্য এবং অনিয়ম নিশ্চিত করা হয়। এসব অনিয়ম কোম্পানির প্রকাশিত আর্থিক বিবরণীর নির্ভরযোগ্যতাকে গুরুতরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
এফআরসিকে পাঠানো চিঠিতে গোল্ডেন হারভেস্টের ২০২০, ২০২১ ও ২০২২ অর্থবছরের নিরীক্ষিত প্রতিবেদনও পর্যালোচনা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। যদি তদন্তে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানের অবহেলা বা প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হয়, তবে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো প্রতিষ্ঠানের আর্থিক প্রতিবেদনে জালিয়াতি বা বিভ্রান্তিকর তথ্য পাওয়া গেলে বিনিয়োগকারীরা বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়েন। কারণ বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় সবাই মূলত আর্থিক প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করেন। ফলে নিরীক্ষকের গাফিলতি বা ইচ্ছাকৃত ভুল স্বীকারযোগ্য নয়।
বিএসইসি জানিয়েছে, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা ও শেয়ারবাজারে আস্থা ফেরাতে এ ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। এ কারণে পুরো বিষয়টি এফআরসির দৃষ্টি আকর্ষণ করে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
এএসএম/
শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- এশিয়া কাপ ২০২৫: বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান,সরাসরি দেখবেন যেভাবে
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে শেয়ারবাজারের ৮ কোম্পানি
- দুই বছরের ডিভিডেন্ড পেল তালিকাভুক্ত কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ৬ কোম্পানি
- বিএসইসি-ডিএসই’র নাকের ডগায় লোকসানি শেয়ার নিয়ে কারসাজি
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ইবনে সিনা ফার্মা
- চূড়ান্ত অনুমোদনের পথে ৫ কোম্পানির ডিভিডেন্ড
- শেয়ারবাজার বিনিয়োগকারীদের প্রতারণার চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস
- দু্ই কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- নয় কোম্পানির শেয়ারে মুভিং এভারেজ,ম্যাকডি, এঙ্গালফিং বাই সিগনাল
- শেয়ারবাজার নিয়ে অর্থনীতির দুই শীর্ষ নেতার কড়া সমালোচনা
- ১৪ প্রতিষ্ঠান রদবদলে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা অন্ধকারে, বাড়ছে আতঙ্ক
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ৫ কোম্পানির ডিভিডেন্ড
- উদ্যোক্তা পরিচালকদের বিনিয়োগ বেড়েছে ৪ কোম্পানিতে
- মুনাফা কমেছে জুতাশিল্পের দুই জায়ান্টের